ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

দুই শীর্ষ কর্মকর্তার জন্য বাড়ি-সুইমিং পুল নিয়ে যা বললেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

  • আপডেট সময় : ০২:৫৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কথা তুলে ধরে সরকার যখন দেশের জনগণকে কৃচ্ছ্র সাধনের কথা বলছে, সেই সময় প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার জন্য প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ওই পরিকল্পনা কেবল মুখ্যসচিব আর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাড়ি নিয়ে– বিষয়টি তেমন নয়। ঢাকার মিন্টো রোডে সরকারি যে বাড়িগুলো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে, সেগুলো ভেঙে নতুন ভবন করার কথা ভাবা হচ্ছে। “এটা ওইভাবে আসে নাই। বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাড়িটা যাতে এয়ারমার্কড (নির্দিষ্ট) করে দেওয়া হয়।”
সম্প্রতি প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “জনপ্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের দুটি পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের জন্য বাসভবন করছে সরকার। রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় পাশাপাশি নির্মিত হবে দুটি ভবন। প্রকল্প অনুসারে এগুলো নির্মাণে খরচ হবে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। আর এই টাকার জোগান দেবে সরকারি তহবিল।”
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এলে বাড়ি করার ওই পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। জবাবে তিনি বলেন, “গণপূর্ত অধিদপ্তরের বক্তব্য হল, আস্তে আস্তে মিন্টো রোডের বাড়িগুলোৃ এরইমধ্যে ডেমোলিশ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এগুলো খুবই পুরনো। এগুলো মুখ্যসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাড়ির বিষয় না, সব বাড়িগুলো আস্তে আস্তে ভেঙে ফেলা হবে।”
এরইমধ্যে সংসদ উপনেতার বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “এগুলো সেই ১৯৪০-১৯৪৫ সালের বাড়ি। বাড়িগুলো একটা একটা করে সবগুলো নতুন করে তৈরি করা হবে। “এটা নতুন বাড়ি করা বলার চেয়ে প্রধানত যে জায়গাটায় জোর দেয়া উচিত ছিল, যেহেতু মুখ্যসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাসায় অফিস আছে, সুতরাং তাদের বাসাটা যেন এয়ারমার্কড করে দেওয়া হয়। একটা একটা করে সব বাড়িই নতুন করে নির্মাণ করা হবে। আর এটি ছিল একটি প্রাথমিক বিষয়, এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কিছু আসেওনি।”
প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, “প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি ভবন হবে তিন তলা। সাড়ে ১৮ হাজার বর্গফুটের। প্রতিটি ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে সাড়ে ২১ কোটি টাকা করে। এর মধ্যে প্রতিটি বাসভবনে দুই সেট সুইমিং পুল হবে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা।”
গত ১৬ অক্টোবর ‘মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সরকারি বাসভবন নির্মাণ’ প্রকল্পটি গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পটির ব্যয় ৫০ কোটি টাকার নিচে হওয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী নিজ ক্ষমতাবলে এটি অনুমোদন করতে পারবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কোনো ধরনের সুইমিং পুলের কথা ‘নিষেধ করে’ দেয়া হয়েছে।
“বলা হয়েছে, যদি সুইমিং পুল করতেই হয়, তাহলে ওখানে কয়েকশ বাড়িঘর আছে, একটি সুইমিং পুল করা যায় কিনা। কারণ সুইমিং পুল তো রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই কঠিন। বাড়িতে বাড়িতে সুইমিং পুল করে রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে না। ওখানে যে ৫০০-৬০০ কর্মকর্তা আছেন, তাদের সবার জন্য কমন কোনো সুইমিং পুল নির্মাণ করা যায় কিনা এবং সে ক্ষেত্রে সেখানে যাদের অ্যালটমেন্ট (বাড়ি বরাদ্দ) আছে, তারা ও তাদের সন্তানরা ওখানে সাঁতার কাটার সুযোগ পাবেন।”

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “এটা তো আজকের জন্য না। এটা দেখা যাবে আরো তিন বছর, চার বছর, পাঁচ বছর লাগবে। এটা আলোচনায় তো আসছে আরো তিন বছর আগে। আর তা নির্দিষ্ট করে কারও বাড়ি করার জন্য না।
“এমনকি ইস্কাটন গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টারে যে ছয়টি বড় ভবন আছে, ওগুলো ভাঙারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো সেই ১৯৫০ সালের সময়ের বাড়ি। আসলে সবগুলোই নতুন করে নির্মাণ করতে হবে।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দুই শীর্ষ কর্মকর্তার জন্য বাড়ি-সুইমিং পুল নিয়ে যা বললেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

আপডেট সময় : ০২:৫৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কথা তুলে ধরে সরকার যখন দেশের জনগণকে কৃচ্ছ্র সাধনের কথা বলছে, সেই সময় প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার জন্য প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ওই পরিকল্পনা কেবল মুখ্যসচিব আর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাড়ি নিয়ে– বিষয়টি তেমন নয়। ঢাকার মিন্টো রোডে সরকারি যে বাড়িগুলো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে, সেগুলো ভেঙে নতুন ভবন করার কথা ভাবা হচ্ছে। “এটা ওইভাবে আসে নাই। বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাড়িটা যাতে এয়ারমার্কড (নির্দিষ্ট) করে দেওয়া হয়।”
সম্প্রতি প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “জনপ্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের দুটি পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের জন্য বাসভবন করছে সরকার। রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় পাশাপাশি নির্মিত হবে দুটি ভবন। প্রকল্প অনুসারে এগুলো নির্মাণে খরচ হবে প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। আর এই টাকার জোগান দেবে সরকারি তহবিল।”
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এলে বাড়ি করার ওই পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। জবাবে তিনি বলেন, “গণপূর্ত অধিদপ্তরের বক্তব্য হল, আস্তে আস্তে মিন্টো রোডের বাড়িগুলোৃ এরইমধ্যে ডেমোলিশ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এগুলো খুবই পুরনো। এগুলো মুখ্যসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাড়ির বিষয় না, সব বাড়িগুলো আস্তে আস্তে ভেঙে ফেলা হবে।”
এরইমধ্যে সংসদ উপনেতার বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “এগুলো সেই ১৯৪০-১৯৪৫ সালের বাড়ি। বাড়িগুলো একটা একটা করে সবগুলো নতুন করে তৈরি করা হবে। “এটা নতুন বাড়ি করা বলার চেয়ে প্রধানত যে জায়গাটায় জোর দেয়া উচিত ছিল, যেহেতু মুখ্যসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বাসায় অফিস আছে, সুতরাং তাদের বাসাটা যেন এয়ারমার্কড করে দেওয়া হয়। একটা একটা করে সব বাড়িই নতুন করে নির্মাণ করা হবে। আর এটি ছিল একটি প্রাথমিক বিষয়, এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কিছু আসেওনি।”
প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, “প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি ভবন হবে তিন তলা। সাড়ে ১৮ হাজার বর্গফুটের। প্রতিটি ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে সাড়ে ২১ কোটি টাকা করে। এর মধ্যে প্রতিটি বাসভবনে দুই সেট সুইমিং পুল হবে। এতে খরচ ধরা হয়েছে ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা।”
গত ১৬ অক্টোবর ‘মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সরকারি বাসভবন নির্মাণ’ প্রকল্পটি গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পটির ব্যয় ৫০ কোটি টাকার নিচে হওয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী নিজ ক্ষমতাবলে এটি অনুমোদন করতে পারবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কোনো ধরনের সুইমিং পুলের কথা ‘নিষেধ করে’ দেয়া হয়েছে।
“বলা হয়েছে, যদি সুইমিং পুল করতেই হয়, তাহলে ওখানে কয়েকশ বাড়িঘর আছে, একটি সুইমিং পুল করা যায় কিনা। কারণ সুইমিং পুল তো রক্ষণাবেক্ষণ করা খুবই কঠিন। বাড়িতে বাড়িতে সুইমিং পুল করে রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে না। ওখানে যে ৫০০-৬০০ কর্মকর্তা আছেন, তাদের সবার জন্য কমন কোনো সুইমিং পুল নির্মাণ করা যায় কিনা এবং সে ক্ষেত্রে সেখানে যাদের অ্যালটমেন্ট (বাড়ি বরাদ্দ) আছে, তারা ও তাদের সন্তানরা ওখানে সাঁতার কাটার সুযোগ পাবেন।”

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “এটা তো আজকের জন্য না। এটা দেখা যাবে আরো তিন বছর, চার বছর, পাঁচ বছর লাগবে। এটা আলোচনায় তো আসছে আরো তিন বছর আগে। আর তা নির্দিষ্ট করে কারও বাড়ি করার জন্য না।
“এমনকি ইস্কাটন গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টারে যে ছয়টি বড় ভবন আছে, ওগুলো ভাঙারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো সেই ১৯৫০ সালের সময়ের বাড়ি। আসলে সবগুলোই নতুন করে নির্মাণ করতে হবে।”