নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্যাসিনোকা-ে আলোচিত যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট অস্ত্র ও অর্থ পাচারের দুই মামলায় জামিন পেয়েছেন।
তবে মাদক ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের আরও দুটি মামলায় কারাগারে থাকায় এখনই তার মুক্তি মিলছে না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।
গতকাল রোববার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনোলের বিচারক ফয়সাল বিন কাদের অস্ত্র মামলায় এবং অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোজাজ্জল হোসেন অর্থ পাচার মামলায় সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে অস্ত্র আইনের মামলাটি অভিযোগ গঠনের শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় র্যাব। সম্রাটের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, “সম্রাট ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর থেকে কারাগারে, তিনি অসুস্থ। মামলায় যে অস্ত্রের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে তার জ্ঞান-দখল-নিয়ন্ত্রণ কোনোটাই ছিল না।
“কুমিল্লার যে বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছিল, সে বাড়িতে নানান রকমের লোক আসতেন। অস্ত্র যদি পেয়েই থাকে, তাহলে তাদের কারও হতে পারে। আমরা এই যুক্তি আদালতে দিয়েছি। আদালত জামিন মঞ্জুর করেছে।”
সম্রাটের বিরুদ্ধে রমনা থানায় অর্থ পাচারের মামলাটি হয়েছিল ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। সিআইডির ওই মামলায় এখনও অভিযোগপত্র হয়নি। এ মামলায় তাকে তিন দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেছিলেন সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মেহেদী মাকসুদ। রিমান্ড আবেদনের শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান। অন্যদিকে এর বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী সমাজী। পরে তিনি বলেন, “অর্থ পাচারের পক্ষে তার বিরুদ্ধে কোনো পর্যাপ্ত কাগজপত্র নেই, তথ্য নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কারাভোগ করছেন, তিনি কারাগারে অসুস্থ আছেন।”
“রিমান্ডে যদি কাউকে নিতে হয়, তবে আইন অনুযায়ী মামলার কেইসডকেট উপস্থাপন করতে হয়। সেই ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।”
ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এরপর ৭ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সেদিন বিকালে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র্যাবের পক্ষ থেকে। ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে ছয় মাসের কারাদ- দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঢাকার রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে। রমনা থানার অস্ত্র মামলায় ওই বছর ৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক। আর অর্থ পাচারের মামলাটি হয় ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বরে। আইনজীবী সমাজী বলেন, মাদক মামলায় সম্রাটের জামিন শুনানি হবে সোমবার। আর অবৈধ সম্পদের মামলায় ১৩ এপ্রিল জামিন শুনানির তারিখ রয়েছে।
দুই মামলায় সম্রাটের জামিন
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ