ঢাকা ১২:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

দুই বছর পর মুক্তি পেলেন ভারতীয় মুসলিম সাংবাদিক

  • আপডেট সময় : ০১:২৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১২৪ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : ধর্ষণের প্রতিবেদন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া ভারতীয় সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান দুই বছরের বেশি সময় পরে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ২০২০ সালের অক্টোবরে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে এক দলিত তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার প্রতিবেদন করতে গিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদেনে বলা হয়, চারজন উচ্চবর্ণের পুরুষের বিরুদ্ধে ওই তরুণীকে ধর্ষণ এবং পরে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তখনকার সময়ে এই মামলায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে ভারতে। কাপ্পানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে পুলিশ। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করেন। সেদিন তার সঙ্গে গাড়িতে থাকা তিনজন একই ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
কাপ্পানের বিরুদ্ধে দুটি মামলা ছিল, সেপ্টেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটিতে জামিন মঞ্জুর করেছিল। ডিসেম্বরে দ্বিতীয় মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাকে জামিন দেয়। কিন্তু প্রক্রিয়াগত বিলম্বের কারণে তাকে মুক্তি পেতে তার পরে এক মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল। বৃহস্পতিবার লখনউ শহরের কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পরে কাপ্পান বলেছিলেন, তিনি তার ওপর আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন। বিবিসি হিন্দিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমিও সাংবাদিকতা চালিয়ে যাব। আমি অলস বসে থাকব না… সর্বোপরি, আমি একজন সাংবাদিক – আমি কোথায় পালাবো?’

উত্তর প্রদেশের হাতরাস জেলায় যাওয়ার পথে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তখন কাপ্পান কেরালা রাজ্যের মালয়ালম-ভাষার নিউজ পোর্টাল আজিমুখামে সাংবাদিকতা করতেন। গ্রেপ্তরের পর পুলিশ তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ তোলেন। তার পরিবারও অভিযোগ করেছে যে কর্তৃপক্ষ তাকে ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণ করতে দেয়নি। পুলিশ এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তারা দাবি করেছে, কাপ্পান এবং তার সঙ্গীরা পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই) এর সদস্য ছিলেন যা কেরালা ভিত্তিক একটি মুসলিম অধিকার গোষ্ঠী। পিএফআই এর ওপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এনে গত বছর নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কাপ্পানের আইনজীবী এবং কেরালা ভিত্তিক সাংবাদিক ইউনিয়ন সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় অস্বীকার করেছে।
কাপ্পানের আইনজীবী ২০২১ সালে বিবিসিকে বলেছিলেন যে তার মক্কেলের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ‘ছোট জামিনযোগ্য অপরাধের’ অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু দুই দিন পরে, পুলিশ একটি কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং বিধানসহ অন্যান্য অভিযোগ যোগ করে যার ফলে জামিন পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, আর্থিক অপরাধের তদন্তকারী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের অধীনে আরেকটি মামলা দায়ের করে। কেন্দ্রীয় সংস্থা বলেছে যে কাপ্পান পিএফআই থেকে ‘দাঙ্গা উসকে দেওয়ার জন্য’ অর্থ পেয়েছিলেন। তবে এই অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

৮ বছরের শিশু ধর্ষণ, ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ গ্রেফতার

দুই বছর পর মুক্তি পেলেন ভারতীয় মুসলিম সাংবাদিক

আপডেট সময় : ০১:২৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : ধর্ষণের প্রতিবেদন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া ভারতীয় সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান দুই বছরের বেশি সময় পরে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ২০২০ সালের অক্টোবরে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে এক দলিত তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার প্রতিবেদন করতে গিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদেনে বলা হয়, চারজন উচ্চবর্ণের পুরুষের বিরুদ্ধে ওই তরুণীকে ধর্ষণ এবং পরে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তখনকার সময়ে এই মামলায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে ভারতে। কাপ্পানের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে পুলিশ। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করেন। সেদিন তার সঙ্গে গাড়িতে থাকা তিনজন একই ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
কাপ্পানের বিরুদ্ধে দুটি মামলা ছিল, সেপ্টেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটিতে জামিন মঞ্জুর করেছিল। ডিসেম্বরে দ্বিতীয় মামলায় এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাকে জামিন দেয়। কিন্তু প্রক্রিয়াগত বিলম্বের কারণে তাকে মুক্তি পেতে তার পরে এক মাসেরও বেশি সময় লেগেছিল। বৃহস্পতিবার লখনউ শহরের কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পরে কাপ্পান বলেছিলেন, তিনি তার ওপর আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন। বিবিসি হিন্দিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমিও সাংবাদিকতা চালিয়ে যাব। আমি অলস বসে থাকব না… সর্বোপরি, আমি একজন সাংবাদিক – আমি কোথায় পালাবো?’

উত্তর প্রদেশের হাতরাস জেলায় যাওয়ার পথে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তখন কাপ্পান কেরালা রাজ্যের মালয়ালম-ভাষার নিউজ পোর্টাল আজিমুখামে সাংবাদিকতা করতেন। গ্রেপ্তরের পর পুলিশ তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ তোলেন। তার পরিবারও অভিযোগ করেছে যে কর্তৃপক্ষ তাকে ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণ করতে দেয়নি। পুলিশ এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তারা দাবি করেছে, কাপ্পান এবং তার সঙ্গীরা পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই) এর সদস্য ছিলেন যা কেরালা ভিত্তিক একটি মুসলিম অধিকার গোষ্ঠী। পিএফআই এর ওপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এনে গত বছর নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কাপ্পানের আইনজীবী এবং কেরালা ভিত্তিক সাংবাদিক ইউনিয়ন সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় অস্বীকার করেছে।
কাপ্পানের আইনজীবী ২০২১ সালে বিবিসিকে বলেছিলেন যে তার মক্কেলের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ‘ছোট জামিনযোগ্য অপরাধের’ অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু দুই দিন পরে, পুলিশ একটি কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং বিধানসহ অন্যান্য অভিযোগ যোগ করে যার ফলে জামিন পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, আর্থিক অপরাধের তদন্তকারী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের অধীনে আরেকটি মামলা দায়ের করে। কেন্দ্রীয় সংস্থা বলেছে যে কাপ্পান পিএফআই থেকে ‘দাঙ্গা উসকে দেওয়ার জন্য’ অর্থ পেয়েছিলেন। তবে এই অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।