ঢাকা ০৮:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

দুই ট্রলারসহ আরো ১১ জেলেকে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

  • আপডেট সময় : ০৮:৫২:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফ নদীর মোহনা থেকে আবার দুটি মাছ ধরার ট্রলারসহ বাংলাদেশি ১১ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।

মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম। এ নিয়ে টানা চার দিনে ছয় ট্রলারসহ ৪৪ জেলেকে অপহরণের ঘটনা ঘটল বলে জানান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।
অপহৃত জেলেরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপ ডাঙ্গর পাড়া এলাকার ইমাম হোসেন, রশিদ আলম, জাহাঙ্গীর আলম, নুর আলম এবং মনজুর আলম। তবে টেকনাফের বাকি ছয়জনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ট্রলারের মালিকরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপ মাঝের পাড়ার সৈয়দ আলম এবং টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়ার বাসিন্দা আবুল কালাম। ট্রলার মালিক সমিতির নেতা আবুল কালাম বলেন, টেকনাফের আবুল কালামের নৌযানটিতে ছয়জন মাঝিমাল্লা ছিলেন। মাঝি ছিলেন আব্দুল হাফেজ। তবে বাকি পাঁচ জেলেদের নাম জানাতে পারেননি তিনি। ওই ট্রলারের মাঝি আব্দুল হাফেজ সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে বলে জানান আবুল কালাম। তিনি বলেন, টানা চার দিনে আরাকান আর্মির হাতে ৪৪ জেলে অপহরণের শিকার হয়েছেন। আর ৫ আগস্ট থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ২১ দিনে আটটি ট্রলার-নৌকাসহ ৫১ জেলেকে ধরে নেওয়া হয়েছে; যাদের কাউকে এখনো ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া জেটি ঘাটের সভাপতি আবদুল গফুর বলেন, মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে এসে জেলেদের ধাওয়া করে আটক করেন।
পরে তাদেরকে মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সৈয়দ আলমকে জানিয়েছেন ট্রলারের মাঝি রশিদ আলম। এরপর থেকে ট্রলারের মাঝিমাল্লাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আবদুল গফুর বলেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির ভয়ে জেলেরা এখন সাগরে মাছ ধরতে যেতে চাচ্ছে না। জেলেরা খুব আতঙ্কে আছে।
অপহরণ রোধে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন আরাকান আর্মির সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশি ট্রলারসহ জেলেদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। চার দিনে তারা ছয়টি ট্রলারসহ ৪৪ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছেন বলে ট্রলার মালিক সমিতির মাধ্যমে জেনেছেন তিনি।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ২৫৫ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে কয়েক দফায় ১৮৯ জেলে এবং ২৭টি ট্রলার-নৌকা ফেরত এনেছে বিজিবি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনাও এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান, ভূতের মুখে রাম নাম: অ্যাটর্নি জেনারেল

দুই ট্রলারসহ আরো ১১ জেলেকে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

আপডেট সময় : ০৮:৫২:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফ নদীর মোহনা থেকে আবার দুটি মাছ ধরার ট্রলারসহ বাংলাদেশি ১১ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।

মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম। এ নিয়ে টানা চার দিনে ছয় ট্রলারসহ ৪৪ জেলেকে অপহরণের ঘটনা ঘটল বলে জানান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন।
অপহৃত জেলেরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপ ডাঙ্গর পাড়া এলাকার ইমাম হোসেন, রশিদ আলম, জাহাঙ্গীর আলম, নুর আলম এবং মনজুর আলম। তবে টেকনাফের বাকি ছয়জনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ট্রলারের মালিকরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপ মাঝের পাড়ার সৈয়দ আলম এবং টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়ার বাসিন্দা আবুল কালাম। ট্রলার মালিক সমিতির নেতা আবুল কালাম বলেন, টেকনাফের আবুল কালামের নৌযানটিতে ছয়জন মাঝিমাল্লা ছিলেন। মাঝি ছিলেন আব্দুল হাফেজ। তবে বাকি পাঁচ জেলেদের নাম জানাতে পারেননি তিনি। ওই ট্রলারের মাঝি আব্দুল হাফেজ সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে বলে জানান আবুল কালাম। তিনি বলেন, টানা চার দিনে আরাকান আর্মির হাতে ৪৪ জেলে অপহরণের শিকার হয়েছেন। আর ৫ আগস্ট থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ২১ দিনে আটটি ট্রলার-নৌকাসহ ৫১ জেলেকে ধরে নেওয়া হয়েছে; যাদের কাউকে এখনো ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া জেটি ঘাটের সভাপতি আবদুল গফুর বলেন, মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে এসে জেলেদের ধাওয়া করে আটক করেন।
পরে তাদেরকে মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সৈয়দ আলমকে জানিয়েছেন ট্রলারের মাঝি রশিদ আলম। এরপর থেকে ট্রলারের মাঝিমাল্লাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আবদুল গফুর বলেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির ভয়ে জেলেরা এখন সাগরে মাছ ধরতে যেতে চাচ্ছে না। জেলেরা খুব আতঙ্কে আছে।
অপহরণ রোধে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন আরাকান আর্মির সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশি ট্রলারসহ জেলেদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। চার দিনে তারা ছয়টি ট্রলারসহ ৪৪ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছেন বলে ট্রলার মালিক সমিতির মাধ্যমে জেনেছেন তিনি।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ২৫৫ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে কয়েক দফায় ১৮৯ জেলে এবং ২৭টি ট্রলার-নৌকা ফেরত এনেছে বিজিবি।