ঢাকা ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

দিল্লিতে অবৈধ বসবাসের দায়ে বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার ১৬

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৫:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • ৪২ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আট দালাল ও একাধিক বাংলাদেশিসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করল ভারতের রাজধানী দিল্লির পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশিদের আশ্রয় ও চাকরি দিত এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরিতে সাহায্য করত।

দিল্লি পুলিশের ডিসিপি অঙ্কিত চৌহান জানিয়েছেন, এই ঘটনায় গ্রেফতার অন্যতম মূলচক্রী মইনুদ্দিন নিজামুদ্দিনে থাকেন। আমির খুসরো নগরে তাঁর একটি সাইবার ক্যাফে রয়েছে। অভিযুক্তরা ফটোশপের মাধ্যমে অবৈধভাবে এ দেশে আসা বাংলাদেশিদের জাল আধার কার্ড, প্যান কার্ড, জন্ম নিবন্ধনপত্র এবং অন্যান্য নথি তৈরি করে দিত। তাদের কাছ থেকে ২৩টি ভোটার আইডি কার্ড, ১৯টি প্যান কার্ড, ১৭টি আধার কার্ড, একটি সিপিইউ, ১১টি বার্থ সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য নথি উদ্ধার করা হয়েছে। অবশ্য আটক বাংলাদেশিদের সংখ্যা সামনে আনেনি দিল্লি পুলিশ।

ডিসিপি অঙ্কিত চৌহান আরো বলেন, নিজামুদ্দিনের বাসিন্দা মহম্মদ মইনুদ্দিন এই গ্যাংয়ের নেতা। এছাড়া অভিযুক্ত ইউআইডিএআই নিবন্ধিত আধার এজেন্ট জুলফিকার আনসারি, জাভেদ এবং উত্তরপ্রদেশের বুলন্দ শহরের বাসিন্দা ফরমান খানের সহযোগিতায় মইনুদ্দিন এই চক্রটি পরিচালনা করছিল।

এ ছাড়া নিজামুদ্দিন বস্তির বাসিন্দা মহম্মদ শাহিন দিল্লিতে বাংলাদেশিদের ডেলিভারি ও সাফাইয়ের কাজ দিতেন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা নিজামুদ্দিনের বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন, নিমাই কর্মকার ও গৌরাঙ্গ দত্ত দিল্লি থেকে বেআইনি টাকা বাংলাদেশে পাঠাতেন। মনোয়ার হজরত নিজামুদ্দিন দরগায় কাজ করতেন এবং নিমাই ও গৌরাঙ্গা ফরেক্স এজেন্ট ছিলেন।

গ্রেফতার বাংলাদেশি মহম্মদ জুয়েল ইসলাম ও তার বড় ভাই মহাম্মদ আলমগির দিল্লিতে এসে স্ক্র্যাপ ডিলার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আলমগির ২০০৭ সালে একজন ভারতীয় মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। ২০২১ সালে ভারতে এসেছিলেন জুয়েল ইসলাম। গ্রেফতার অন্যরা হলেন লতিফ খান, মহম্মদ মিজানুর রহমান ও রবিউল। তারা কোটলা মোবারকপুরের বাসিন্দা। এই তিন জনেরই পরিবার বাংলাদেশে বসবাস করে।

লতিফের ভাই নাদিম শেখ ২০২১ সালে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করতে দিল্লি চলে আসেন। মহম্মদ রিজাউল ২০০০ সালে এখানে এসে এক ভারতীয় মহিলাকে বিয়ে করেন এবং ক্যাব চালক হিসাবে কাজ শুরু করেন। তিনি কোনো রকমে ভারতীয় পাসপোর্ট জোগাড় করতে সক্ষম হন এবং এর পরে তিনি ক্রমাগত দিল্লি থেকে বাংলাদেশে যাতায়াত শুরু করেন। তিনি দিল্লি থেকে টাকা নিয়ে বাংলাদেশে বসবাসকারী অন্য অভিযুক্তদের পরিবারের কাছে পাঠাতেন। গত দুই বছরে তিনি ২২ বার ভারত থেকে নেপাল ভ্রমণ করেছেন। এই মামলায় আরো এক অভিযুক্ত কামরুজ্জামান ২০১৪ সালে দিল্লিতে এসে ডেলিভারি বয়ের কাজ শুরু করেন। আলমগির, লতিফ ও কামরুজ্জামানের ভারতীয় আধার কার্ড ও প্যান কার্ড রয়েছে।

দিল্লিতে বসবাস ও কাজ করা অভিযুক্তরা ভুয়ো নথি দিয়ে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিত। এরপর এজেন্টদের নির্দেশে ইউপিআইয়ের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকার এজেন্টের কাছে অনলাইনে টাকা পাঠানো হত। সেখানে টাকা পাওয়ার পর সীমান্তের এজেন্টরা হাওয়ালার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের পরিবারকে বাংলাদেশি মুদ্রায় অর্থ সরবরাহ করত।

আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি, বেআইনি অনুপ্রবেশ, বেআইনি বাসস্থান এবং ভুয়ো পরিচয়ের অপব্যবহারের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ এই অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং অন্যান্য কর্মী এবং তাদের গ্যাংয়ের সদস্যদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে।

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দিল্লিতে অবৈধ বসবাসের দায়ে বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার ১৬

আপডেট সময় : ০৬:৫৫:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আট দালাল ও একাধিক বাংলাদেশিসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করল ভারতের রাজধানী দিল্লির পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা বাংলাদেশিদের আশ্রয় ও চাকরি দিত এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরিতে সাহায্য করত।

দিল্লি পুলিশের ডিসিপি অঙ্কিত চৌহান জানিয়েছেন, এই ঘটনায় গ্রেফতার অন্যতম মূলচক্রী মইনুদ্দিন নিজামুদ্দিনে থাকেন। আমির খুসরো নগরে তাঁর একটি সাইবার ক্যাফে রয়েছে। অভিযুক্তরা ফটোশপের মাধ্যমে অবৈধভাবে এ দেশে আসা বাংলাদেশিদের জাল আধার কার্ড, প্যান কার্ড, জন্ম নিবন্ধনপত্র এবং অন্যান্য নথি তৈরি করে দিত। তাদের কাছ থেকে ২৩টি ভোটার আইডি কার্ড, ১৯টি প্যান কার্ড, ১৭টি আধার কার্ড, একটি সিপিইউ, ১১টি বার্থ সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য নথি উদ্ধার করা হয়েছে। অবশ্য আটক বাংলাদেশিদের সংখ্যা সামনে আনেনি দিল্লি পুলিশ।

ডিসিপি অঙ্কিত চৌহান আরো বলেন, নিজামুদ্দিনের বাসিন্দা মহম্মদ মইনুদ্দিন এই গ্যাংয়ের নেতা। এছাড়া অভিযুক্ত ইউআইডিএআই নিবন্ধিত আধার এজেন্ট জুলফিকার আনসারি, জাভেদ এবং উত্তরপ্রদেশের বুলন্দ শহরের বাসিন্দা ফরমান খানের সহযোগিতায় মইনুদ্দিন এই চক্রটি পরিচালনা করছিল।

এ ছাড়া নিজামুদ্দিন বস্তির বাসিন্দা মহম্মদ শাহিন দিল্লিতে বাংলাদেশিদের ডেলিভারি ও সাফাইয়ের কাজ দিতেন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা নিজামুদ্দিনের বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন, নিমাই কর্মকার ও গৌরাঙ্গ দত্ত দিল্লি থেকে বেআইনি টাকা বাংলাদেশে পাঠাতেন। মনোয়ার হজরত নিজামুদ্দিন দরগায় কাজ করতেন এবং নিমাই ও গৌরাঙ্গা ফরেক্স এজেন্ট ছিলেন।

গ্রেফতার বাংলাদেশি মহম্মদ জুয়েল ইসলাম ও তার বড় ভাই মহাম্মদ আলমগির দিল্লিতে এসে স্ক্র্যাপ ডিলার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আলমগির ২০০৭ সালে একজন ভারতীয় মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন এবং তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। ২০২১ সালে ভারতে এসেছিলেন জুয়েল ইসলাম। গ্রেফতার অন্যরা হলেন লতিফ খান, মহম্মদ মিজানুর রহমান ও রবিউল। তারা কোটলা মোবারকপুরের বাসিন্দা। এই তিন জনেরই পরিবার বাংলাদেশে বসবাস করে।

লতিফের ভাই নাদিম শেখ ২০২১ সালে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করতে দিল্লি চলে আসেন। মহম্মদ রিজাউল ২০০০ সালে এখানে এসে এক ভারতীয় মহিলাকে বিয়ে করেন এবং ক্যাব চালক হিসাবে কাজ শুরু করেন। তিনি কোনো রকমে ভারতীয় পাসপোর্ট জোগাড় করতে সক্ষম হন এবং এর পরে তিনি ক্রমাগত দিল্লি থেকে বাংলাদেশে যাতায়াত শুরু করেন। তিনি দিল্লি থেকে টাকা নিয়ে বাংলাদেশে বসবাসকারী অন্য অভিযুক্তদের পরিবারের কাছে পাঠাতেন। গত দুই বছরে তিনি ২২ বার ভারত থেকে নেপাল ভ্রমণ করেছেন। এই মামলায় আরো এক অভিযুক্ত কামরুজ্জামান ২০১৪ সালে দিল্লিতে এসে ডেলিভারি বয়ের কাজ শুরু করেন। আলমগির, লতিফ ও কামরুজ্জামানের ভারতীয় আধার কার্ড ও প্যান কার্ড রয়েছে।

দিল্লিতে বসবাস ও কাজ করা অভিযুক্তরা ভুয়ো নথি দিয়ে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিত। এরপর এজেন্টদের নির্দেশে ইউপিআইয়ের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকার এজেন্টের কাছে অনলাইনে টাকা পাঠানো হত। সেখানে টাকা পাওয়ার পর সীমান্তের এজেন্টরা হাওয়ালার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের পরিবারকে বাংলাদেশি মুদ্রায় অর্থ সরবরাহ করত।

আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি, বেআইনি অনুপ্রবেশ, বেআইনি বাসস্থান এবং ভুয়ো পরিচয়ের অপব্যবহারের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ এই অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং অন্যান্য কর্মী এবং তাদের গ্যাংয়ের সদস্যদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে।