ঢাকা ০৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫

দিনে ১২ হাজার টাকার পিঠা বেচেন বেগুনী বেগম

  • আপডেট সময় : ১১:০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১০৪ বার পড়া হয়েছে

বগুড়া প্রতিনিধি : পিঠা-পুলি বানানোর ধুম পড়েছে বগুড়া শহরের পাড়া-মহল্লার রাস্তার মোড়ে। হরেক রকমের পিঠার দোকানের পসরা নিয়ে বসা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দোকানে বিকেল থেকে মধ্যরাত অবধি চলছে শীতের পিঠা বেচা-কেনা। ফলে একদিকে যেমন দরিদ্র ব্যবসায়ীরা পিঠা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন, অন্যদিকে যারা শহুরে ব্যস্ততায় বাসায় পিঠা বানানোর সময় পান না তারাও সহজেই শীতের পিঠার স্বাদ নিতে পারছেন।
শীতের সঙ্গে পিঠা-পুলির নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শীতের এই মৌসুমে প্রতিদিন বিকেলে বগুড়া শহরের সাতমাথা, সেউজগাজড়ী, খান্দার বাজার, বকশি বাজার মোড়সহ প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মোড়ে দেখা মিলবে ভ্রাম্যমাণ শীতের পিঠার দোকান। ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর প্রতিটিতেই সুস্বাদু পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ফলে দোকানিদের কেউ দিনে ৫ হাজার আবার কেউ ১০ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করতে পারছেন।
শহরের খান্দার বাজার সংলগ্ন স্টেডিয়াম ফাঁড়ির সামনে পিঠার পসরা নিয়ে বসেছেন বেগুনী বেগম। ৩০ বছর ধরে প্রতি বছর আশ্বিনের শুরুতেই স্বামী ইদ্রিস ব্যাপারী আর সঙ্গে কয়েকজন কর্মচারীকে নিয়ে এই স্থানটিতে পিঠার দোকান নিয়ে বসেন তিনি। ব্যবসা চলে মধ্য ফাল্গুন পর্যন্ত। গোড়ার দিকে স্বামী-স্ত্রী দুইজন একটি মাত্র চুলো নিয়ে পিঠা বিক্রি শুরু করলেও এখন তাদের অন্তত ৮টি চুলোয় আগুন জ্বলে পিঠা তৈরির জন্য। এই দম্পতির সঙ্গে মোট ১০ জন কর্মচারী রয়েছেন পিঠার দোকানটিতে। প্রতিদিন বিক্রি হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পিঠা। বেগুনী বেগমের দোকানে যারা কাজ করেন তাদের কেউ পিঠা বানানো আবার কেউ ক্রেতাদের পিঠা পরিবেশনের কাজে ব্যস্ত থাকেন। বেগুনী বেগমও পিঠা বানান। তিনি তেল পিঠা ভাজেন। তার স্বামী চিতই পিঠা তৈরি করেন। ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা ভাজেন ঝাল চাপড়ি পিঠা। কুশলি (ঝাল এবং মিষ্টি), তেল (পাকান) পিঠা, চিতই বিক্রি করা হয় বেগুনী বেগমের পিঠার দোকানে। ক্রেতারা বেগুনি বেগমকে বেগুনী খালা সম্বোধন করেই ডাকেন।
পিঠা ক্রেতারা জানালেন, শহরের বিভিন্ন এলাকাতেই পিঠা ভেজে বিক্রি করা হয়। কিন্তু বেগুনী খালার পিঠার স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো। তাই বন্ধু-বান্ধবরা একত্র হলেই এদিকটাই চলে আসি পিঠা খেতে। এছাড়া, এখানকার পরিবেশও ভালো। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা এবং পিঠা খাওয়া দুটোই একসঙ্গে হয়ে যায়। জাকির হোসেন নামে অপর একজন ক্রেতা জানান, তিনি বাড়ির জন্য দশটি চিতই পিঠা কিনতে এসেছেন। চিতই পিঠাগুলো আজ রাতে দুধে ভিজিয়ে রাখা হবে। চিতই ভাজতে সময় লাগছে তাই তিনি একটি ঝাল এবং একটি মিষ্টি কুশলি কিনে খেয়ে অপেক্ষা করছেন গরম গরম পিঠার ব্যাগ হাতে নেওয়ার জন্য। পিঠা দোকানি ও বেগুনী বেগমের স্বামী ইদ্রিস ব্যাপারী বলেন, তার পিঠার দোকানে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ২০ টাকা দামের পিঠা রয়েছে। কুশলি এবং ডিম চাপড়ি পিঠা বেশি বিক্রি হয়। প্রতিদিন ২ মণ আটার পিঠা তৈরি হয়। দিনে বিক্রি হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পিঠা। কর্মচারীদের প্রতিদিন ২ হাজার ২০০ টাকা বেতন দিতে হয়।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দিনে ১২ হাজার টাকার পিঠা বেচেন বেগুনী বেগম

আপডেট সময় : ১১:০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

বগুড়া প্রতিনিধি : পিঠা-পুলি বানানোর ধুম পড়েছে বগুড়া শহরের পাড়া-মহল্লার রাস্তার মোড়ে। হরেক রকমের পিঠার দোকানের পসরা নিয়ে বসা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দোকানে বিকেল থেকে মধ্যরাত অবধি চলছে শীতের পিঠা বেচা-কেনা। ফলে একদিকে যেমন দরিদ্র ব্যবসায়ীরা পিঠা বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারছেন, অন্যদিকে যারা শহুরে ব্যস্ততায় বাসায় পিঠা বানানোর সময় পান না তারাও সহজেই শীতের পিঠার স্বাদ নিতে পারছেন।
শীতের সঙ্গে পিঠা-পুলির নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শীতের এই মৌসুমে প্রতিদিন বিকেলে বগুড়া শহরের সাতমাথা, সেউজগাজড়ী, খান্দার বাজার, বকশি বাজার মোড়সহ প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মোড়ে দেখা মিলবে ভ্রাম্যমাণ শীতের পিঠার দোকান। ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর প্রতিটিতেই সুস্বাদু পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। ফলে দোকানিদের কেউ দিনে ৫ হাজার আবার কেউ ১০ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করতে পারছেন।
শহরের খান্দার বাজার সংলগ্ন স্টেডিয়াম ফাঁড়ির সামনে পিঠার পসরা নিয়ে বসেছেন বেগুনী বেগম। ৩০ বছর ধরে প্রতি বছর আশ্বিনের শুরুতেই স্বামী ইদ্রিস ব্যাপারী আর সঙ্গে কয়েকজন কর্মচারীকে নিয়ে এই স্থানটিতে পিঠার দোকান নিয়ে বসেন তিনি। ব্যবসা চলে মধ্য ফাল্গুন পর্যন্ত। গোড়ার দিকে স্বামী-স্ত্রী দুইজন একটি মাত্র চুলো নিয়ে পিঠা বিক্রি শুরু করলেও এখন তাদের অন্তত ৮টি চুলোয় আগুন জ্বলে পিঠা তৈরির জন্য। এই দম্পতির সঙ্গে মোট ১০ জন কর্মচারী রয়েছেন পিঠার দোকানটিতে। প্রতিদিন বিক্রি হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পিঠা। বেগুনী বেগমের দোকানে যারা কাজ করেন তাদের কেউ পিঠা বানানো আবার কেউ ক্রেতাদের পিঠা পরিবেশনের কাজে ব্যস্ত থাকেন। বেগুনী বেগমও পিঠা বানান। তিনি তেল পিঠা ভাজেন। তার স্বামী চিতই পিঠা তৈরি করেন। ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা ভাজেন ঝাল চাপড়ি পিঠা। কুশলি (ঝাল এবং মিষ্টি), তেল (পাকান) পিঠা, চিতই বিক্রি করা হয় বেগুনী বেগমের পিঠার দোকানে। ক্রেতারা বেগুনি বেগমকে বেগুনী খালা সম্বোধন করেই ডাকেন।
পিঠা ক্রেতারা জানালেন, শহরের বিভিন্ন এলাকাতেই পিঠা ভেজে বিক্রি করা হয়। কিন্তু বেগুনী খালার পিঠার স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো। তাই বন্ধু-বান্ধবরা একত্র হলেই এদিকটাই চলে আসি পিঠা খেতে। এছাড়া, এখানকার পরিবেশও ভালো। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা এবং পিঠা খাওয়া দুটোই একসঙ্গে হয়ে যায়। জাকির হোসেন নামে অপর একজন ক্রেতা জানান, তিনি বাড়ির জন্য দশটি চিতই পিঠা কিনতে এসেছেন। চিতই পিঠাগুলো আজ রাতে দুধে ভিজিয়ে রাখা হবে। চিতই ভাজতে সময় লাগছে তাই তিনি একটি ঝাল এবং একটি মিষ্টি কুশলি কিনে খেয়ে অপেক্ষা করছেন গরম গরম পিঠার ব্যাগ হাতে নেওয়ার জন্য। পিঠা দোকানি ও বেগুনী বেগমের স্বামী ইদ্রিস ব্যাপারী বলেন, তার পিঠার দোকানে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ২০ টাকা দামের পিঠা রয়েছে। কুশলি এবং ডিম চাপড়ি পিঠা বেশি বিক্রি হয়। প্রতিদিন ২ মণ আটার পিঠা তৈরি হয়। দিনে বিক্রি হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পিঠা। কর্মচারীদের প্রতিদিন ২ হাজার ২০০ টাকা বেতন দিতে হয়।