প্রত্যাশা ডেস্ক : ভারতে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দেশটির সরকারের দেওয়া তথ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ফের ৪ লাখের বেশি কোভিড রোগী শনাক্তের খবরও নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। এ নিয়ে এক সপ্তাহে চতুর্থবার দেশটিতে দৈনিক শনাক্ত ৪ লাখ ছাড়াল। নতুন ৪ লাখ ১ হাজার নিয়ে ভারতের ভারতে মোট কোভিড শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৬। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় হওয়া ৪ হাজার ১৮৭ মৃত্যু যোগ করে দেশটিতে করোনাভাইরাসে প্রাণহানির সংখ্যাও দাঁড়াল ২ লাখ ৩৮ হাজার ২৭০ জনে।
গত শুক্রবার ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, জোরালো পদক্ষেপ নিলে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ এড়ানো যেতে পারে। পরবর্তী ঢেউয়ে শিশুদেরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করছেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে। ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত রোগী ও মৃত্যু দেখা পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটি এখন শিশুদের জন্য কোভিড কেন্দ্র বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। শিশুদের জন্য কোভিডের কোনো ভ্যাকসিন ভারতের কাছে নেই। সংক্রমণের চেইন ভাঙতে গত কয়েকদিনে দেশটির অনেকগুলো রাজ্যকে লকডাউন, কারফিউর মতো বিধিনিষেধ দিতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। তামিল নাড়ু, কর্ণাটক ও মনিপুরও এখন এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে। কর্ণাটকে সোমবার থেকে ২৪ মে পর্যন্ত দুই সপ্তাহের লকডাউন দেওয়া হয়েছে। দুই সপ্তাহের লকডাউন দিয়েছে তামিল নাড়ুও; মনিপুরে কারফিউ দেওয়া হয়েছে ১৭ মে পর্যন্ত। ভারতে মার্চের প্রথমদিকেও দিনে ২০ হাজারের কম নতুন রোগী পাওয়া যাচ্ছিল; অথচ দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝাপটায় এপ্রিল মাসেই দেশটিতে প্রায় ৬৬ লাখ মানুষের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ভারত জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করলেও এখন পর্যন্ত নাগরিকদের মধ্যে মাত্র ১৬ কোটি ৭০ লাখ ডোজ দিতে পেরেছে। শুক্রবার দেশটিতে ২৩ লাখেরও কম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। দেশটির অনেকগুলো রাজ্য ভ্যাকসিনের ঘাটতির কথাও জানিয়েছে।
গ্রামাঞ্চলেই বেশি ছড়াচ্ছে করোনা : ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধরনে গ্রামাঞ্চলে আগের থেকেও দ্রুত ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ক্রমেই বাড়েছে গ্রামাঞ্চলে করোনারোগীদের সংখ্যা। দেশটির বিভিন্ন পরিসংখ্যান থেকে উঠে আসছে এ তথ্য জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম ধাপে পাঁচ মাস ধরে বেশির ভাগ সংক্রমণ ছিল ঘনবসতিপূর্ণ শহর ও মফস্বল এলাকায়। গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণের হার তুলনামূলকভাবে কম ছিল। কিন্তু জুলাইয়ের পর থেকে চিত্র বদলাতে থাকে। ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে গ্রামাঞ্চলেও। আর চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে সেকেন্ড ওয়েভে দুই মাসেই গ্রামাঞ্চলে তুঙ্গে করোনা সংক্রমণ। ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭৩ শতাংশই গ্রামে থাকে। চলতি মার্চে মোট করোনা সংক্রমণের ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে গ্রামে। আর ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ সংক্রমণ শহরে। বাকি সংক্রমণ ঘটেছে মফস্বল এলাকায়। এদিকে এপ্রিলেই গ্রামাঞ্চলের এই পরিসংখ্যান এক ধাক্কায় বেড়ে গেছে। গত মাসে দেশে মোট করোনা সংক্রমণের ৪৪ দশমিক ১ শতাংশই হয়েছে গ্রামে। শহরে হয়েছে ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ।
দিনে চার হাজারের বেশি মৃত্যু প্রথম দেখল ভারত
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ