ঢাকা ১০:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দিনাজপুরে আলুর বাম্পার ফলনে সন্তুষ্ট কৃষক

  • আপডেট সময় : ০৪:৪৫:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

দিনাজপুর সংবাদদাতা: জেলায় আবহাওয়া ভালো থাকায় আগাম জাতের আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।
দিনাজপুর সদর উপজেলার উলিপুর গ্রামের আলু চাষী কৃষক আবদুর রাজ্জাক তিনি বলেন, এবারে রবি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া ও আলু চাষের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ থাকায়, জেলায় আগাম জাতের বাম্পার আলুর উৎপাদন হয়েছে। গত ১৫ দিন থেকে পুরোদমে আগাম জাতের আলু ক্ষেত থেকে ওঠানো শুরু হয়েছে। আগাম জাতের নতুন আলু পাইকারেরা আলুর ক্ষেত থেকে ৫৭ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তবে আরো ১০ দিন আগে আলুটা উঠাতে পারলে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারতাম।
আলু চাষীরা জানায়, আগাম জাতের আলুর ক্ষেতে রোগ-বালাই প্রতিবছর দেখা যায়। এবারে ওইসব রোগ বলাই আলু ক্ষেত থেকে দূর হয়ে গেছে। আগাম জাতের আলুর ক্ষেতে বিশেষ করে লেদ- লেইট, ও ব্লাইট নামক বালাই রোগ ক্ষেতের ভাইরাস আক্রান্ত করে আলুর জমির পচন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। এবার আগাম জাতের আলুতে সেই রোগটি এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। তাই আগামী মৌসুমে আগাম জাতের আলুর চাষ আরও বাড়বে বলে জানায়, আলু চাষীরা এবং সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা ফয়জা রহমান।

জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ রাম নগর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, লাভের আশায় এক বিঘা জমিতে ৭ টি জাতের আলু রোপণ করেছি। আলু ওঠার পর ক্ষেত থেকে পাইকারেরা ৫৬ টাকা কেজি দরে ২২ মণ আলু নিয়ে গেছে।
একই এলাকার কৃষক মো. এনতাজুল হক বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে আগাম ৭ টি জাতের আলু চাষ করছি। এবারে আলু চাষে ৩ বিঘা জমিতে সব মিলে খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্জিত আলুর জমি থেকে গত ৭ দিনে আলু বিক্রি করেছি সাড়ে ৫ লাখ টাকার। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা লাভ করেছি। আমি আলু ক্ষেত থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে আলু পাইকারদের কাছে বিক্রি করছি।
কৃষক হামিদুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু লাগিয়েছি। আলুর বীজের দাম বেশি থাকায় এক বিঘা জমিতে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আলু বিক্রি করেছি ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। বীজের দামটা কম থাকলে আরও বেশি লাভ হতো।
জেলার চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, চলতি মৌসুমে চিরিরবন্দর উপজেলায় ৩ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আগাম জাতের আলু ৬৫ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে তুলতে পারেন কৃষকরা। সাধারণত প্রতি হেক্টরে আগাম জাতের আলুর ফল ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়। তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা যে আলু তুলছেন, সেখানে আমরা দেখছি এবারে হেক্টর প্রতি ১৫ মেট্রিক টন পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকেরা অধিক লাভবান হচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া জানায়, এবার দিনাজপুর জেলায় ৪৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। এবার হেক্টর প্রতি ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, গত ৩ দিন জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আগাম জাতের আলু চাষীদের আলু উঠানোর পর অর্জিত ফলন পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন কালে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, প্রতি হেক্টরে প্রায় ১৫ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। তিনি বলেন, এবারে আগাম উন্নত ৭টি জাতের আলুর ফলন বাম্পার হয়েছে ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দিনাজপুরে আলুর বাম্পার ফলনে সন্তুষ্ট কৃষক

আপডেট সময় : ০৪:৪৫:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

দিনাজপুর সংবাদদাতা: জেলায় আবহাওয়া ভালো থাকায় আগাম জাতের আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।
দিনাজপুর সদর উপজেলার উলিপুর গ্রামের আলু চাষী কৃষক আবদুর রাজ্জাক তিনি বলেন, এবারে রবি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া ও আলু চাষের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ থাকায়, জেলায় আগাম জাতের বাম্পার আলুর উৎপাদন হয়েছে। গত ১৫ দিন থেকে পুরোদমে আগাম জাতের আলু ক্ষেত থেকে ওঠানো শুরু হয়েছে। আগাম জাতের নতুন আলু পাইকারেরা আলুর ক্ষেত থেকে ৫৭ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তবে আরো ১০ দিন আগে আলুটা উঠাতে পারলে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারতাম।
আলু চাষীরা জানায়, আগাম জাতের আলুর ক্ষেতে রোগ-বালাই প্রতিবছর দেখা যায়। এবারে ওইসব রোগ বলাই আলু ক্ষেত থেকে দূর হয়ে গেছে। আগাম জাতের আলুর ক্ষেতে বিশেষ করে লেদ- লেইট, ও ব্লাইট নামক বালাই রোগ ক্ষেতের ভাইরাস আক্রান্ত করে আলুর জমির পচন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। এবার আগাম জাতের আলুতে সেই রোগটি এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। তাই আগামী মৌসুমে আগাম জাতের আলুর চাষ আরও বাড়বে বলে জানায়, আলু চাষীরা এবং সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা ফয়জা রহমান।

জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ রাম নগর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, লাভের আশায় এক বিঘা জমিতে ৭ টি জাতের আলু রোপণ করেছি। আলু ওঠার পর ক্ষেত থেকে পাইকারেরা ৫৬ টাকা কেজি দরে ২২ মণ আলু নিয়ে গেছে।
একই এলাকার কৃষক মো. এনতাজুল হক বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে আগাম ৭ টি জাতের আলু চাষ করছি। এবারে আলু চাষে ৩ বিঘা জমিতে সব মিলে খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্জিত আলুর জমি থেকে গত ৭ দিনে আলু বিক্রি করেছি সাড়ে ৫ লাখ টাকার। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা লাভ করেছি। আমি আলু ক্ষেত থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে আলু পাইকারদের কাছে বিক্রি করছি।
কৃষক হামিদুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু লাগিয়েছি। আলুর বীজের দাম বেশি থাকায় এক বিঘা জমিতে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আলু বিক্রি করেছি ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। বীজের দামটা কম থাকলে আরও বেশি লাভ হতো।
জেলার চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, চলতি মৌসুমে চিরিরবন্দর উপজেলায় ৩ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আগাম জাতের আলু ৬৫ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে তুলতে পারেন কৃষকরা। সাধারণত প্রতি হেক্টরে আগাম জাতের আলুর ফল ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়। তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা যে আলু তুলছেন, সেখানে আমরা দেখছি এবারে হেক্টর প্রতি ১৫ মেট্রিক টন পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকেরা অধিক লাভবান হচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া জানায়, এবার দিনাজপুর জেলায় ৪৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। এবার হেক্টর প্রতি ফলন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, গত ৩ দিন জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আগাম জাতের আলু চাষীদের আলু উঠানোর পর অর্জিত ফলন পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন কালে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, প্রতি হেক্টরে প্রায় ১৫ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। তিনি বলেন, এবারে আগাম উন্নত ৭টি জাতের আলুর ফলন বাম্পার হয়েছে ।