ঢাকা ০৯:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দায়িত্ব নেওয়ার দুদিন পরই যে পরীক্ষার মুখে পড়লেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৫:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক- ছবি রয়টার্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ায় মারাত্মক বিমান দুঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছান ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক। তিনি যখন সেখানে যান তখন তার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ৪৮ ঘণ্টাও হয়নি। দায়িত্বগ্রহণের পরপরই এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটাতে রীতিমতো পরীক্ষার মুখে পড়েছেন ভারপ্রাপ্ত এই প্রেসিডেন্ট।

তার সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু-এর অভিশংসনের পরই ভারপ্রাপ্ত নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন দেশটির অর্থমন্ত্রী চোই। সামরিক আইন জারির কারণে ১৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসন এবং ক্ষমতা থেকে বরখাস্ত করা হয়।

এর পর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন হান। পরে তাকেও অভিশংসিত করা হয়।

এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশে রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে আরও একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ালো জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭সি২২১৬ এর দুর্ঘটনাটি। রবিবার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি প্রাচীরের সঙ্গে উড়োজাহাজটির ধাক্কা লেগে বিস্ফোর ঘটে।

এতে ১৮১ যাত্রীর অধিকাংশই নিহত হয়েছেন।

এই দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চোই। এটিকে একটি বিশেষ দুর্যোগ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি।

চোই বলছিলেন, ‘শোকাবহ পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। সরকার এই দুর্ঘটনা থেকে পুনরুদ্ধার ও এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।’

পর্দার আড়ালে ঘটনা হলো, সরকারি কার্যালয়গুলো এখনও চেইন অব কমান্ড এবং কীভাবে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা হবে তা খুঁজে বের করছে। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এবং অন্য চার কর্মকর্তা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন। বিষয়টির সংবেদনশীলতার জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন।

একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নয়, আজ চোই ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুয়ানে গিয়েছিলেন।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য পরিবহন মন্ত্রণালয় ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের কমর্র্কতাদের একটি দল মুয়ান বিমান দুর্ঘটনার বিষয়ে চোইকে সরাসরি অভিহিত করবে। তার সব সময়সূচীতে আমরা কীভাবে প্রেস রিলিজ বিতরণ করব সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

অন্য এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিদেশী নীতি, প্রশাসনিক সমস্যা বা নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কাছে চোইকে রিপোর্ট করার জন্য দল রয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ইউনের কার্যালয়ের কর্মীরা তা করেন না। চোই সরকারি কোনও বাসভবনের পরিবর্তে সিউলের একটি সরকারি কমপ্লেক্স থেকে কাজ করছেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউন ও হ্যানের কার্যালয় থেকে কে চোই-এর কাছে রিপোর্ট করবে তা এখনও অনিশ্চিত। অর্থমন্ত্রী হিসেবে চোইয়ের কিছু দায়িত্ব উপমন্ত্রীর কাছে অর্পণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ দলের মিটিংগুলো মন্ত্রী পর্যায়ের সভা। আর তাই ভূমিমন্ত্রী ও নিরাপত্তামন্ত্রী সরাসরি চোইকে রিপোর্ট করেন।’

চতুর্থ সূত্রটি বলছে, প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তে চোই সেই কেন্দ্রীভূত দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি সাধারণত ২০১৪ সালে সিওলে ফেরি ডুবে যাওয়ার এবং ইতাবোন হ্যালোইন ক্রাশের পর তৈরি একটি ম্যানুয়ালের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করবেন। ওই সময় ফেরি ডুবে ৩০৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং হ্যালোউইন ক্রাশে মারা গিয়েছিল ১৫৯ জন।

ইউন অপ্রত্যাশিতভাবে ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করলে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয়। বিরোধী নেতৃত্বাধীন পার্লামেন্ট তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে তার অভিশংসন করে এবং পরে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে হানকে দায়িত্ব দেয়।

সাংবিধানিক আদালত ইউন ও হানের ভাগ্য নির্ধারণ করার সময় পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন চোই।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশে উগ্র বাম কমিউনিস্টদের ভোট দিতে দেওয়া হয় ২৯ মিলিয়ন ডলার

দায়িত্ব নেওয়ার দুদিন পরই যে পরীক্ষার মুখে পড়লেন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট

আপডেট সময় : ০৬:৫৫:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ায় মারাত্মক বিমান দুঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছান ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক। তিনি যখন সেখানে যান তখন তার দায়িত্ব নেওয়ার সময় ৪৮ ঘণ্টাও হয়নি। দায়িত্বগ্রহণের পরপরই এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটাতে রীতিমতো পরীক্ষার মুখে পড়েছেন ভারপ্রাপ্ত এই প্রেসিডেন্ট।

তার সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু-এর অভিশংসনের পরই ভারপ্রাপ্ত নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন দেশটির অর্থমন্ত্রী চোই। সামরিক আইন জারির কারণে ১৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসন এবং ক্ষমতা থেকে বরখাস্ত করা হয়।

এর পর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন হান। পরে তাকেও অভিশংসিত করা হয়।

এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশে রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে আরও একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ালো জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭সি২২১৬ এর দুর্ঘটনাটি। রবিবার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি প্রাচীরের সঙ্গে উড়োজাহাজটির ধাক্কা লেগে বিস্ফোর ঘটে।

এতে ১৮১ যাত্রীর অধিকাংশই নিহত হয়েছেন।

এই দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চোই। এটিকে একটি বিশেষ দুর্যোগ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি।

চোই বলছিলেন, ‘শোকাবহ পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। সরকার এই দুর্ঘটনা থেকে পুনরুদ্ধার ও এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।’

পর্দার আড়ালে ঘটনা হলো, সরকারি কার্যালয়গুলো এখনও চেইন অব কমান্ড এবং কীভাবে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা হবে তা খুঁজে বের করছে। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এবং অন্য চার কর্মকর্তা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন। বিষয়টির সংবেদনশীলতার জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলেছেন।

একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নয়, আজ চোই ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুয়ানে গিয়েছিলেন।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য পরিবহন মন্ত্রণালয় ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের কমর্র্কতাদের একটি দল মুয়ান বিমান দুর্ঘটনার বিষয়ে চোইকে সরাসরি অভিহিত করবে। তার সব সময়সূচীতে আমরা কীভাবে প্রেস রিলিজ বিতরণ করব সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

অন্য এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিদেশী নীতি, প্রশাসনিক সমস্যা বা নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কাছে চোইকে রিপোর্ট করার জন্য দল রয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ইউনের কার্যালয়ের কর্মীরা তা করেন না। চোই সরকারি কোনও বাসভবনের পরিবর্তে সিউলের একটি সরকারি কমপ্লেক্স থেকে কাজ করছেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউন ও হ্যানের কার্যালয় থেকে কে চোই-এর কাছে রিপোর্ট করবে তা এখনও অনিশ্চিত। অর্থমন্ত্রী হিসেবে চোইয়ের কিছু দায়িত্ব উপমন্ত্রীর কাছে অর্পণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ দলের মিটিংগুলো মন্ত্রী পর্যায়ের সভা। আর তাই ভূমিমন্ত্রী ও নিরাপত্তামন্ত্রী সরাসরি চোইকে রিপোর্ট করেন।’

চতুর্থ সূত্রটি বলছে, প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তে চোই সেই কেন্দ্রীভূত দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি সাধারণত ২০১৪ সালে সিওলে ফেরি ডুবে যাওয়ার এবং ইতাবোন হ্যালোইন ক্রাশের পর তৈরি একটি ম্যানুয়ালের ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করবেন। ওই সময় ফেরি ডুবে ৩০৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং হ্যালোউইন ক্রাশে মারা গিয়েছিল ১৫৯ জন।

ইউন অপ্রত্যাশিতভাবে ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারি করলে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয়। বিরোধী নেতৃত্বাধীন পার্লামেন্ট তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে তার অভিশংসন করে এবং পরে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে হানকে দায়িত্ব দেয়।

সাংবিধানিক আদালত ইউন ও হানের ভাগ্য নির্ধারণ করার সময় পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন চোই।