নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে সোমবারও (২ জুন) নগর ভবনে অবস্থান কর্মসূচি চলেছে।
‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে বেলা সাড়ে ১১টায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। এ কর্মসূচিতে ইশরাকের সমর্থকদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরাও রয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগর ভবনের ভেতরের ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা। নগর ভবনের সব ফটকে এখনো তালা ঝুলছে। কিছুক্ষণ পরপর ইশরাক হোসেনকে মেয়র করার দাবির পাশাপাশি যুবদল, শ্রমিক দলের দলীয় স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরা।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা চলবে না চলবে না’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে মানতে হবে’, ‘দাবি মোদের একটাই মেয়র ছাড়া অফিস নাই’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘শ্রমিক দলের অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দেন।
ওয়ারী থানার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘উচ্চ আদালতের রায় দেওয়ার পরও শপথ নিয়ে গড়িমসি করা হচ্ছে। কতিপয় উপদেষ্টার কারণে নগরবাসীর ভোগান্তি হচ্ছে। রাজনীতির নোংরা খেলা চলছে। আমরা ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছি, শপথ পড়ানো না হলে আমরা নব্য ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধেও লড়াই করে যাবো।’
ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর দাবিতে ১৪ মে থেকে এই আন্দোলন শুরু হয়। ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সংগঠিত হয়ে আন্দোলনে নামেন সিটি করপোরেশনের কর্মচারী, ইশরাকের সমর্থকসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা। মাঝে ৪৮ ঘণ্টার বিরতির পর আবার কর্মসূচি চলছে। টানা ২০ দিন ধরে আন্দোলনে নগর ভবনের সব ধরনের সেবা বন্ধ রয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বংশাল এলাকা থেকে নগর ভবনে আসেন রিপন আলী নামের এক শিক্ষার্থী। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন-সংক্রান্ত কাজের জন্য এসেছিলাম। গত কয়েক দিনের আন্দোলনের কথা জানতাম। আদালত রায় দিয়েছেন শুনে ভেবেছিলাম, সব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কিন্তু এসে দেখি, সব কাজ এখনো বন্ধ।’
নগর ভবনের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও একই ভবনে থাকা জনতা ও সোনালী ব্যাংকের দুটি শাখার কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে। নগর ভবনের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা তাঁদের ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পন্ন করছেন।
বেলা একটার দিকে জনতা ব্যাংক থেকে বেতন তুলে বের হচ্ছিলেন নগর ভবনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘নগর ভবনের অন্য কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ব্যাংক খোলা রয়েছে। সামনে ঈদ তাই কিছু টাকা তুলতে আসছিলাম।’
ইশরাক-সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে করপোরেশনের কর্মকর্তারাও অঘোষিত ছুটিতে আছেন। ফটকগুলো তালাবদ্ধ থাকার কারণে কর্মকর্তারা অফিসে আসছেন না। শুধু পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কাজ ছাড়া দাপ্তরিক কাজ প্রায় পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।