নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের বিষয়ে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের কাছে অভিমত চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঘোষণাপত্রের খসড়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সর্বদলীয় এ সংলাপের পরবর্তী কর্মপন্থা হিসেবে এ মতামত নেওয়া হচ্ছে। আজ শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়, ঘোষণাপত্র নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় সংলাপের পরবর্তী কর্মপন্থা হিসেবে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলসহ সব অংশীজন থেকে অভিমত নেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ঠিকানায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বরাবর ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চিঠির মাধ্যমে অভিমত পাঠানো যাবে। প্রাপ্ত অভিমতগুলো পর্যালোচনা করে একটি সংশোধিত ও সর্বজনগ্রাহ্য ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে। জনগণের উপস্থিতিতে তা অনতিবিলম্বে ঘোষিত হবে।
বৃহস্পতিবারের সর্বদলীয় বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারাও বৈঠকে অংশ নেন।
এ বৈঠকের আগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছিল, যা আলোচনার সুবিধার্থে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের কাছে দেওয়া হয়েছিল।
এই খসড়ায় ১৯৭২ সালের সংবিধান সংশোধন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে। আর এই ঘোষণাপত্র গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলে খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য এটি খসড়া। এখন আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। এ ঘোষণাপত্র নিয়ে তখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়।
হঠাৎ ঘোষণাপত্রের বিষয়টি কেন সামনে আনা হলো, এর প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং তখন এ উদ্যোগের সঙ্গে সরকার সম্পৃক্ত নয় বলে উল্লেখ করেছিল। অবশ্য পরে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
ওই রাতে বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সময়সীমা শেষ হওয়ার পরদিন গত বৃহস্পতিবার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বৈঠক হয়। এখন তার ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মপন্থা হিসেবে মতামত নেওয়া হচ্ছে।




















