ঢাকা ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

দলে যারা আসেন, কারা আসেন?

  • আপডেট সময় : ১১:৪৫:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা : শেষ পর্যন্ত একটা চেনা ছকেই নাটকের যবনিকা টানা হলো। চাকরিজীবী লীগ নামে ‘রাজনৈতিক দোকান’ খুলে বিতর্কিত আলোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর শুধু দল থেকে বহিষ্কৃতই হলেন না, আটকও হলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা খেলেন। আগের অনেক ইস্যুর মতো হেলেনা কান্ডেরও পরিসমাপ্তি ঘটল র‌্যাব-এর তল্লাশি অভিযানে। সেই একই ফর্মুলা-সরকারের সঙ্গে বা ক্ষমতাসীন দলের সাথে বনিবনা না হলে বাসায় অভিযান, বিদেশি মদ কিংবা এ জাতীয় কিছু উদ্ধার এবং সেই লাইনে মামলা। যুবলীগের সম্রাট থেকে চাকরিজীবী লীগের হেলেনা- সবক্ষেত্রে একই ছক।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এতদিনতো তিনি দিব্যিই ছিলেন এবং থাকতেও পারতেন যদি বেশি আলোচনায় না আসতেন। হয়তো ভাগ্য তার সহায় হয়নি। হেলেনা জাহাঙ্গীরের দোকানের শাটার বন্ধ হয়েছে, কিন্তু আরও অসংখ্য দোকান তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব দোকান চাঁদাবাজির দোকান, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী সংগঠন, অবৈধ সংগঠন। কিন্তু গত ১২ টি বছর ধরে এরা আছে, নানা মহলে আধিপত্য বিস্তার করে ফুলেফেঁপে বড় হয়েছে এসবের নেতারা যারা কখনও দলের শাখা রাজনীতিও করে আসে নি। যারা একদিন মূল দলে জায়গা পাবে বলে সরকারির চাকরির মোহ ছেড়ে, বিদেশ যাবার ডাক ছেড়ে দলের জন্য, দেশের জন্য রাজনীতি করেন, জেল জুলুম খাটেন তাদের কয়জনকে জায়গা দেওয়া হয় দলে? এই প্রশ্ন এখন দলের স্তরে স্তরে। সারাদেশ নয়, শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার, তার হল শাথা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের কতজনের মূল্যায়ন হয়েছে দলে?
দুঃখজনকভাবে পুরো বিষয়টি আসলে দলতন্ত্রের পাঁকেই নিমজ্জিত থাকছে। দল ক্ষমতায়, তাই ক্ষমতার চর্চা সর্বত্র। পরিকল্পনাহীনভাবে চলছে অনেক কর্মকা-। আওয়ামী লীগের মত ঐতিহ্যবাহী দলের এখনকার চেহারা দেখে যে কাউকে হতাশ হতে হয়। কেন্দ্র থেকে প্রান্ত- প্রতিটি শাখা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ও সেগুলোর শাখাকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং সেটা অবশ্যই হতে রাজনীতি-কে প্রাধান্য দিয়ে, গোষ্ঠিতন্ত্রকে ভালোবাসা দিয়ে নয়, পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে নয়।
হেলেনা জাহাঙ্গীরদের দোষ যতা, তার চাইতে দায় অনেক বেশি সেইসব নেতার যারা এসব দোকানে নিয়মিত গেছেন, এসব দোকানদারের সাথে সখ্যতা গড়েছেন। দলের পক্ষ থেকে পুলিশি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে হেলেনার বিরুদ্ধে, কিন্তু দলের সিস্টেমে যে গলদ সেটা বদলানো যাবে কী? ধরা হবে কি তাদের যারা পেছন থেকে এসব দোকানের মহাজন সেজে বসে আছেন?
এই ভয়াবহ দোকানবাজি অপ্রত্যাশিত? অহেতুক? আকস্মিক? মোটেও না। এই অস্বাস্থ্যকর প্রবণতা অতীতেও ছিল এবং সাম্প্রতিককালে সেটা বেড়েছে কেবল। কারণ শাসক দল টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়, ফলে ক্ষমতার স্বাদ নেওয়ার মোহ আছে দলের ভেতরে এবং বাইরে। তারাই রাজনৈতিক দলের নামে এই অরাজনৈতিক কাজটা করে।
প্রতিটি এলাকায় চিহ্নিত সমাজবিরোধী ও দুষ্কৃতীরা দলে-দলে দলের ছায়ায় আশ্রয় নিলে আসল কর্মীরা হারিয়ে যায়। এই দোকান দুর্বৃত্তদের মদদকারীরা কখনও চিহ্নিত হয় না, কখনও তাদের কোন জবাবদিহিতা করতে হয় না। রাজনীতির এই রীতি অপরিবর্তিত আছে বহু বছর ধরে এবং অন্যায়কে লঘু করে দেখবার প্রবণতাই নব নব দোকানদার সৃষ্টি করে আসল কর্মীদের দূরে ঠেলে দিয়ে।
সরকারি দলের পক্ষ নিয়ে এখন বলা হবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ‘অপরাধী’-কে ধরা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে গাফিলতিা কোথায়? এই সাফাইটা মেনে নেওয়া কঠিন। সমাজবিরোধীদের সঙ্গে দল আর নেতাদের যোগ, যার ফলে বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যে প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে তার সুরাহা চাই।
এখন হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে রঙ্গরসিকতা চলছে। ধরা পড়লেই হাইব্রিড, কাউয়া নাম দেওয়া হচ্ছে, অথচ ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত এদের সাথেই সখ্যতা। আটক হওয়ার আগে, বহিষ্কারের পর টেলিভিশন টকশো-তে সিনিয়র নেতারা হেলেনা জাহাঙ্গীরের সাথে বসতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো তিনি এই দলের পদে ছিলেন, নেত্রী ছিলেন। এখানে তাদের রাজনৈতিক সততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। যারা এসব দোকানদারকে জায়গা দিয়েছেন বা নিশ্চুপ থেকেছেন বা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এসব কান্ডকে সমর্থন করেছিলেন, আর আজ হঠাৎ করে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন, তাদের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা বা দূরদৃষ্টি নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়।
রাজনীতিতে নানারকম ফন্দি ফিকির থাকে। পরিস্থিতি অনুযায়ী তাৎপর্য বদলায়। কিন্তু কোন অবস্থাতেই দলের আদর্শ উদ্দেশ্যকে বিসর্জন দিয়ে নয়। দীর্ঘস্থায়ী সংগঠন গড়ার চেষ্টা থাকতে হয় এবং কাকে দলে নেওয়া হবে বা হবে না, কোন কোন সহযোগী সংগঠন কি ভূমিকা রাখবে তা নিয়ে সংগতভাবেই স্পষ্ট নিয়ম-নির্দেশ থাকতে হয়।
দলে নতুন করে যারা আসবেন, তাদের রাজনৈতিক অতীত খতিয়ে দেখতে হবে। যদি তা না থাকে তবে তার অন্য কি অর্জন আছে সেটা দেখা দরকার। একটা স্ক্রিনিং কমিটি থাকবে যারা কাজটা করতে সততার সাথে। চাঁদাবাজি সংস্কৃতির জমানায় সেটাও কতা স্বচ্ছভাবে হবে, সে প্রশ্ন আছে। তবুও একটা চেষ্টা নিশ্চয়ই থাকবে যে তাকেই নেওয়া হবে যিনি বিবেক আর শুভবুদ্ধির ডাকে আসবেন, কোনও রকম প্রাপ্তির আশা নিয়ে নয়।
দুঃখজনকভাবে পুরো বিষয়টি আসলে দলতন্ত্রের পাঁকেই নিমজ্জিত থাকছে। দল ক্ষমতায়, তাই ক্ষমতার চর্চা সর্বত্র। পরিকল্পনাহীনভাবে চলছে অনেক কর্মকা-। আওয়ামী লীগের মত ঐতিহ্যবাহী দলের এখনকার চেহারা দেখে যে কাউকে হতাশ হতে হয়। কেন্দ্র থেকে প্রান্ত- প্রতিটি শাখা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ও সেগুলোর শাখাকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং সেটা অবশ্যই হতে রাজনীতি-কে প্রাধান্য দিয়ে, গোষ্ঠিতন্ত্রকে ভালোবাসা দিয়ে নয়, পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে নয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দলে যারা আসেন, কারা আসেন?

আপডেট সময় : ১১:৪৫:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা : শেষ পর্যন্ত একটা চেনা ছকেই নাটকের যবনিকা টানা হলো। চাকরিজীবী লীগ নামে ‘রাজনৈতিক দোকান’ খুলে বিতর্কিত আলোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর শুধু দল থেকে বহিষ্কৃতই হলেন না, আটকও হলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা খেলেন। আগের অনেক ইস্যুর মতো হেলেনা কান্ডেরও পরিসমাপ্তি ঘটল র‌্যাব-এর তল্লাশি অভিযানে। সেই একই ফর্মুলা-সরকারের সঙ্গে বা ক্ষমতাসীন দলের সাথে বনিবনা না হলে বাসায় অভিযান, বিদেশি মদ কিংবা এ জাতীয় কিছু উদ্ধার এবং সেই লাইনে মামলা। যুবলীগের সম্রাট থেকে চাকরিজীবী লীগের হেলেনা- সবক্ষেত্রে একই ছক।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এতদিনতো তিনি দিব্যিই ছিলেন এবং থাকতেও পারতেন যদি বেশি আলোচনায় না আসতেন। হয়তো ভাগ্য তার সহায় হয়নি। হেলেনা জাহাঙ্গীরের দোকানের শাটার বন্ধ হয়েছে, কিন্তু আরও অসংখ্য দোকান তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব দোকান চাঁদাবাজির দোকান, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী সংগঠন, অবৈধ সংগঠন। কিন্তু গত ১২ টি বছর ধরে এরা আছে, নানা মহলে আধিপত্য বিস্তার করে ফুলেফেঁপে বড় হয়েছে এসবের নেতারা যারা কখনও দলের শাখা রাজনীতিও করে আসে নি। যারা একদিন মূল দলে জায়গা পাবে বলে সরকারির চাকরির মোহ ছেড়ে, বিদেশ যাবার ডাক ছেড়ে দলের জন্য, দেশের জন্য রাজনীতি করেন, জেল জুলুম খাটেন তাদের কয়জনকে জায়গা দেওয়া হয় দলে? এই প্রশ্ন এখন দলের স্তরে স্তরে। সারাদেশ নয়, শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার, তার হল শাথা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের কতজনের মূল্যায়ন হয়েছে দলে?
দুঃখজনকভাবে পুরো বিষয়টি আসলে দলতন্ত্রের পাঁকেই নিমজ্জিত থাকছে। দল ক্ষমতায়, তাই ক্ষমতার চর্চা সর্বত্র। পরিকল্পনাহীনভাবে চলছে অনেক কর্মকা-। আওয়ামী লীগের মত ঐতিহ্যবাহী দলের এখনকার চেহারা দেখে যে কাউকে হতাশ হতে হয়। কেন্দ্র থেকে প্রান্ত- প্রতিটি শাখা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ও সেগুলোর শাখাকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং সেটা অবশ্যই হতে রাজনীতি-কে প্রাধান্য দিয়ে, গোষ্ঠিতন্ত্রকে ভালোবাসা দিয়ে নয়, পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে নয়।
হেলেনা জাহাঙ্গীরদের দোষ যতা, তার চাইতে দায় অনেক বেশি সেইসব নেতার যারা এসব দোকানে নিয়মিত গেছেন, এসব দোকানদারের সাথে সখ্যতা গড়েছেন। দলের পক্ষ থেকে পুলিশি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে হেলেনার বিরুদ্ধে, কিন্তু দলের সিস্টেমে যে গলদ সেটা বদলানো যাবে কী? ধরা হবে কি তাদের যারা পেছন থেকে এসব দোকানের মহাজন সেজে বসে আছেন?
এই ভয়াবহ দোকানবাজি অপ্রত্যাশিত? অহেতুক? আকস্মিক? মোটেও না। এই অস্বাস্থ্যকর প্রবণতা অতীতেও ছিল এবং সাম্প্রতিককালে সেটা বেড়েছে কেবল। কারণ শাসক দল টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়, ফলে ক্ষমতার স্বাদ নেওয়ার মোহ আছে দলের ভেতরে এবং বাইরে। তারাই রাজনৈতিক দলের নামে এই অরাজনৈতিক কাজটা করে।
প্রতিটি এলাকায় চিহ্নিত সমাজবিরোধী ও দুষ্কৃতীরা দলে-দলে দলের ছায়ায় আশ্রয় নিলে আসল কর্মীরা হারিয়ে যায়। এই দোকান দুর্বৃত্তদের মদদকারীরা কখনও চিহ্নিত হয় না, কখনও তাদের কোন জবাবদিহিতা করতে হয় না। রাজনীতির এই রীতি অপরিবর্তিত আছে বহু বছর ধরে এবং অন্যায়কে লঘু করে দেখবার প্রবণতাই নব নব দোকানদার সৃষ্টি করে আসল কর্মীদের দূরে ঠেলে দিয়ে।
সরকারি দলের পক্ষ নিয়ে এখন বলা হবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ‘অপরাধী’-কে ধরা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে গাফিলতিা কোথায়? এই সাফাইটা মেনে নেওয়া কঠিন। সমাজবিরোধীদের সঙ্গে দল আর নেতাদের যোগ, যার ফলে বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যে প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে তার সুরাহা চাই।
এখন হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নিয়ে রঙ্গরসিকতা চলছে। ধরা পড়লেই হাইব্রিড, কাউয়া নাম দেওয়া হচ্ছে, অথচ ধরা পড়ার আগ পর্যন্ত এদের সাথেই সখ্যতা। আটক হওয়ার আগে, বহিষ্কারের পর টেলিভিশন টকশো-তে সিনিয়র নেতারা হেলেনা জাহাঙ্গীরের সাথে বসতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো তিনি এই দলের পদে ছিলেন, নেত্রী ছিলেন। এখানে তাদের রাজনৈতিক সততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। যারা এসব দোকানদারকে জায়গা দিয়েছেন বা নিশ্চুপ থেকেছেন বা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এসব কান্ডকে সমর্থন করেছিলেন, আর আজ হঠাৎ করে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন, তাদের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা বা দূরদৃষ্টি নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়।
রাজনীতিতে নানারকম ফন্দি ফিকির থাকে। পরিস্থিতি অনুযায়ী তাৎপর্য বদলায়। কিন্তু কোন অবস্থাতেই দলের আদর্শ উদ্দেশ্যকে বিসর্জন দিয়ে নয়। দীর্ঘস্থায়ী সংগঠন গড়ার চেষ্টা থাকতে হয় এবং কাকে দলে নেওয়া হবে বা হবে না, কোন কোন সহযোগী সংগঠন কি ভূমিকা রাখবে তা নিয়ে সংগতভাবেই স্পষ্ট নিয়ম-নির্দেশ থাকতে হয়।
দলে নতুন করে যারা আসবেন, তাদের রাজনৈতিক অতীত খতিয়ে দেখতে হবে। যদি তা না থাকে তবে তার অন্য কি অর্জন আছে সেটা দেখা দরকার। একটা স্ক্রিনিং কমিটি থাকবে যারা কাজটা করতে সততার সাথে। চাঁদাবাজি সংস্কৃতির জমানায় সেটাও কতা স্বচ্ছভাবে হবে, সে প্রশ্ন আছে। তবুও একটা চেষ্টা নিশ্চয়ই থাকবে যে তাকেই নেওয়া হবে যিনি বিবেক আর শুভবুদ্ধির ডাকে আসবেন, কোনও রকম প্রাপ্তির আশা নিয়ে নয়।
দুঃখজনকভাবে পুরো বিষয়টি আসলে দলতন্ত্রের পাঁকেই নিমজ্জিত থাকছে। দল ক্ষমতায়, তাই ক্ষমতার চর্চা সর্বত্র। পরিকল্পনাহীনভাবে চলছে অনেক কর্মকা-। আওয়ামী লীগের মত ঐতিহ্যবাহী দলের এখনকার চেহারা দেখে যে কাউকে হতাশ হতে হয়। কেন্দ্র থেকে প্রান্ত- প্রতিটি শাখা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ও সেগুলোর শাখাকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং সেটা অবশ্যই হতে রাজনীতি-কে প্রাধান্য দিয়ে, গোষ্ঠিতন্ত্রকে ভালোবাসা দিয়ে নয়, পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে নয়।