ঢাকা ০২:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

দলীয় পদে ফিরতে মুরাদের ‘সাধারণ ক্ষমার’ আবেদন

  • আপডেট সময় : ০২:১৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

জামালপুর প্রতিনিধি : অডিও কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো মুরাদ হাসান আবারও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চান, সেজন্য দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘সাধারণ ক্ষমার’ আবেদন করেছেন। জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এ সংসদ সদস্য গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের প্যাডে এ আবেদন করেন বলে তার ব্যক্তিগত প্রতিনিধি সরিষাবাড়ী পৌরসভার কাউন্সিলর সাখাওয়াত হোসেন মুকুল জানান।

এ বিষয়ে জানতে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে মুরাদ বলেন, “আমি সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন করেছি। আমি আশা করছি প্রধানমন্ত্রী আমাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।” চিঠিতে মুরাদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন কোনো কাজ তিনি করবেন না, যাতে দলের সন্মানহানি হয়। মুরাদের চিঠির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চিঠি আমি হাতে পাইনি, হয়ত এখন পাব। যেহেতু দপ্তরে জমা দিয়েছেন এবং তিনি ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেছেন, আমরা বিষয়টি আজকের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে উত্থাপন করবো, সিদ্ধান্ত কি সেটা মিটিংয়ে হবে।”
গত বছর খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে ফেইসবুকে এক টকশোতে বর্ণ ও নারী বিদ্বেষী বক্তব্যের জন্য কড়া সমালোচনা মুখে পড়েন মুরাদ। এর মধ্যে এক চিত্রনায়িকাকে টেলিফোনে অশালীন মন্তব্য ও হুমকি দেওয়ার একটি অডিও ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার পর জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও মুরাদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর দুপুরে ইমেইলে মুরাদের পাঠানো পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পৌঁছায়। সেখানে তিনি লেখেন, প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ‘ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায়’ তিনি পদত্যাগ করতে চান।
পদত্যাগপত্রে মুরাদ লিখেছিলেন, তাকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ২০২১ সালের ১৯ মে, যদিও ওই দায়িত্বে তিনি এসেছিলেন ২০১৯ সালের ১৯ মে।
ওই ভুলের কারণে এবং ইমেইলে পাঠানোয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তা ফেরত পাঠায়। পরে ভুল সংশোধন করে ‘হার্ড কপি’ আকারে দেওয়া হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিকালে তা গ্রহণ করে।
বর্তমানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মুরাদ তার সাধারণ ক্ষমার আবেদনে বলেন, “আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালে ৭ ডিসেম্বর উক্ত পদ থেকে আমোকে অব্যাহতি প্রদান করে।
“আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দৃঢ় প্রত্যয়ে অঙ্গীকার করিতেছি যে ভবিষ্যতে এমন কোনো কর্মকা- করব না, যার ফলে আপনার বিন্দুমাত্র সন্মানহানি হয়। অতএব বিনীত নিবেদন এই যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের সুযোগ প্রদান করে বাধিত করবেন।“
চিকিৎসাশাস্ত্রের ডিগ্রিধারী মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) আসন থেকে প্রথমবার সংসদে যান নবম সংসদে।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে দ্বিতীয়বার জয়ী হওয়ার পর তাকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দফায় সরকার গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে সরিয়ে মুরাদকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ২০০০ সালে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি হন মুরাদ হাসান। তিন বছর পর আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পান।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দলীয় পদে ফিরতে মুরাদের ‘সাধারণ ক্ষমার’ আবেদন

আপডেট সময় : ০২:১৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২

জামালপুর প্রতিনিধি : অডিও কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো মুরাদ হাসান আবারও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চান, সেজন্য দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘সাধারণ ক্ষমার’ আবেদন করেছেন। জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এ সংসদ সদস্য গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের প্যাডে এ আবেদন করেন বলে তার ব্যক্তিগত প্রতিনিধি সরিষাবাড়ী পৌরসভার কাউন্সিলর সাখাওয়াত হোসেন মুকুল জানান।

এ বিষয়ে জানতে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে মুরাদ বলেন, “আমি সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন করেছি। আমি আশা করছি প্রধানমন্ত্রী আমাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।” চিঠিতে মুরাদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন কোনো কাজ তিনি করবেন না, যাতে দলের সন্মানহানি হয়। মুরাদের চিঠির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চিঠি আমি হাতে পাইনি, হয়ত এখন পাব। যেহেতু দপ্তরে জমা দিয়েছেন এবং তিনি ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেছেন, আমরা বিষয়টি আজকের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে উত্থাপন করবো, সিদ্ধান্ত কি সেটা মিটিংয়ে হবে।”
গত বছর খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে ফেইসবুকে এক টকশোতে বর্ণ ও নারী বিদ্বেষী বক্তব্যের জন্য কড়া সমালোচনা মুখে পড়েন মুরাদ। এর মধ্যে এক চিত্রনায়িকাকে টেলিফোনে অশালীন মন্তব্য ও হুমকি দেওয়ার একটি অডিও ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার পর জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও মুরাদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর দুপুরে ইমেইলে মুরাদের পাঠানো পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পৌঁছায়। সেখানে তিনি লেখেন, প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ‘ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায়’ তিনি পদত্যাগ করতে চান।
পদত্যাগপত্রে মুরাদ লিখেছিলেন, তাকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ২০২১ সালের ১৯ মে, যদিও ওই দায়িত্বে তিনি এসেছিলেন ২০১৯ সালের ১৯ মে।
ওই ভুলের কারণে এবং ইমেইলে পাঠানোয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তা ফেরত পাঠায়। পরে ভুল সংশোধন করে ‘হার্ড কপি’ আকারে দেওয়া হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিকালে তা গ্রহণ করে।
বর্তমানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মুরাদ তার সাধারণ ক্ষমার আবেদনে বলেন, “আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালে ৭ ডিসেম্বর উক্ত পদ থেকে আমোকে অব্যাহতি প্রদান করে।
“আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দৃঢ় প্রত্যয়ে অঙ্গীকার করিতেছি যে ভবিষ্যতে এমন কোনো কর্মকা- করব না, যার ফলে আপনার বিন্দুমাত্র সন্মানহানি হয়। অতএব বিনীত নিবেদন এই যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের সুযোগ প্রদান করে বাধিত করবেন।“
চিকিৎসাশাস্ত্রের ডিগ্রিধারী মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী, মেস্টা ও তিতপল্যা) আসন থেকে প্রথমবার সংসদে যান নবম সংসদে।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে দ্বিতীয়বার জয়ী হওয়ার পর তাকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ দফায় সরকার গঠনের পাঁচ মাসের মাথায় ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে সরিয়ে মুরাদকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ২০০০ সালে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি হন মুরাদ হাসান। তিন বছর পর আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পান।