ঢাকা ০৩:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

দরিদ্রদের সহায়তায় সরকার কিছুই করছে না: ফখরুল

  • আপডেট সময় : ০১:৪২:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১
  • ১২৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তায় কিছুই করছে না বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনের আগের দিন গতকাল বুধবার দুপুরে এক দোয়া মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
পুরান ঢাকার জজ কোর্টে ঢাকা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের উদ্যোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ফখরুল বলেন, ‘করোনার এই দুঃসময়ে অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে সবচেয়ে বেশি দরকার তা হচ্ছে ‘দিন আনে দিন খায়’ মানুষের জন্য সহায়তা। পত্র-পত্রিকায় বেরিয়েছে যে, করোনা মহামারির ফলে দরিদ্র হয়ে গেছে, দারিদ্রসীমার নিচে এসেছে আড়াই কোটি মানুষ। আগের দরিদ্র তিন কোটি। তার মানে প্রায় ছয় কোটি মানুষ এখন দরিদ্রসীমার নিচে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে, অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে তার যে পারজিং পাওয়ার মিনিমামটা থাকতে হলে অবশ্যই এই মানুষগুলোর কাছে টাকা পাঠাতে হবে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, ক্যাশ ট্রান্সফার করতে হবে। সেটা তারা (সরকার) করছে না। এখনো তারা একইভাবে তেলে মাথায় তেল দিচ্ছে অর্থাৎ যাদের ইন্ডাস্ট্রি-নিন্ডাস্ট্রি আছে তাদেরকে আবারো প্রণোদনা দিচ্ছে, এই যে দিন আনে দিন খায় মানুষ তাদেরকে কিছুই দিচ্ছে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামীকাল বাজেট দিতে যাচ্ছে এই সরকার। আজকে মুস্তফা কামাল সাহেব একটি পত্রিকায় ইন্টারভিউতে বলেছেন, সব ধরনের মানুষকে মাথায় রেখে বাজেট করছেন। মুস্তফা কামাল সাহেব ব্যবসায়ী মানুষ, তিনি ব্যবসাটা ভালো বোঝেন। অর্থনীতি কতটুকু বোঝেন তার নিদর্শন আমরা খুঁজে পাইনি।’
বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতবার যখন করোনা শুরু হলো তখনই আমরা সঙ্গে আমাদের প্রস্তাবনা নিয়ে সামনে এসেছিলাম। আমরা বলেছিলাম যে, করোনাকালে যে অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হবে,দিন আনে দিন খায় মানুষ, শ্রমিক শ্রেণি এবং আজকে আইনজীবীরা আমাকে অনেকে স্লিপ দিয়েছে যে, কোর্ট বন্ধ থাকার ফলে কোনো আয় নেই। যারা আইনজীবী আছেন তারা অত্যন্ত কষ্টে আছেন। এদের জন্য কোনো প্রণোদনার ব্যবস্থা নেই।’ ফখরুল বলেন, ‘সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে সেই প্রণোদনা কীসের? মানুষকে তারা বোকা বানিয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিতে হবে সকলকে। ব্যাংক থেকে লোন নিলে সরকারের কী দরকার? ব্যাংক থেকে নেবে। এটা প্রণোদনা হলো কোত্থেকে? এটা প্রণোদনা নয়। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাংকে শোধ করতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্র্রণোদনা তাকেই বলে সরকার দুঃসময়েই আপনাকে যে আর্থিক সাহায্যটা করছে সেটা ফেরত নেবে না। আপনি সেই প্রণোদনার টাকা কাজে লাগাবেন। আমরা প্রস্তাবনায় বলেছিলাম যে, দিন আনে দিন খায় মানুষগুলো ১৫ হাজার টাকা করে তিন মাস অনুদান দিতে হবে। কিন্তু সেটা করা হয়নি। গত কয়েকদিন আগে পত্রিকায় উঠেছে গাইবান্ধার একজন কৃষক সবজি চাষ করে বলেছে যে, ভাই বিক্রি হচ্ছে না। কারণ ট্রাক যায় না, ট্রাক আসে না- সরকারের কোনো ব্যবস্থা নেই। এর চেয়ে আমাদেরকে মেরে ফেললে ভালো হতো। তাহলে কাকে প্রণোদনা দিচ্ছে? আপনাদের লোকগুলোকে যারা লুট করছে, দেশের অর্থনীতিকে একেবারে শূন্য পর্যায় নিয়ে গেছে তাদেরকে।’
মনগড়া প্রবৃদ্ধি হার : মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বড় বড় দালাল তৈরি করছেন আর বলছেন উন্নয়ন, আর মনগড়া প্রবৃদ্ধির হার দিচ্ছেন আর বলছেন যে, উন্নয়ন। উন্নয়ন সেটা নয়। উন্নয়ন হচ্ছে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়, সে যেন ভালো খেতে পায় বাচ্চাদের লেখাপড়া করাতে পারে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক থাকে সেটাকে বলে উন্নয়ন। এমন উন্নয়ন করেছেন যে, হাসপাতালে বেড নাই। একটা হাসপাতালে বানিয়েছেন কোবিডের সময়ে ওইটা রাত্রের মধ্যে উদাও হয়ে গেলো, হাসপাতাল নাই। ব্যবসা আবার নতুন করে নতুন কমিশন পাবে। এটা তো কমিশন এজেন্ট সরকার। এটা তো জনগণের সরকার নয়।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইইউ ও মেক্সিকোর ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

দরিদ্রদের সহায়তায় সরকার কিছুই করছে না: ফখরুল

আপডেট সময় : ০১:৪২:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সহায়তায় কিছুই করছে না বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনের আগের দিন গতকাল বুধবার দুপুরে এক দোয়া মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
পুরান ঢাকার জজ কোর্টে ঢাকা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা বার ইউনিটের উদ্যোগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। ফখরুল বলেন, ‘করোনার এই দুঃসময়ে অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে সবচেয়ে বেশি দরকার তা হচ্ছে ‘দিন আনে দিন খায়’ মানুষের জন্য সহায়তা। পত্র-পত্রিকায় বেরিয়েছে যে, করোনা মহামারির ফলে দরিদ্র হয়ে গেছে, দারিদ্রসীমার নিচে এসেছে আড়াই কোটি মানুষ। আগের দরিদ্র তিন কোটি। তার মানে প্রায় ছয় কোটি মানুষ এখন দরিদ্রসীমার নিচে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে, অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে তার যে পারজিং পাওয়ার মিনিমামটা থাকতে হলে অবশ্যই এই মানুষগুলোর কাছে টাকা পাঠাতে হবে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, ক্যাশ ট্রান্সফার করতে হবে। সেটা তারা (সরকার) করছে না। এখনো তারা একইভাবে তেলে মাথায় তেল দিচ্ছে অর্থাৎ যাদের ইন্ডাস্ট্রি-নিন্ডাস্ট্রি আছে তাদেরকে আবারো প্রণোদনা দিচ্ছে, এই যে দিন আনে দিন খায় মানুষ তাদেরকে কিছুই দিচ্ছে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামীকাল বাজেট দিতে যাচ্ছে এই সরকার। আজকে মুস্তফা কামাল সাহেব একটি পত্রিকায় ইন্টারভিউতে বলেছেন, সব ধরনের মানুষকে মাথায় রেখে বাজেট করছেন। মুস্তফা কামাল সাহেব ব্যবসায়ী মানুষ, তিনি ব্যবসাটা ভালো বোঝেন। অর্থনীতি কতটুকু বোঝেন তার নিদর্শন আমরা খুঁজে পাইনি।’
বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গতবার যখন করোনা শুরু হলো তখনই আমরা সঙ্গে আমাদের প্রস্তাবনা নিয়ে সামনে এসেছিলাম। আমরা বলেছিলাম যে, করোনাকালে যে অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হবে,দিন আনে দিন খায় মানুষ, শ্রমিক শ্রেণি এবং আজকে আইনজীবীরা আমাকে অনেকে স্লিপ দিয়েছে যে, কোর্ট বন্ধ থাকার ফলে কোনো আয় নেই। যারা আইনজীবী আছেন তারা অত্যন্ত কষ্টে আছেন। এদের জন্য কোনো প্রণোদনার ব্যবস্থা নেই।’ ফখরুল বলেন, ‘সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে সেই প্রণোদনা কীসের? মানুষকে তারা বোকা বানিয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিতে হবে সকলকে। ব্যাংক থেকে লোন নিলে সরকারের কী দরকার? ব্যাংক থেকে নেবে। এটা প্রণোদনা হলো কোত্থেকে? এটা প্রণোদনা নয়। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাংকে শোধ করতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘প্র্রণোদনা তাকেই বলে সরকার দুঃসময়েই আপনাকে যে আর্থিক সাহায্যটা করছে সেটা ফেরত নেবে না। আপনি সেই প্রণোদনার টাকা কাজে লাগাবেন। আমরা প্রস্তাবনায় বলেছিলাম যে, দিন আনে দিন খায় মানুষগুলো ১৫ হাজার টাকা করে তিন মাস অনুদান দিতে হবে। কিন্তু সেটা করা হয়নি। গত কয়েকদিন আগে পত্রিকায় উঠেছে গাইবান্ধার একজন কৃষক সবজি চাষ করে বলেছে যে, ভাই বিক্রি হচ্ছে না। কারণ ট্রাক যায় না, ট্রাক আসে না- সরকারের কোনো ব্যবস্থা নেই। এর চেয়ে আমাদেরকে মেরে ফেললে ভালো হতো। তাহলে কাকে প্রণোদনা দিচ্ছে? আপনাদের লোকগুলোকে যারা লুট করছে, দেশের অর্থনীতিকে একেবারে শূন্য পর্যায় নিয়ে গেছে তাদেরকে।’
মনগড়া প্রবৃদ্ধি হার : মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বড় বড় দালাল তৈরি করছেন আর বলছেন উন্নয়ন, আর মনগড়া প্রবৃদ্ধির হার দিচ্ছেন আর বলছেন যে, উন্নয়ন। উন্নয়ন সেটা নয়। উন্নয়ন হচ্ছে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়, সে যেন ভালো খেতে পায় বাচ্চাদের লেখাপড়া করাতে পারে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক থাকে সেটাকে বলে উন্নয়ন। এমন উন্নয়ন করেছেন যে, হাসপাতালে বেড নাই। একটা হাসপাতালে বানিয়েছেন কোবিডের সময়ে ওইটা রাত্রের মধ্যে উদাও হয়ে গেলো, হাসপাতাল নাই। ব্যবসা আবার নতুন করে নতুন কমিশন পাবে। এটা তো কমিশন এজেন্ট সরকার। এটা তো জনগণের সরকার নয়।’