ঢাকা ০৬:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

থাইল্যান্ডে সিকদার পরিবারের ৭ কোম্পানির সম্পদ অবরুদ্ধের আদেশ

  • আপডেট সময় : ০৯:০১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই রিক হক সিকদার -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের তিন সন্তান রন হক সিকদার, রিক হক সিকদার ও পারভীন হক সিকদারের নামে থাইল্যান্ডের সাত কোম্পানিতে থাকা বিনিয়োগ অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন। থাইল্যান্ডে সিকদার পরিবারের এসব কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ ৩৫ কোটি ৩০ লাখ থাই বাথ। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান তা জব্দের আবদেন করেন।

আবেদনে বলা হয়, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার, তার পরিবার ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সরকারি অর্থ তছরুপ, ঘুষ গ্রহণ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় সাত সদস্যের একটি যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুদক। তদন্ত চলাকালে অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা বিদেশে অবস্থিত তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। এতে তদন্ত প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের স্বার্থে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সিকদার পরিবারের মালিকানাধীন এসব সম্পদ অবরুদ্ধ করা আবশ্যক।

সিকদার পরিবারের গড়া সিকদার গ্রুপের ব্যবসা ছড়িয়ে আছে ব্যাংক ও বীমা, বিদ্যুৎ, ইকনোমিক জোন, এভিয়েশন, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মত নানা খাতে। সহযোগী কোম্পানির মধ্যে রয়েছে পাওয়ার প্যাক পোর্টস, পাওয়ার প্যাক ইকনোমিক জোন, সিকদার ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস, সিকদার রিয়েল এস্টেট ও মাল্টিপ্লেক্স হোল্ডিংস।

জয়নুল হক সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মারা যান। তার ছেলে রন হক ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে ভেঙে দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে ২০২৪ সালের এপ্রিলে রন হক সিকদার ও তার ভাই রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে দুটি মামলা করে দুদক। রন হক এর আগে গ্রেফতারও হয়েছিলেন।
রন ও রিকের বিরুদ্ধে দুদকের অর্থপাচারের মামলা ছাড়াও কোভিড মহামারীর সময়কার প্রণোদনার ঋণের ৪০৪ কোটি টাকা আত্মসাতে সহায়তার অভিযোগে সিকদার পরিবারের চার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। চলতি বছরের ২৫ মে করা সেই মামলায় সিকদার পরিবারের মনোয়ারা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারকে আসামি করা হয়। তারা ওই সময় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। এরপর গত ১০ সেপ্টেম্বর আগস্ট ‘জালিয়াতির’ মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সিকদার পরিবারের ছয় সদস্য এবং এস আলম গ্রুপের মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এর আগে গত ২১ এপ্রিল পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পে রন হক সিকদারের ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ দেয় আদালত।

সানা/আপ্র/২৯/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

থাইল্যান্ডে সিকদার পরিবারের ৭ কোম্পানির সম্পদ অবরুদ্ধের আদেশ

আপডেট সময় : ০৯:০১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের তিন সন্তান রন হক সিকদার, রিক হক সিকদার ও পারভীন হক সিকদারের নামে থাইল্যান্ডের সাত কোম্পানিতে থাকা বিনিয়োগ অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন। থাইল্যান্ডে সিকদার পরিবারের এসব কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ ৩৫ কোটি ৩০ লাখ থাই বাথ। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান তা জব্দের আবদেন করেন।

আবেদনে বলা হয়, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার, তার পরিবার ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সরকারি অর্থ তছরুপ, ঘুষ গ্রহণ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় সাত সদস্যের একটি যৌথ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুদক। তদন্ত চলাকালে অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিরা বিদেশে অবস্থিত তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। এতে তদন্ত প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের স্বার্থে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সিকদার পরিবারের মালিকানাধীন এসব সম্পদ অবরুদ্ধ করা আবশ্যক।

সিকদার পরিবারের গড়া সিকদার গ্রুপের ব্যবসা ছড়িয়ে আছে ব্যাংক ও বীমা, বিদ্যুৎ, ইকনোমিক জোন, এভিয়েশন, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মত নানা খাতে। সহযোগী কোম্পানির মধ্যে রয়েছে পাওয়ার প্যাক পোর্টস, পাওয়ার প্যাক ইকনোমিক জোন, সিকদার ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস, সিকদার রিয়েল এস্টেট ও মাল্টিপ্লেক্স হোল্ডিংস।

জয়নুল হক সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মারা যান। তার ছেলে রন হক ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে ভেঙে দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে ২০২৪ সালের এপ্রিলে রন হক সিকদার ও তার ভাই রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে দুটি মামলা করে দুদক। রন হক এর আগে গ্রেফতারও হয়েছিলেন।
রন ও রিকের বিরুদ্ধে দুদকের অর্থপাচারের মামলা ছাড়াও কোভিড মহামারীর সময়কার প্রণোদনার ঋণের ৪০৪ কোটি টাকা আত্মসাতে সহায়তার অভিযোগে সিকদার পরিবারের চার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। চলতি বছরের ২৫ মে করা সেই মামলায় সিকদার পরিবারের মনোয়ারা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারকে আসামি করা হয়। তারা ওই সময় ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। এরপর গত ১০ সেপ্টেম্বর আগস্ট ‘জালিয়াতির’ মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ১৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সিকদার পরিবারের ছয় সদস্য এবং এস আলম গ্রুপের মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এর আগে গত ২১ এপ্রিল পূর্বাচলে নতুন শহর প্রকল্পে রন হক সিকদারের ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ দেয় আদালত।

সানা/আপ্র/২৯/০৯/২০২৫