ঢাকা ০৬:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

তেজোদ্দীপ্ত ব্যাটিংয়ে অনন্য মুশফিক

  • আপডেট সময় : ০১:৫৫:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩
  • ৭১ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে রানের ফোয়ারা। দীর্ঘদিন বাজে সময় কাটানোর পর স্বপ্নের মতো কাটছে গত কয়েক ইনিংস। ইংলিশদের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। নান্দনিক ব্যাটিংয়ের ধারা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও ধরে রেখেছেন। আগের ম্যাচে ৪৪ রানে আউট হলেও রবিবার দ্রুততম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে জানান দিয়েছেন তিনি ফুরিয়ে যাননি। আগের ৬৩ বলে সাকিব আল হাসানের করা দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙে মুশফিক ৬০ বলে দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন।
শেষ বলে মুশফিকের সেঞ্চুরি পেতে প্রয়োজন ছিল এক রান। সিঙ্গেল নিয়ে পপিংক্রিজে পৌঁছেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় সেঞ্চুরি উদযাপন করলেন। বাতাসে মুঠো করা হাত ছুড়ে মেরে লাফ দিলেন। ডানহাতে ব্যাট নিয়ে কয়েকবার হাতও ঘোরালেন। এরপর ব্যাট-গ্লাভস ফেলে শুকরিয়া আদায় করলেন সৃষ্টিকর্তার কাছে। মুশফিকের এই দ্রুততম সেঞ্চুরি পাওয়া নিয়ে বেশ নাটকীয়তা হয়েছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। একটা সময় মনে হচ্ছিল সহজেই দ্রুততম সেঞ্চুরি পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা শেষেই মিললো মুশফিকের দ্রুততম সেঞ্চুরি। এমনিতেই আগের ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি মিস হয়েছে। সাকিব আল হাসান ৯৩ রানে আউট হওয়ার পর সুযোগ ছিল তাওহিদ হৃদয়ের সেঞ্চুরির। কিন্তু অভিষিক্ত হৃদয়ও আউট হয়েছেন ৯২ রান।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে লিটন ৭০ রানে আউট হওয়ার পর নাজমুল হোসেন শান্ত ৭১ রানে আউট হন। হৃদয়ও ফিরেছেন ৪৯ রানে। সবমিলিয়ে তাই মুশফিকের মাইলফলক নিয়ে দুশ্চিন্তা তো ছিলই। বাংলাদেশের ইনিংসের বাকি দুই ওভার। মুশফিকের রান ৮৭। দ্রুততম সেঞ্চুরি পেতে ১২ বলে মুশফিকের ১৩ রান সহজ লক্ষ্যই হওয়ার কথা। কিন্তু ৪৯তম ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরিতো বটেই, সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা জাগে। ওই ওভারে মুশফিক নিতে পারেন মোটে ৪ রান। ফলে শেষ ওভারে ৯ রান লক্ষ্য দাঁড়ায়। ইয়াসির আলীর প্রথম বলে আউটের পর তাসকিন আহমেদ ক্রিজে নেমে মুশফিককে স্ট্রাইক দেন। বাকি ৪ বলে দুটি ডাবলস, একটি সিঙ্গেল এবং একটি চারে মুশফিক দ্রুততম সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেন।
২০০৯ সালে বুলাওয়েতে ৬৩ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব। এতদিন ধরেই ওটাই ছিল বাংলাদেশের কোনও ব্যাটারের দ্রুততম সেঞ্চুরি। সাড়ে ১৪ বছর সাকিব রেকর্ডটি নিজের করে রাখলেও সোমবার মুশফিকের কাছে হারাতে হয়েছে। মুশফিক ৬০ বলে সেঞ্চুরি তুলে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক। পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ৭৭ বলে করা সেঞ্চুরিটি এতদিন ছিল মুশফিকের দ্রুততম। ১৬ ইনিংস পর পেলেন শতকের দেখা।
দ্রুততম সেঞ্চুরির আগে আরও একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মুশফিক। সোমবার ম্যাচে নামার আগে ৭ হাজার থেকে ৫৫ রান দূরে ছিলেন। কুর্টিস ক্যাম্ফারের বলে মিড-অফে চার মেরে তৃতীয় বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৭ হাজার রানের চূড়ায় পৌঁছান উইকেটকিপার এই ব্যাটার। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডে ফরম্যাটে সবার আগে ৭ হাজার রানের মাইলফলকে নাম লেখান তামিম ইকবাল। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের রান ৮ হাজার ১৪৬। তামিম ৭ হাজার রানে পৌঁছেছিলেন ২০৪ ইনিংসে। সাকিবের লেগেছে ২১৬ ইনিংস। মুশফিকের লাগলো ২২৯ ইনিংস। এই ফরম্যাটে সবমিলিয়ে ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৩ হাফ সেঞ্চুরিতে মুশফিকের রান ৭ হাজার ৪৫। সেঞ্চুরির সংখ্যায় সাকিবকে ছুঁয়েছেন মুশফিক। সবচেয়ে বেশি ১৪ সেঞ্চুরি তামিমের।
বাংলাদেশের দ্রুততম ৫ সেঞ্চুরি: মুশফিকুর রহিম (৬০ বল), প্রতিপক্ষ– আয়ারল্যান্ড (সিলেট)। সাকিব আল হাসান (৬৩ বল), প্রতিপক্ষ- জিম্বাবুয়ে (বুলাওয়ে)ভ সাকিব আল হাসান (৬৮ বল), প্রতিপক্ষ- জিম্বাবুয়ে (মিরপুর)ভ মুশফিকুর রহিম (৭৭ বল), প্রতিপক্ষ- পাকিস্তান (মিরপুর)। মেহেদী হাসান মিরাজ (৮৩ বল), প্রতিপক্ষ- ভারত (মিরপুর)।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ড. ইউনূসকে ডি-লিট ডিগ্রি দিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

তেজোদ্দীপ্ত ব্যাটিংয়ে অনন্য মুশফিক

আপডেট সময় : ০১:৫৫:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩

ক্রীড়া ডেস্ক: মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে রানের ফোয়ারা। দীর্ঘদিন বাজে সময় কাটানোর পর স্বপ্নের মতো কাটছে গত কয়েক ইনিংস। ইংলিশদের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। নান্দনিক ব্যাটিংয়ের ধারা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও ধরে রেখেছেন। আগের ম্যাচে ৪৪ রানে আউট হলেও রবিবার দ্রুততম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে জানান দিয়েছেন তিনি ফুরিয়ে যাননি। আগের ৬৩ বলে সাকিব আল হাসানের করা দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙে মুশফিক ৬০ বলে দ্রুততম সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন।
শেষ বলে মুশফিকের সেঞ্চুরি পেতে প্রয়োজন ছিল এক রান। সিঙ্গেল নিয়ে পপিংক্রিজে পৌঁছেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় সেঞ্চুরি উদযাপন করলেন। বাতাসে মুঠো করা হাত ছুড়ে মেরে লাফ দিলেন। ডানহাতে ব্যাট নিয়ে কয়েকবার হাতও ঘোরালেন। এরপর ব্যাট-গ্লাভস ফেলে শুকরিয়া আদায় করলেন সৃষ্টিকর্তার কাছে। মুশফিকের এই দ্রুততম সেঞ্চুরি পাওয়া নিয়ে বেশ নাটকীয়তা হয়েছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। একটা সময় মনে হচ্ছিল সহজেই দ্রুততম সেঞ্চুরি পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা শেষেই মিললো মুশফিকের দ্রুততম সেঞ্চুরি। এমনিতেই আগের ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি মিস হয়েছে। সাকিব আল হাসান ৯৩ রানে আউট হওয়ার পর সুযোগ ছিল তাওহিদ হৃদয়ের সেঞ্চুরির। কিন্তু অভিষিক্ত হৃদয়ও আউট হয়েছেন ৯২ রান।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে লিটন ৭০ রানে আউট হওয়ার পর নাজমুল হোসেন শান্ত ৭১ রানে আউট হন। হৃদয়ও ফিরেছেন ৪৯ রানে। সবমিলিয়ে তাই মুশফিকের মাইলফলক নিয়ে দুশ্চিন্তা তো ছিলই। বাংলাদেশের ইনিংসের বাকি দুই ওভার। মুশফিকের রান ৮৭। দ্রুততম সেঞ্চুরি পেতে ১২ বলে মুশফিকের ১৩ রান সহজ লক্ষ্যই হওয়ার কথা। কিন্তু ৪৯তম ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরিতো বটেই, সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা জাগে। ওই ওভারে মুশফিক নিতে পারেন মোটে ৪ রান। ফলে শেষ ওভারে ৯ রান লক্ষ্য দাঁড়ায়। ইয়াসির আলীর প্রথম বলে আউটের পর তাসকিন আহমেদ ক্রিজে নেমে মুশফিককে স্ট্রাইক দেন। বাকি ৪ বলে দুটি ডাবলস, একটি সিঙ্গেল এবং একটি চারে মুশফিক দ্রুততম সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেন।
২০০৯ সালে বুলাওয়েতে ৬৩ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব। এতদিন ধরেই ওটাই ছিল বাংলাদেশের কোনও ব্যাটারের দ্রুততম সেঞ্চুরি। সাড়ে ১৪ বছর সাকিব রেকর্ডটি নিজের করে রাখলেও সোমবার মুশফিকের কাছে হারাতে হয়েছে। মুশফিক ৬০ বলে সেঞ্চুরি তুলে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক। পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে ৭৭ বলে করা সেঞ্চুরিটি এতদিন ছিল মুশফিকের দ্রুততম। ১৬ ইনিংস পর পেলেন শতকের দেখা।
দ্রুততম সেঞ্চুরির আগে আরও একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মুশফিক। সোমবার ম্যাচে নামার আগে ৭ হাজার থেকে ৫৫ রান দূরে ছিলেন। কুর্টিস ক্যাম্ফারের বলে মিড-অফে চার মেরে তৃতীয় বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৭ হাজার রানের চূড়ায় পৌঁছান উইকেটকিপার এই ব্যাটার। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে ওয়ানডে ফরম্যাটে সবার আগে ৭ হাজার রানের মাইলফলকে নাম লেখান তামিম ইকবাল। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের রান ৮ হাজার ১৪৬। তামিম ৭ হাজার রানে পৌঁছেছিলেন ২০৪ ইনিংসে। সাকিবের লেগেছে ২১৬ ইনিংস। মুশফিকের লাগলো ২২৯ ইনিংস। এই ফরম্যাটে সবমিলিয়ে ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৩ হাফ সেঞ্চুরিতে মুশফিকের রান ৭ হাজার ৪৫। সেঞ্চুরির সংখ্যায় সাকিবকে ছুঁয়েছেন মুশফিক। সবচেয়ে বেশি ১৪ সেঞ্চুরি তামিমের।
বাংলাদেশের দ্রুততম ৫ সেঞ্চুরি: মুশফিকুর রহিম (৬০ বল), প্রতিপক্ষ– আয়ারল্যান্ড (সিলেট)। সাকিব আল হাসান (৬৩ বল), প্রতিপক্ষ- জিম্বাবুয়ে (বুলাওয়ে)ভ সাকিব আল হাসান (৬৮ বল), প্রতিপক্ষ- জিম্বাবুয়ে (মিরপুর)ভ মুশফিকুর রহিম (৭৭ বল), প্রতিপক্ষ- পাকিস্তান (মিরপুর)। মেহেদী হাসান মিরাজ (৮৩ বল), প্রতিপক্ষ- ভারত (মিরপুর)।