ঢাকা ১০:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

তেঁতুলতলায় খেলছে শিশুরা, চলছে ঈদ জামাতের আয়োজন

  • আপডেট সময় : ০৯:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২
  • ৯৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : তেঁতুলতলা মাঠে ভরদুপুরেও শিশুদের খেলতে দেখা গেছে। পুলিশের তোলা সীমানা প্রাচীরের মধ্যেই শিশুদের কেউ ক্রিকেট, কেউ ফুটবল খেলা নিয়ে ব্যস্ত। তাদের পাশেই একজন বয়স্ক মানুষকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন আরও কয়েকজন তরুণ। কাছে গিয়ে জানা গেলো, তারা ঈদের জামাত আয়োজনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন।
কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে গতকাল শুক্রবার বেলা ৩টার দিকের চিত্র এটি। কয়েকজন শিশুকে দেখা গেলো বড় তেঁতুলগাছটির মগডালে, তারা গাছ থেকে তেঁতুল ছিঁড়ে নিচে ফেলছেন। গাছটির নামেই মাঠের নাম হয়েছে তেঁতুলতলার মাঠ।
মাঠের দক্ষিণ পাশে শিশুরা যখন ক্রিকেট খেলছিল, তখন মাঠে থাকা আব্দুল্লাহ আল মাগরীব নামে এক তরুণের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তার বাসা এই মাঠের পূর্ব পাশে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর এখানে ঈদের নামাজ আদায় করতাম। তবে করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদের জামাত হয়নি।’
মাঠের পশ্চিম পাশে দেয়াল ঘেঁষে কংক্রিটের তৈরি মিম্বর দেখিয়ে মাগরীব বলেন, ‘নামাজের এই মিম্বরটি অনেক আগেই করা হয়েছে। এলাকার মানুষ ঈদ জামাতে এখানে অংশ নেন। এ বছরও ঈদের জামাতের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
একজন বয়স্ক মানুষকে দেখা গেলো বিভিন্ন জনকে নির্দেশনা দিতে। প্যান্ডেল কত বড় হবে, শামিয়ানা কত বড় হবে—সবকিছু বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এগিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বললে জানান, তার নাম কামরুজ্জামান। ছোটবেলায় তারা এই এলাকায় এসেছেন। এখন তার বয়স আশি ছুঁই ছুঁই। জায়গাটি নিয়ে তিনি অনেক স্মৃতির কথা বললেন। জমিটি কার ছিল, কীভাবে তারা এখান থেকে চলে গেছেন—এসবই। এরপর থেকে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
কামরুজ্জামানের বাড়ি তেঁতুলতলা মাঠের পূর্ব পাশে। বাড়ির পাশেই একটি মসজিদ করেছেন। মসজিদের জায়গা তার বাবাই দিয়েছেন। কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এলাকার মানুষের জন্য একটি মসজিদ করে দিয়েছি। সেখানে সবাই নামাজ আদায় করেন। ঈদের জামাত এই মাঠে হয়। এবারও এখানে হবে। মাঠটি পুলিশ নিয়ে নিয়েছে, তবে এলাকাবাসীকে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। আমরা এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
রাসেল নামে এক শিশুর সঙ্গে কথা হয় মাঠে। প্রতিদিন তারা দলবেঁধে এখানে খেলতে আসে। মাঠে থানা না হওয়ায় তারা খুশি। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাঠে থানা নির্মাণ করতে নিষেধ করার পর ওই এলাকার মানুষের মধ্যেও আনন্দ দেখা গেছে। মাঠটির সড়কের পাশ ঘেঁষে পুলিশের তোলা নতুন সীমানা দেয়ালটি এখনও রয়েছে। আন্দোলনের সময় সাধারণ মানুষের রোপণ করা গাছগুলো তাজা হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তেঁতুলতলায় খেলছে শিশুরা, চলছে ঈদ জামাতের আয়োজন

আপডেট সময় : ০৯:০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : তেঁতুলতলা মাঠে ভরদুপুরেও শিশুদের খেলতে দেখা গেছে। পুলিশের তোলা সীমানা প্রাচীরের মধ্যেই শিশুদের কেউ ক্রিকেট, কেউ ফুটবল খেলা নিয়ে ব্যস্ত। তাদের পাশেই একজন বয়স্ক মানুষকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন আরও কয়েকজন তরুণ। কাছে গিয়ে জানা গেলো, তারা ঈদের জামাত আয়োজনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন।
কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে গতকাল শুক্রবার বেলা ৩টার দিকের চিত্র এটি। কয়েকজন শিশুকে দেখা গেলো বড় তেঁতুলগাছটির মগডালে, তারা গাছ থেকে তেঁতুল ছিঁড়ে নিচে ফেলছেন। গাছটির নামেই মাঠের নাম হয়েছে তেঁতুলতলার মাঠ।
মাঠের দক্ষিণ পাশে শিশুরা যখন ক্রিকেট খেলছিল, তখন মাঠে থাকা আব্দুল্লাহ আল মাগরীব নামে এক তরুণের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তার বাসা এই মাঠের পূর্ব পাশে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর এখানে ঈদের নামাজ আদায় করতাম। তবে করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদের জামাত হয়নি।’
মাঠের পশ্চিম পাশে দেয়াল ঘেঁষে কংক্রিটের তৈরি মিম্বর দেখিয়ে মাগরীব বলেন, ‘নামাজের এই মিম্বরটি অনেক আগেই করা হয়েছে। এলাকার মানুষ ঈদ জামাতে এখানে অংশ নেন। এ বছরও ঈদের জামাতের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
একজন বয়স্ক মানুষকে দেখা গেলো বিভিন্ন জনকে নির্দেশনা দিতে। প্যান্ডেল কত বড় হবে, শামিয়ানা কত বড় হবে—সবকিছু বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এগিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বললে জানান, তার নাম কামরুজ্জামান। ছোটবেলায় তারা এই এলাকায় এসেছেন। এখন তার বয়স আশি ছুঁই ছুঁই। জায়গাটি নিয়ে তিনি অনেক স্মৃতির কথা বললেন। জমিটি কার ছিল, কীভাবে তারা এখান থেকে চলে গেছেন—এসবই। এরপর থেকে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
কামরুজ্জামানের বাড়ি তেঁতুলতলা মাঠের পূর্ব পাশে। বাড়ির পাশেই একটি মসজিদ করেছেন। মসজিদের জায়গা তার বাবাই দিয়েছেন। কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এলাকার মানুষের জন্য একটি মসজিদ করে দিয়েছি। সেখানে সবাই নামাজ আদায় করেন। ঈদের জামাত এই মাঠে হয়। এবারও এখানে হবে। মাঠটি পুলিশ নিয়ে নিয়েছে, তবে এলাকাবাসীকে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। আমরা এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
রাসেল নামে এক শিশুর সঙ্গে কথা হয় মাঠে। প্রতিদিন তারা দলবেঁধে এখানে খেলতে আসে। মাঠে থানা না হওয়ায় তারা খুশি। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাঠে থানা নির্মাণ করতে নিষেধ করার পর ওই এলাকার মানুষের মধ্যেও আনন্দ দেখা গেছে। মাঠটির সড়কের পাশ ঘেঁষে পুলিশের তোলা নতুন সীমানা দেয়ালটি এখনও রয়েছে। আন্দোলনের সময় সাধারণ মানুষের রোপণ করা গাছগুলো তাজা হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে।