ঢাকা ১০:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে পরীমনি কারাগারে

  • আপডেট সময় : ০১:৪৩:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অগাস্ট ২০২১
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাদক আইনের মামলায় তৃতীয় দফায় এক দিনের রিমান্ড শেষে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বনানী থানার এ মামলায় পরীমনিকে গতকাল শনিবার আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার মহানগর হাকিম আশেক ইমাম এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা এদিন তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীমনিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছিলেন।
আবেদনে তিনি বলেন, “আসামির কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। এসব তথ্য যাচাইয়ের স্বার্থে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।”
তবে পরীমনির জামিনের জন্য নতুন কোনো আবেদন ছিল না। তাকে যেন আদালতে তোলা হয় এবং তার উপস্থিতিতে শুনানি করা হয়, সেই আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, “পরীমনির অসুস্থ রয়েছে। তার সাথে দেখা করতে দেওয়া হয় না। কোনো আইনজীবীর সাথে তাকে কথা বলতে দেওয়া হয় না। আমরা মামলার বিষয়ে আসামির সাথে আলোচনা করতে চাই।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু এ সময় বলেন, “আসামির সাথে দেখা করতে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। যখন আসামি বের হবে তখন ট্রায়াল স্টেজে কথা বললেন। এর আগে পরীমনির সাথে তার নানাকে কথা বলতে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে।”
এ সময় বিচারক আসামিপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা কী কথা বলতে চান?” মজিবুর রহমান বলেন, “আমরা আইনগত বিষয়ে কথা বলতে চাই। প্রয়োজনে আপনি সিএমএম হাজতখানায় কথা বলার সুযোগ করে দেন। ওখানে তো নিরাপদ জায়গা।” এরপর বিচারক নথী পর্যালোচনায় আদেশ দেবেন বলে জানান। আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান।
খুব কষ্ট হচ্ছে, আমি তো পাগল হয়ে যাব: ক্ষুব্ধ পরীমনি : ‘কেন আমার জামিন আবেদন করলেন না। আমি তো পাগল হয়ে যাব। আপনারা জামিন চান, আপনারা আমার সঙ্গে কী কথা বলবেন? আপনারা বুঝতেছেন, আমার কী কষ্ট হচ্ছে?’ আইনজীবীর উদ্দেশে কথাগুলো বলেছেন পরীমনি। কথা বলার সুযোগ পেয়ে আইনজীবীর উদ্দেশে এভাবেই কথাগুলো বলেন পরীমনি। সরেজমিনে দেখা যায়, বিচারক এজলাসকক্ষ ত্যাগ করার পর পরীমনির কাছে যান তাঁর আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত। তখন তাঁকে দেখে পরীমনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে এসব বলেন।
শুনানি শেষে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পরীমনিকে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমরা বারবার বলছি, পরীমনি অসুস্থ। শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত পরীমনি আমাকে বলেছেন, তিনি পাগল হয়ে যাবেন।’
গতকাল শনিবার বেলা ১১ টা ৪৭ মিনিটে তাকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানায় আনে সিআইডি। আর শুনানি শেষে তাকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
গত ৪ আগস্ট রাতে ঢাকার বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরদিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে এ মামলা করা হয়। জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘মদ এবং আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়। এ মামলায় এর আগে দুই দফায় ছয় দিন রিমান্ডে নিয়ে পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে গত ১৩ অগাস্ট পরীমনিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান গত ১৬ আগস্ট আবারও জামিনের আবেদন করলে আদালত ১৮ অগাস্ট শুনানির দিন রেখেছিল। কিন্তু এর মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তাফা নতুন করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ওইদিন জামিন শুনানি আর হয়নি।
ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস আসামির উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রিমান্ড শুনানির সিদ্ধান্ত দিলে একই সঙ্গে নতুন করে জামিন আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবী মজিবুর রহমান। এরপর গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম জামিন আবেদন নাকচ করে পরীমনিকে আরও এক দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে পরীমনি কারাগারে

আপডেট সময় : ০১:৪৩:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাদক আইনের মামলায় তৃতীয় দফায় এক দিনের রিমান্ড শেষে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বনানী থানার এ মামলায় পরীমনিকে গতকাল শনিবার আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার মহানগর হাকিম আশেক ইমাম এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা এদিন তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরীমনিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছিলেন।
আবেদনে তিনি বলেন, “আসামির কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। এসব তথ্য যাচাইয়ের স্বার্থে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।”
তবে পরীমনির জামিনের জন্য নতুন কোনো আবেদন ছিল না। তাকে যেন আদালতে তোলা হয় এবং তার উপস্থিতিতে শুনানি করা হয়, সেই আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, “পরীমনির অসুস্থ রয়েছে। তার সাথে দেখা করতে দেওয়া হয় না। কোনো আইনজীবীর সাথে তাকে কথা বলতে দেওয়া হয় না। আমরা মামলার বিষয়ে আসামির সাথে আলোচনা করতে চাই।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু এ সময় বলেন, “আসামির সাথে দেখা করতে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। যখন আসামি বের হবে তখন ট্রায়াল স্টেজে কথা বললেন। এর আগে পরীমনির সাথে তার নানাকে কথা বলতে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে।”
এ সময় বিচারক আসামিপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা কী কথা বলতে চান?” মজিবুর রহমান বলেন, “আমরা আইনগত বিষয়ে কথা বলতে চাই। প্রয়োজনে আপনি সিএমএম হাজতখানায় কথা বলার সুযোগ করে দেন। ওখানে তো নিরাপদ জায়গা।” এরপর বিচারক নথী পর্যালোচনায় আদেশ দেবেন বলে জানান। আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান।
খুব কষ্ট হচ্ছে, আমি তো পাগল হয়ে যাব: ক্ষুব্ধ পরীমনি : ‘কেন আমার জামিন আবেদন করলেন না। আমি তো পাগল হয়ে যাব। আপনারা জামিন চান, আপনারা আমার সঙ্গে কী কথা বলবেন? আপনারা বুঝতেছেন, আমার কী কষ্ট হচ্ছে?’ আইনজীবীর উদ্দেশে কথাগুলো বলেছেন পরীমনি। কথা বলার সুযোগ পেয়ে আইনজীবীর উদ্দেশে এভাবেই কথাগুলো বলেন পরীমনি। সরেজমিনে দেখা যায়, বিচারক এজলাসকক্ষ ত্যাগ করার পর পরীমনির কাছে যান তাঁর আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত। তখন তাঁকে দেখে পরীমনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে এসব বলেন।
শুনানি শেষে পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘পরীমনিকে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমরা বারবার বলছি, পরীমনি অসুস্থ। শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত পরীমনি আমাকে বলেছেন, তিনি পাগল হয়ে যাবেন।’
গতকাল শনিবার বেলা ১১ টা ৪৭ মিনিটে তাকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানায় আনে সিআইডি। আর শুনানি শেষে তাকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
গত ৪ আগস্ট রাতে ঢাকার বনানীতে পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরদিন তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক আইনে এ মামলা করা হয়। জব্দ তালিকায় পরীমনির বাসা থেকে ‘মদ এবং আইস ও এলএসডির মতো মাদকদ্রব্য’ উদ্ধারের কথা বলা হয়। এ মামলায় এর আগে দুই দফায় ছয় দিন রিমান্ডে নিয়ে পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে গত ১৩ অগাস্ট পরীমনিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান গত ১৬ আগস্ট আবারও জামিনের আবেদন করলে আদালত ১৮ অগাস্ট শুনানির দিন রেখেছিল। কিন্তু এর মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তাফা নতুন করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ওইদিন জামিন শুনানি আর হয়নি।
ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস আসামির উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রিমান্ড শুনানির সিদ্ধান্ত দিলে একই সঙ্গে নতুন করে জামিন আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবী মজিবুর রহমান। এরপর গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম জামিন আবেদন নাকচ করে পরীমনিকে আরও এক দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।