ঢাকা ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

তুরস্কের শহরে লাশের গন্ধ, মৃত্যু বেড়ে ২৪ হাজার

  • আপডেট সময় : ০২:৩৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৬১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ হাজারে পৌঁছেছে। শুধু তুরস্কেই নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজার ৬৬৫ হয়েছে বলে দেশটির দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) জানিয়েছে। আর ভূমিকম্পে সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে তিন হাজারের বেশি হয়েছে। এএফএডি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রায় ৯৩ হাজার ক্ষতিগ্রস্তকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ তৎপরতায় ১ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি সদস্য সম্পৃক্ত রয়েছে। এদিকে তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরের বাতাসে লাশের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে বলে সেখানে সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত আল-জাজিরার প্রতিবেদক রেসুল সরদার জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সর্বত্র লাশের গন্ধ পাচ্ছি। কয়েকজনের মৃতদেহ বের করতে দেখেছি। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।’ ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত কাউকে পাওয়া যায় কি না, সে জন্য উদ্ধারকর্মীরা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে রেসুল সরদার বলেন, কাউকে জীবিত পাওয়া গেলে তা হবে ‘অলৌকিক ঘটনা’। এই সাংবাদিক বলেন, এখানকার উদ্ধারকর্মীরা জানেন তাঁদের হাতে আর সময় নেই। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষের জরুরিভাবে খাবার দরকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির হিসাবে, শুধু সিরিয়াতেই ৫৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গত শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এর সিরিয়া প্রতিনিধি শিভাঙ্ক ধানপালা বলেছেন, দেশটিতে ৫৩ লাখ মানুষ ভূমিকম্পে গৃহহীন হয়ে পড়তে পারে। তাছাড়া এক যুগের বেশি সময় ধরে দেশটিতে যুদ্ধ চলছে। আগেই সিরিয়ায় লাখ লাখ মানুষ বাড়ি-ঘর হারিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিরিয়ায় সংকটের মধ্যেই আরেক সংকট শুরু হয়েছে। যুদ্ধ, অর্থনৈতিক সংকট, করোনা, বৈরী আবহওয়া এবং সবশেষ ভূমিকম্প দেশটিতে বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পেরিয়ে গেছে পাঁচদিন। ঘণ্টার হিসাবে ১২৫’র বেশি। তাই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা লোকদের জীবিত উদ্ধারের আশা প্রায় ফুরিয়েই এসেছে। অথচ এখনো নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ। তাদের উদ্ধারে আরও সময় দরকার, যে জিনিসটা কারও হাতেই নেই। তাতে সময়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছেন উদ্ধারকারীরা। আর জিতে যাচ্ছে মৃত্যু। গতকাল শনিবার (১১ ফেব্রুয়রি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, গত সোমবারের প্রলয়ংকরী ওই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে উদ্ধারকারীরা আটকেপড়া লোকদের উদ্ধারে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তুর্কি কর্তৃপক্ষ এবং সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের সবশেষ তথ্যমতে, দেশ দুটিতে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ৪৫৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ। এছাড়া, কেবল তুরস্কেই আহত হয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি লোক।
১২৯ ঘণ্টা পর এক পরিবারের সবাইকে জীবিত উদ্ধার: তুরস্কে উদ্ধারকারী দলগুলো ১২৯ ঘণ্টা পর পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। ওই পরিবারটি পাঁচ দিন ধরে তাদের ধসে পড়া বাড়িতে ছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হ্যাবারতুর্ক জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা প্রথমে গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগ শহরে ধ্বংসাবশেষের ঢিবি থেকে মা ও মেয়ে হাভা এবং ফাতমাগুল আসলানকে বের করে আনে। দলগুলো পরে শিশুদের বাবা হাসান আসলানের কাছে পৌঁছান। কিন্তু হাসান দাবি করেন, তার অন্য মেয়ে জেইনেপ এবং ছেলে সালটিক বুগরাকে আগে বাঁচাতে হবে। তারপর তিনি বের হয়ে আসবেন। শেষ পর্যন্ত উদ্ধারকারীরা জেইনেপ, সালটিক ও তাদের বাবাকে বের করে আনে উদ্ধারকারীরা। এসময় উদ্ধারকারীরা উল্লাস করে এবং ‘আল্লাহু আকবার’ বলে স্লোগান দেয়। ১২৯ ঘন্টা পরে নাটকীয় উদ্ধারের ফলে হিমাঙ্কের তাপমাত্রার মধ্যে শনিবার উদ্ধার হওয়া লোকের সংখ্যা কমপক্ষে নয়জনে পৌঁছেছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তুরস্কের শহরে লাশের গন্ধ, মৃত্যু বেড়ে ২৪ হাজার

আপডেট সময় : ০২:৩৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ হাজারে পৌঁছেছে। শুধু তুরস্কেই নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজার ৬৬৫ হয়েছে বলে দেশটির দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) জানিয়েছে। আর ভূমিকম্পে সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে তিন হাজারের বেশি হয়েছে। এএফএডি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রায় ৯৩ হাজার ক্ষতিগ্রস্তকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ তৎপরতায় ১ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি সদস্য সম্পৃক্ত রয়েছে। এদিকে তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরের বাতাসে লাশের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে বলে সেখানে সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত আল-জাজিরার প্রতিবেদক রেসুল সরদার জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সর্বত্র লাশের গন্ধ পাচ্ছি। কয়েকজনের মৃতদেহ বের করতে দেখেছি। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।’ ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিত কাউকে পাওয়া যায় কি না, সে জন্য উদ্ধারকর্মীরা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে রেসুল সরদার বলেন, কাউকে জীবিত পাওয়া গেলে তা হবে ‘অলৌকিক ঘটনা’। এই সাংবাদিক বলেন, এখানকার উদ্ধারকর্মীরা জানেন তাঁদের হাতে আর সময় নেই। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষের জরুরিভাবে খাবার দরকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির হিসাবে, শুধু সিরিয়াতেই ৫৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গত শুক্রবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এর সিরিয়া প্রতিনিধি শিভাঙ্ক ধানপালা বলেছেন, দেশটিতে ৫৩ লাখ মানুষ ভূমিকম্পে গৃহহীন হয়ে পড়তে পারে। তাছাড়া এক যুগের বেশি সময় ধরে দেশটিতে যুদ্ধ চলছে। আগেই সিরিয়ায় লাখ লাখ মানুষ বাড়ি-ঘর হারিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিরিয়ায় সংকটের মধ্যেই আরেক সংকট শুরু হয়েছে। যুদ্ধ, অর্থনৈতিক সংকট, করোনা, বৈরী আবহওয়া এবং সবশেষ ভূমিকম্প দেশটিতে বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পেরিয়ে গেছে পাঁচদিন। ঘণ্টার হিসাবে ১২৫’র বেশি। তাই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা লোকদের জীবিত উদ্ধারের আশা প্রায় ফুরিয়েই এসেছে। অথচ এখনো নিখোঁজ হাজার হাজার মানুষ। তাদের উদ্ধারে আরও সময় দরকার, যে জিনিসটা কারও হাতেই নেই। তাতে সময়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছেন উদ্ধারকারীরা। আর জিতে যাচ্ছে মৃত্যু। গতকাল শনিবার (১১ ফেব্রুয়রি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, গত সোমবারের প্রলয়ংকরী ওই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে উদ্ধারকারীরা আটকেপড়া লোকদের উদ্ধারে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তুর্কি কর্তৃপক্ষ এবং সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের সবশেষ তথ্যমতে, দেশ দুটিতে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ৪৫৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ। এছাড়া, কেবল তুরস্কেই আহত হয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি লোক।
১২৯ ঘণ্টা পর এক পরিবারের সবাইকে জীবিত উদ্ধার: তুরস্কে উদ্ধারকারী দলগুলো ১২৯ ঘণ্টা পর পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। ওই পরিবারটি পাঁচ দিন ধরে তাদের ধসে পড়া বাড়িতে ছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হ্যাবারতুর্ক জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা প্রথমে গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগ শহরে ধ্বংসাবশেষের ঢিবি থেকে মা ও মেয়ে হাভা এবং ফাতমাগুল আসলানকে বের করে আনে। দলগুলো পরে শিশুদের বাবা হাসান আসলানের কাছে পৌঁছান। কিন্তু হাসান দাবি করেন, তার অন্য মেয়ে জেইনেপ এবং ছেলে সালটিক বুগরাকে আগে বাঁচাতে হবে। তারপর তিনি বের হয়ে আসবেন। শেষ পর্যন্ত উদ্ধারকারীরা জেইনেপ, সালটিক ও তাদের বাবাকে বের করে আনে উদ্ধারকারীরা। এসময় উদ্ধারকারীরা উল্লাস করে এবং ‘আল্লাহু আকবার’ বলে স্লোগান দেয়। ১২৯ ঘন্টা পরে নাটকীয় উদ্ধারের ফলে হিমাঙ্কের তাপমাত্রার মধ্যে শনিবার উদ্ধার হওয়া লোকের সংখ্যা কমপক্ষে নয়জনে পৌঁছেছে।