নিজস্ব প্রতিবেদক : অপহৃত ভুক্তভোগী শিশু মো. আরাফাত আলী। তার বড় ভাই মহব্বত আলীর মুঠোফোনে একটি খুদে বার্তা আসে। তাতে লিখা থাকে ‘তুই খুব বড় একটা জিনিস হারাতে চলেছিস’। এভাবেই নড়াইলের মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশু আরাফাত আলীর মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেটিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় নাবিল ও মিলন হোসেন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
গতকাল বুধবার দুপুরে পিবিআইয়ের সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নিহত মো. আরাফাত আলী নড়াইল জেলার সদর থানার বোড়ামারা গ্রামের মো. ওবাইদুর রহমান শিকদারের ছেলে। সে পেড়লী দাখিল মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পিবিআই যশোর নড়াইলের একটি জিডি তদন্ত করতে গিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহৃত ভুক্তভোগী শিশু ভিকটিম আরাফাত আলীর লাশ উদ্ধার করে। পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিনের নেতৃত্ত্বে উপরিদর্শক (এসআই) স্নেহাশিস দাশ, এসআই ও ডিএম নূর জামালসহ যশোরের পিবিআইয়ের একটি চৌকস দল বুধবার ভোর পৌনে ছয়টার দিকে ১৮ বছরের শিশু অপরাধী নাবিল ও মিলন হোসেন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। এ সময়ে শিশু অপরাধী নাবিলের হেফাজত থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিহত আরাফাত আলী ১২ মার্চ সকাল নয়টার দিকে মাদ্রাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। ওইদিন বিকাল তিনটার দিকেও আরাফাত আলী বাড়িতে না আসায় তার বাবা-মাসহ নিকটাত্মীয় স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু তার কোন খবর না পেয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সদর থানার জিডি নম্বর-৫২৩। পরের আরাফাতের বড় ভাই মহব্বত আলীর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একটি খুদে বার্তা আসে। তারা লেখা ছিল ‘তুই খুব বড় একটা জিনিস হারাতে চলেছিস’।
১৪ মার্চ নিহত মো. আরাফাত আলীর পরিবারের সদস্যরা তাদের সন্তান উদ্ধারের জন্য জিডি কপি নিয়ে যশোরের পিবিআইয়ের এসপির কাছে একটি আবেদন করেন। তখন যশোরের পিবিআই বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করে। পিবিআইয়ের এসপি রেশমা শারমিনের সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় এসআই স্নেহাশিস দাশ ও এসআই ডিএম নূর জামালসহ একটি চৌকস দল বুধবার ভোর পৌনে ছয়টার দিকে নাবিল ও মিলন হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে, নড়াইলের বোড়ামারা গ্রামের মাহাবুরের বাঁশবাগান থেকে আরাফাত আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আরাফাতের বাবা মো. ওবাইদুর রহমান নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা করেন। গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, ১২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নাবিল ও মিলন হোসেন কাঠাল চুরির কথা বলে আরাফাত আলীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাদের বাড়ির কাছে মাহাবুরের বাঁশবাগানে নিয়ে হত্যা করে। পরে তারা আরাফাতের লাশ বাঁশ বাগানের মধ্যে বাঁশের পাতা দিয়ে ঢেকে রাখে। গ্রেপ্তারকৃত নাবিল নড়াইল জেলার সদর থানার বোড়ামারা গ্রামের তৌহিদুর রহমানের ছেলে আর মিলন হোসেন একই গ্রামের সাহিদুর রহমানের ছেলে।
তুই খুব বড় একটা জিনিস হারাতে চলেছিস….
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ