ঢাকা ০৪:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

তীব্র তাপপ্রবাহ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়

  • আপডেট সময় : ১২:৫২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
  • ৬৬ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে গত কয়েক দিন যাবত মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২২ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার জনপদ। রোদের তাপের কারণে হাঁসফাঁস অবস্থা। অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছে না। দিনমজুররা দুপুরের আগেই কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছেন বলে অধিকাংশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। তবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডে গরমজনিত রোগীর চাপ নেই। অন্যান্য সময়ের মতো স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. আতাউর রহমান। চলমান দাবদাহে সকল শ্রেণির মানুষকে সতর্ক করে পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। অপরদিকে, চলমান দাবদাহে ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী আরও কিছুদিন তীব্র দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমতাবস্থায় ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ নিয়ে টানা দুই দিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় রেকর্ড করা হলো। চলমান তাপপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে।
ডায়রিয়া-জ্বর-ঠান্ডা স্ট্রোকের প্রকোপ
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
নারায়ণগঞ্জে তীব্র গরমে ডায়রিয়া, জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, গলাব্যাথার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব রোগে আক্রান্তরা হাসপাতালে ভিড় করছেন। গতকাল বুধবার শহরের সদর জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) ও খানপুর ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তীব্র গরমে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন আক্রান্তরা। এদিকে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে স্যালাইনের সংকট রয়েছে বলে জানা গেছে। খানপুর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাশার জানান, আমাদের হাসপাতালে ডায়রিয়া তেমন নেই তবে ঠান্ডা জ্বরের প্রকোপ বেশি । ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্তরে এখানে আসছেন বেশি। এটা প্রতি বছর এ সময়ে বেড়ে থাকে। কোভিডের জন্য এরকমটা নয়। তবে আগে আক্রান্তরা দ্রুত সেরে উঠলেও এবার সময় লাগছে। আগে সপ্তাহের মত সময় লাগলেও এবার আক্রান্তদের সুস্থ হতে ১৫ দিনের মত লাগছে। তিনি এ অবস্থা থেকে বাঁচতে শহরবাসীকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, রোদে না যাওয়া, বাইরে ঘুরাফেরা না করা, প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা ও প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। বয়স্করা, শিশু, হার্টের রোগী, ডায়বেটিসের রোগীদের গরমে বাইরে যাওয়া একেবারেই নিষেধ কারণ হিটস্ট্রোক যেন না হয়। বাইরের খাবার যেন আমরা না খাই। হঠাৎ বৃষ্টি এলে ভিজবো এরকমটা যেন না হয় এতে জ্বর চলে আসে। চেষ্টা করবো ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে, পানি বেশি খেতে। বাইরে যেতে হলে ছাতা নিয়ে যাব অথবা মাথার উপরে একটা সুতি জামা কাপড় রাখবো। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান জানান, আমাদের সদর জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) ডায়রিয়া রোগী আসছে। আশঙ্কাজনক হারে বলা যাবেনা তবে একটু বেড়েছে। এ হাসপাতালে নিয়মিত ২শ থেকে ২৫০ টি করে স্যালাইন প্রতিদিন লাগছে। স্যালাইন নিয়ে আমরা একটু সংকটের মধ্যে আছি। এপ্রিল মাসে প্রতি বছর ডায়রিয়াটা বাড়ে, অন্যান্য বছরের মতই বাড়ছে। তিনি স্যালাইনের সংকটের বিষয়ে বলেন, তেমন সংকট নেই আমাদের নিয়মিত সরবরাহ আছে। আবার লাঙ্গলবন্দে আমাদের স্যালাইন লেগেছে সেখানে ডায়রিয়ার রোগী ছিল। সেখানে আমাদের ১০টি মেডিকেল টিম কাজ করেছে। জ্বর ঠান্ডার বিষয়ে তিনি বলেন, জ্বর ঠান্ডাও আছে। প্রচ- গরম, হিট স্ট্রোকের একটা প্রকোপ আছে তাই শহরবাসী অবশ্যই ঢিলেঢালা সাদা কাপড় পরিধাণ করবে, পর্যাপ্ত পানি খাবে এবং বিনা প্রয়োজনে বাইরে যাবেনা।
ঈশ্বরদীতে তীব্র তাপপ্রবাহ
ঈাবনা সংবাদদাতা
পাবনার ঈশ্বরদীতে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকাল বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, বিকেল ৩টায় ঈশ্বরদীতে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। উপজেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচদিন ধরে ঈশ্বরদীতে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ১৩ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ১৪ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি, ১৫ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও ১৬ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। টানা তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন নি¤œআয়ের মানুষ। রিকশা ও অটোচালকদের সড়কে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের ইয়ার্ডে কর্তব্যরত আনসার সদস্য ওয়াসিম বলেন, প্রচ- রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে ডিউটি করছি। গরমে ডিউটি করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। শহরের স্টেশন রোডের পথচারী খায়রুল ইসলাম কিরণ বলেন, জোহরের নামাজ পড়তে মসজিদের যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম। পথে রোদের তীব্রতা দেখে বাড়ি ফিরে গিয়ে আবার ছাতা নিয়ে এসেছি। সড়ক দিয়ে মনে হচ্ছে আগুন বের হচ্ছে। পৌর শহরের স্টেশন রোডে রিকশাচালক জহির উদ্দিন বলেন, তীব্র রোদে খুব গরম লাগছে। রাস্তায় রিকশা চালানো যাচ্ছে না। খুব কষ্ট হচ্ছে। ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির শ্রমিক আজাহার আলী বলেন, গরমে জীবনই চলে না। কাজ করা মুশকিল। তারপরও জীবিকার তাগিদে বের হয়েছি। ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণার অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, সপ্তাহজুড়ে ঈশ্বরদীতে তাপপ্রবাহ বিরাজমান। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তীব্র তাপপ্রবাহ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়

আপডেট সময় : ১২:৫২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে গত কয়েক দিন যাবত মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ২২ শতাংশ। যা চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার জনপদ। রোদের তাপের কারণে হাঁসফাঁস অবস্থা। অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছে না। দিনমজুররা দুপুরের আগেই কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছেন বলে অধিকাংশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। তবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডে গরমজনিত রোগীর চাপ নেই। অন্যান্য সময়ের মতো স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহা. আতাউর রহমান। চলমান দাবদাহে সকল শ্রেণির মানুষকে সতর্ক করে পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। অপরদিকে, চলমান দাবদাহে ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী আরও কিছুদিন তীব্র দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমতাবস্থায় ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ নিয়ে টানা দুই দিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় রেকর্ড করা হলো। চলমান তাপপ্রবাহ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে।
ডায়রিয়া-জ্বর-ঠান্ডা স্ট্রোকের প্রকোপ
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
নারায়ণগঞ্জে তীব্র গরমে ডায়রিয়া, জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, গলাব্যাথার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব রোগে আক্রান্তরা হাসপাতালে ভিড় করছেন। গতকাল বুধবার শহরের সদর জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) ও খানপুর ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তীব্র গরমে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন আক্রান্তরা। এদিকে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে স্যালাইনের সংকট রয়েছে বলে জানা গেছে। খানপুর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাশার জানান, আমাদের হাসপাতালে ডায়রিয়া তেমন নেই তবে ঠান্ডা জ্বরের প্রকোপ বেশি । ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্তরে এখানে আসছেন বেশি। এটা প্রতি বছর এ সময়ে বেড়ে থাকে। কোভিডের জন্য এরকমটা নয়। তবে আগে আক্রান্তরা দ্রুত সেরে উঠলেও এবার সময় লাগছে। আগে সপ্তাহের মত সময় লাগলেও এবার আক্রান্তদের সুস্থ হতে ১৫ দিনের মত লাগছে। তিনি এ অবস্থা থেকে বাঁচতে শহরবাসীকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, রোদে না যাওয়া, বাইরে ঘুরাফেরা না করা, প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা ও প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। বয়স্করা, শিশু, হার্টের রোগী, ডায়বেটিসের রোগীদের গরমে বাইরে যাওয়া একেবারেই নিষেধ কারণ হিটস্ট্রোক যেন না হয়। বাইরের খাবার যেন আমরা না খাই। হঠাৎ বৃষ্টি এলে ভিজবো এরকমটা যেন না হয় এতে জ্বর চলে আসে। চেষ্টা করবো ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে, পানি বেশি খেতে। বাইরে যেতে হলে ছাতা নিয়ে যাব অথবা মাথার উপরে একটা সুতি জামা কাপড় রাখবো। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান জানান, আমাদের সদর জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) ডায়রিয়া রোগী আসছে। আশঙ্কাজনক হারে বলা যাবেনা তবে একটু বেড়েছে। এ হাসপাতালে নিয়মিত ২শ থেকে ২৫০ টি করে স্যালাইন প্রতিদিন লাগছে। স্যালাইন নিয়ে আমরা একটু সংকটের মধ্যে আছি। এপ্রিল মাসে প্রতি বছর ডায়রিয়াটা বাড়ে, অন্যান্য বছরের মতই বাড়ছে। তিনি স্যালাইনের সংকটের বিষয়ে বলেন, তেমন সংকট নেই আমাদের নিয়মিত সরবরাহ আছে। আবার লাঙ্গলবন্দে আমাদের স্যালাইন লেগেছে সেখানে ডায়রিয়ার রোগী ছিল। সেখানে আমাদের ১০টি মেডিকেল টিম কাজ করেছে। জ্বর ঠান্ডার বিষয়ে তিনি বলেন, জ্বর ঠান্ডাও আছে। প্রচ- গরম, হিট স্ট্রোকের একটা প্রকোপ আছে তাই শহরবাসী অবশ্যই ঢিলেঢালা সাদা কাপড় পরিধাণ করবে, পর্যাপ্ত পানি খাবে এবং বিনা প্রয়োজনে বাইরে যাবেনা।
ঈশ্বরদীতে তীব্র তাপপ্রবাহ
ঈাবনা সংবাদদাতা
পাবনার ঈশ্বরদীতে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকাল বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, বিকেল ৩টায় ঈশ্বরদীতে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। উপজেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচদিন ধরে ঈশ্বরদীতে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ১৩ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ১৪ এপ্রিল ৩৯ ডিগ্রি, ১৫ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও ১৬ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। টানা তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন নি¤œআয়ের মানুষ। রিকশা ও অটোচালকদের সড়কে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের ইয়ার্ডে কর্তব্যরত আনসার সদস্য ওয়াসিম বলেন, প্রচ- রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে ডিউটি করছি। গরমে ডিউটি করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। শহরের স্টেশন রোডের পথচারী খায়রুল ইসলাম কিরণ বলেন, জোহরের নামাজ পড়তে মসজিদের যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম। পথে রোদের তীব্রতা দেখে বাড়ি ফিরে গিয়ে আবার ছাতা নিয়ে এসেছি। সড়ক দিয়ে মনে হচ্ছে আগুন বের হচ্ছে। পৌর শহরের স্টেশন রোডে রিকশাচালক জহির উদ্দিন বলেন, তীব্র রোদে খুব গরম লাগছে। রাস্তায় রিকশা চালানো যাচ্ছে না। খুব কষ্ট হচ্ছে। ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির শ্রমিক আজাহার আলী বলেন, গরমে জীবনই চলে না। কাজ করা মুশকিল। তারপরও জীবিকার তাগিদে বের হয়েছি। ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণার অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, সপ্তাহজুড়ে ঈশ্বরদীতে তাপপ্রবাহ বিরাজমান। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে।