ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

‘তীব্র তাপপ্রবাহ আর বিধ্বংসী বন্যা এখন নতুন বাস্তবতা’

  • আপডেট সময় : ১১:৩৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক : তীব্র তাপপ্রবাহ এবং বিধ্বংসী বন্যাসহ চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া এখন নতুন বাস্তবতা। এক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করেছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)। গত রবিবার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে ঐতিহাসিক জলবায়ু সম্মেলনের প্রথম দিন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আমাদের চোখের সামনেই যে ধরিত্রী বদলে যাচ্ছে প্রতিবেদনে সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধ্যাপক পেটেরি তালাস বলেন, চরমভাবাপন্ন ঘটনাগুলোই নতুন বাস্তবতা। জলবায়ু যে মানুষের কারণে পরিবর্তিত হচ্ছে, তার পর্বতসম বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে।
অধ্যাপক পেটেরি তালাস এই বছর দুনিয়াজুড়ে ঘটে যাওয়া কিছু চরম ঘটনার উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে:
ক্স গ্রীনল্যান্ড বরফের চূড়ায় প্রথমবারের মতো তুষারপাতের বদলে বৃষ্টি হয়েছে।
ক্স কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সংলগ্ন অংশে তাপপ্রবাহ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার একটি গ্রামে তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উন্নীত করেছে।
ক্স যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একাধিক তাপপ্রবাহের সময় ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে তাপমাত্রা ৫৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।
ক্স ইউরোপের কিছু অংশে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে কয়েক ডজন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং বিশাল অঙ্কের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
ক্স ২০২১ সালে দুনিয়াজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে।

এদিকে গ্লাসগোতে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক জলবায়ু সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা। সেখানে তারা ধরিত্রীর সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয় নিয়ে আলোচনা করবেন। কথা বলবেন ২০৩০ সালের মধ্যে কীভাবে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনা যায় সেটি নিয়ে।
বিশ্বকে সুরক্ষায় এই সম্মেলনের সাফল্যের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে বিপর্যয় থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা কতটা কাজ করবে। সম্মেলনকে ঘিরে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় থেকে ধরিত্রীকে রক্ষায় বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে জোরালো পদক্ষেপ চাইছেন জলবায়ু কর্মীরা। অন্যদিকে উন্নত, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোরও স্বতন্ত্র এজেন্ডা রয়েছে।
বন্যা, খরা ও দাবানলের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ক্ষতির জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। অথচ এই দেশগুলোর মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণ উন্নত দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদেরই সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে। ফলে গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে কম ধনী এবং ছোট দেশগুলোর চাহিদার বিষয়ে একটি সমাধানে পৌঁছানো জরুরি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তিনি ধারণা করছেন গ্লাসগোতে জাতিসংঘের কপ-২৬ সম্মেলন সফল হওয়ার সম্ভাবনা ১০-এর মধ্যে ৬ ভাগ। তবে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বিশ্বনেতারা যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বৈশ্বিক সভ্যতার দ্রুত পতন ঘটবে। এমন বাস্তবতায় ভব্যিষতের কথা ভেবে বিশ্বনেতারা এই সম্মেলনে কতটুকু কার্যকর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেবেন তা এখন দেখার বিষয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘তীব্র তাপপ্রবাহ আর বিধ্বংসী বন্যা এখন নতুন বাস্তবতা’

আপডেট সময় : ১১:৩৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

ডেস্ক : তীব্র তাপপ্রবাহ এবং বিধ্বংসী বন্যাসহ চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া এখন নতুন বাস্তবতা। এক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করেছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)। গত রবিবার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে ঐতিহাসিক জলবায়ু সম্মেলনের প্রথম দিন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আমাদের চোখের সামনেই যে ধরিত্রী বদলে যাচ্ছে প্রতিবেদনে সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধ্যাপক পেটেরি তালাস বলেন, চরমভাবাপন্ন ঘটনাগুলোই নতুন বাস্তবতা। জলবায়ু যে মানুষের কারণে পরিবর্তিত হচ্ছে, তার পর্বতসম বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে।
অধ্যাপক পেটেরি তালাস এই বছর দুনিয়াজুড়ে ঘটে যাওয়া কিছু চরম ঘটনার উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে:
ক্স গ্রীনল্যান্ড বরফের চূড়ায় প্রথমবারের মতো তুষারপাতের বদলে বৃষ্টি হয়েছে।
ক্স কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের সংলগ্ন অংশে তাপপ্রবাহ ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার একটি গ্রামে তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উন্নীত করেছে।
ক্স যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একাধিক তাপপ্রবাহের সময় ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে তাপমাত্রা ৫৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।
ক্স ইউরোপের কিছু অংশে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে কয়েক ডজন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং বিশাল অঙ্কের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
ক্স ২০২১ সালে দুনিয়াজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে।

এদিকে গ্লাসগোতে শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক জলবায়ু সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এতে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা। সেখানে তারা ধরিত্রীর সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয় নিয়ে আলোচনা করবেন। কথা বলবেন ২০৩০ সালের মধ্যে কীভাবে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনা যায় সেটি নিয়ে।
বিশ্বকে সুরক্ষায় এই সম্মেলনের সাফল্যের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে বিপর্যয় থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা কতটা কাজ করবে। সম্মেলনকে ঘিরে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয় থেকে ধরিত্রীকে রক্ষায় বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে জোরালো পদক্ষেপ চাইছেন জলবায়ু কর্মীরা। অন্যদিকে উন্নত, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোরও স্বতন্ত্র এজেন্ডা রয়েছে।
বন্যা, খরা ও দাবানলের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ক্ষতির জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। অথচ এই দেশগুলোর মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণ উন্নত দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদেরই সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে। ফলে গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে কম ধনী এবং ছোট দেশগুলোর চাহিদার বিষয়ে একটি সমাধানে পৌঁছানো জরুরি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তিনি ধারণা করছেন গ্লাসগোতে জাতিসংঘের কপ-২৬ সম্মেলন সফল হওয়ার সম্ভাবনা ১০-এর মধ্যে ৬ ভাগ। তবে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বিশ্বনেতারা যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বৈশ্বিক সভ্যতার দ্রুত পতন ঘটবে। এমন বাস্তবতায় ভব্যিষতের কথা ভেবে বিশ্বনেতারা এই সম্মেলনে কতটুকু কার্যকর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেবেন তা এখন দেখার বিষয়।