ঢাকা ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫

তিতা করলার ১৩ গুণ

  • আপডেট সময় : ১০:৪৭:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক : অনেকের কাছেই খুব প্রিয় একটি সবজি হচ্ছে করলা। যদিও এটি খেতে তেতো। তাই ছোটরা এই সবজিটি খেতে খুব একটা পছন্দ করেন না। তারপরও ছোট-বড় সবারই খাদ্য তালিকায় করলা রাখা জরুরি। নইলে পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজিটির স্বাস্থ্য উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা হাসিনা আকতার করলার পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নিয়মিত করলা খেলে রোগবালাই থাকে ১০০ হাত দূরে।
পুষ্টি উপাদান : প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় আছে ২৮ কিলোক্যালরি, ৯২ দশমিক ২ গ্রাম জলীয় অংশ, ৪ দশমিক ৩ গ্রাম শর্করা, ২ দশমিক ৫ গ্রাম আমিষ, ১৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১ দশমিক ৮ মিলিগ্রাম লোহা ও ৬৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক তিতা করলার ১৩ মিঠা গুণ-
শক্তিবর্ধক : করলার রস শক্তিবর্ধক হিসেবেও কাজ করে। এটি স্ট্যামিনা বাড়ানোর পাশাপাশি ভালো ঘুমে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি : করলা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কোনো ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরকে লড়তে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধী : করলায় আছে যথেষ্ট লৌহ, ভিটামিন এ, সি এবং আঁশ। এন্টি অক্সিডেন্ট-ভিটামিন এ এবং সি বার্ধক্য বিলম্বিত করে। এছাড়া করলায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী লুটিন এবং ক্যান্সার প্রতিরোধকারী লাইকোপিন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ : রলায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও রক্তের চিনি কমানোর উপাদান। ডায়াবেটিসের রোগীরা রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত করলা খেতে পারেন।
ওষুধি গুণ : শরীর কামড়ানো, জল পিপাসা বেড়ে যাওয়া, বমিভাব হওয়া থেকে মুক্তি পেতে করলার পাতার রস উপকারী। এক চা চামচ করলা পাতার রস একটু গরম করে অথবা গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
সুগার নিয়ন্ত্রণ : করলা অ্যাডিনোসিন মনোফসফেট অ্যাকটিভেটেড প্রোটিন কাইনেজ নামক এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে রক্ত থেকে শরীরের কোষগুলোতে সুগার গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এটি শরীরের কোষের গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়া বাড়ায় ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে।
হার্ট অ্যাটাক রোধ করে : করলা রক্তের চর্বি তথা ট্রাইগ্লিসারাইড বা টিজি কমায় আর বাড়ায় ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল। এতে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন করলা গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবং প্রতিরোধ হয় রক্তনালিতে চর্বি জমার কারণে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা।
শ্বাসরোগ দূর করে : করলার রসে আছে অনেক গুণ। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের দূষণ দূর করে। হজমপ্রক্রিয়ায় গতি বাড়ায়। পানির সঙ্গে মধু ও করলার রস মিশিয়ে খেলে অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস ও গলার প্রদাহে উপকার পাওয়া যায়।
হজমে স্বস্তি আনে : করলার বড় গুণ হচ্ছে এটি হজমের জন্য উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এর ভূমিকা আছে। পরিপাকতন্ত্রের জটিলতা দূর করতে নিয়মিত করলা খেতে পারেন।
খাবারে রুচি আনে : খাবারে অরুচি দেখা দিলে, অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগার প্রবণতা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে এক চা চামচ করে করলার রস সকাল ও বিকেলে খেলে খাবারে রুচি বাড়বে।
ম্যালেরিয়া রোগীর পথ্য : ম্যালেরিয়ায় করলা পাতার রস খেলে খুব উপকার মেলে। এছাড়া ম্যালেরিয়ার রোগীকে দিনে তিনটে করলার পাতা ও সাড়ে তিনটি আস্ত গোলমরিচ এক সঙ্গে থেঁতো করে নিয়ম করে ৭ দিন খাওয়ালে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। করলার পাতার রস খেলে জ্বর সেরে যায়। শরীর থেকে কৃমি দূর করতেও করলা কাজ করে।
বাতের ব্যথা নিরাময় : দহ থেকে বাতব্যথা তাড়াতে চার চা চামচ করলা বা উচ্ছে পাতার রস একটু গরম করে দেড় চা চামচ বিশুদ্ধ গাওয়া ঘি মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খেতে হবে।
তারুণ্য ধরে রাখতে : করলার ভিটামিন সি ত্বক ও চুল ভালো রাখে। করলার সবচেয়ে বড় গুণ এটি বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। তাই করলা খেয়ে ধরে রাখুন তারুণ্য।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তিতা করলার ১৩ গুণ

আপডেট সময় : ১০:৪৭:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

স্বাস্থ্য ডেস্ক : অনেকের কাছেই খুব প্রিয় একটি সবজি হচ্ছে করলা। যদিও এটি খেতে তেতো। তাই ছোটরা এই সবজিটি খেতে খুব একটা পছন্দ করেন না। তারপরও ছোট-বড় সবারই খাদ্য তালিকায় করলা রাখা জরুরি। নইলে পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজিটির স্বাস্থ্য উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা হাসিনা আকতার করলার পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নিয়মিত করলা খেলে রোগবালাই থাকে ১০০ হাত দূরে।
পুষ্টি উপাদান : প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় আছে ২৮ কিলোক্যালরি, ৯২ দশমিক ২ গ্রাম জলীয় অংশ, ৪ দশমিক ৩ গ্রাম শর্করা, ২ দশমিক ৫ গ্রাম আমিষ, ১৪ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১ দশমিক ৮ মিলিগ্রাম লোহা ও ৬৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি।
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক তিতা করলার ১৩ মিঠা গুণ-
শক্তিবর্ধক : করলার রস শক্তিবর্ধক হিসেবেও কাজ করে। এটি স্ট্যামিনা বাড়ানোর পাশাপাশি ভালো ঘুমে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি : করলা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কোনো ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরকে লড়তে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধী : করলায় আছে যথেষ্ট লৌহ, ভিটামিন এ, সি এবং আঁশ। এন্টি অক্সিডেন্ট-ভিটামিন এ এবং সি বার্ধক্য বিলম্বিত করে। এছাড়া করলায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী লুটিন এবং ক্যান্সার প্রতিরোধকারী লাইকোপিন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ : রলায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও রক্তের চিনি কমানোর উপাদান। ডায়াবেটিসের রোগীরা রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত করলা খেতে পারেন।
ওষুধি গুণ : শরীর কামড়ানো, জল পিপাসা বেড়ে যাওয়া, বমিভাব হওয়া থেকে মুক্তি পেতে করলার পাতার রস উপকারী। এক চা চামচ করলা পাতার রস একটু গরম করে অথবা গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
সুগার নিয়ন্ত্রণ : করলা অ্যাডিনোসিন মনোফসফেট অ্যাকটিভেটেড প্রোটিন কাইনেজ নামক এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে রক্ত থেকে শরীরের কোষগুলোতে সুগার গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এটি শরীরের কোষের গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়া বাড়ায় ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে।
হার্ট অ্যাটাক রোধ করে : করলা রক্তের চর্বি তথা ট্রাইগ্লিসারাইড বা টিজি কমায় আর বাড়ায় ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল। এতে নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন করলা গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবং প্রতিরোধ হয় রক্তনালিতে চর্বি জমার কারণে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা।
শ্বাসরোগ দূর করে : করলার রসে আছে অনেক গুণ। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের দূষণ দূর করে। হজমপ্রক্রিয়ায় গতি বাড়ায়। পানির সঙ্গে মধু ও করলার রস মিশিয়ে খেলে অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস ও গলার প্রদাহে উপকার পাওয়া যায়।
হজমে স্বস্তি আনে : করলার বড় গুণ হচ্ছে এটি হজমের জন্য উপকারী। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এর ভূমিকা আছে। পরিপাকতন্ত্রের জটিলতা দূর করতে নিয়মিত করলা খেতে পারেন।
খাবারে রুচি আনে : খাবারে অরুচি দেখা দিলে, অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভোগার প্রবণতা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে এক চা চামচ করে করলার রস সকাল ও বিকেলে খেলে খাবারে রুচি বাড়বে।
ম্যালেরিয়া রোগীর পথ্য : ম্যালেরিয়ায় করলা পাতার রস খেলে খুব উপকার মেলে। এছাড়া ম্যালেরিয়ার রোগীকে দিনে তিনটে করলার পাতা ও সাড়ে তিনটি আস্ত গোলমরিচ এক সঙ্গে থেঁতো করে নিয়ম করে ৭ দিন খাওয়ালে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। করলার পাতার রস খেলে জ্বর সেরে যায়। শরীর থেকে কৃমি দূর করতেও করলা কাজ করে।
বাতের ব্যথা নিরাময় : দহ থেকে বাতব্যথা তাড়াতে চার চা চামচ করলা বা উচ্ছে পাতার রস একটু গরম করে দেড় চা চামচ বিশুদ্ধ গাওয়া ঘি মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খেতে হবে।
তারুণ্য ধরে রাখতে : করলার ভিটামিন সি ত্বক ও চুল ভালো রাখে। করলার সবচেয়ে বড় গুণ এটি বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখতে সাহায্য করে। তাই করলা খেয়ে ধরে রাখুন তারুণ্য।