আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তালেবান আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা দখল করার পর স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি হারিয়েছেন হাদিয়া আহমাদি নামে এক নারী শিক্ষকা। তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে আয়-রোজগার বন্ধ। বাধ্য হয়ে তীব্র ঠা-ার মধ্যে রাজধানী কাবুলের রাস্তার পাশে বসে মুচির কাজ করছেন তিনি। লক্ষ্য একটাই, কিছুটা অর্থ আয় করে পরিবার নিয়ে দিন কাটানো।
গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর গত আগস্টের মাঝামাঝিতেই চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন ৪৩ বছর বয়সী এই শিক্ষিকা। এ ঘটনায় নারী অধিকার রক্ষার বিষয়ে তালেবানের প্রতিশ্রুতি আরও একবার প্রশ্নের মুখে পড়লো।
২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। ক্ষমতা দখলের পর থেকেই আশঙ্কা বাড়ছে যে, তালেবান কার্যত কট্টরপন্থার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং নারীদের ওপর কঠোর নিয়মকানুন আরোপ করছে। দেওয়া হচ্ছে নানা বিধিনিষেধও। এমনকি তালেবানের অন্তর্র্বতী সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার কোনো নারীকে স্থান দেওয়া হয়নি।
৪৩ বছর বয়সী আফগান শিক্ষিকা হাদিয়া আহমাদি পাঁচ সন্তানের মা। চাকরি হারিয়ে কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার পরই অন্যের পায়ের জুতা চকচকে করার কাজে নামেন তিনি। আহমাদি বলছেন, ‘যখন দেখি আমার সন্তানেরা খুবই ক্ষুধার্ত, তখন বাধ্য হয়েই রাস্তার পাশে বসে মুচির কাজ করতে শুরু করি আমি।’ তবে নিজের পরিবারের নাম বা পরিচয় প্রকাশ করেননি তিনি।
বিশ্বের কোনো দেশ তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থা আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
হাদিয়া আরও বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের খাদ্য যোগাতে অনেক বিধবা কাজ করতে চান। আবার অনেক নারীই আছেন, যারা নিজেদের স্বামীকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে কাজ করার অনুমতি চায়। আর তাই তালেবানকে অবশ্যই নারীদের বাইরে কাজের অধিকার দিতে হবে। নারীদের চাকরিও দিতে হবে। কারণ এখন কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগই নেই।’
তালেবান এলো, চাকরি গেল, শিক্ষক হলেন মুচি
ট্যাগস :
চাকরি গেল
জনপ্রিয় সংবাদ