ঢাকা ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

তারেক-জোবাইদার দুর্নীতির মামলায় রুল শুনানি পিছিয়ে ৫ জুন

  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ‘সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা বিবরণী দেওয়ার’ মামলায় রুলের শুনানি পিছিয়ে ৫ জুন তারিখ রেখেছে হাই কোর্ট।
আসামিপক্ষের আবেদনে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এই নতুন তারিখ নির্ধারণ করে দেয়।
‘দ-িত ও পলাতক’ থাকা অবস্থায় তারেক রহমান এ মামলার আইনি লড়াইয়ের জন্য আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন কিনা- দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবীর এ প্রশ্নের বিষয়েও সেদিন শুনানি হবে বলে আদালত জানিয়েছে। আদালতে তারেক-জোবাইদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। এক যুগের বেশি সময় পর গত এপ্রিলের মাঝামাঝি তারেক-জোবাইদার এ মামলা রুল শুনানির জন্য হাই কোর্টের কার্য তালিকায় আসে। পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য রোববার তারিখ রাখে আদালত। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানির পর সাংবাদিকদের বলেন, “রিট পিটিশনার (তারেক রহমান) মানিলন্ডারিং, একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বিদ্দমান। দ-িত এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি অবস্থায় একজন আসামির পক্ষে সময় চাওয়া যায় কিনা, এটা একটা প্রশ্ন।
“উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত হল- পলাতক আসামির পক্ষে কোনো কথা বলা যাবে না। পলাতক আসামির পক্ষে কথা বলতে হলে তাকে কোর্টে আত্মসমর্পণ করে আইনের আওতায় আসতে হবে। কিন্তু তিনি (তারেক রহমান) পলাতক, বিষয়টি হাই কোর্টের নজরে এনেছি। এরপর আদালত আগামি রোববার শুনানির জন্য রেখেছে।”
দুদকের তোলা ওই প্রশ্নের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারেক-জোবাইদার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, “দুদক তো অনেক প্রশ্নই তুলতে পারে, এটা যখন শুনানি হবে তখন আমরা আদালতে সাবমিশন রাখব।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। সেখানে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জোবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে। পরে একই বছর তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আলাদা রিট আবেদন করেন। এর মধ্যে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। আসামিরা তখন মামলা বাতিলের আবেদন করলে হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দেয়। দীর্ঘ বিরতির পর রিট মামলাগুলো গত ১৯ এপ্রিল আবার শুনানির জন্য আসে। এ মামলার বৈধতা নিয়ে আরেকটি ফৌজদারি আবেদন করেছিলেন ডা. জোবাইদা। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিল হাই কোর্ট। সেই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রুল খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। একই সঙ্গে জোবাইদা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছিলেন জোবাইদা রহমান। শুনানি শেষে গত ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগ জোবাইদার আবেদন খারিজ করে দিলে মামলা চালিয়ে নিতে আইনি বাধা কাটে। নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবাইদা ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন। তার দুই বছর আগে তারেকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর আর কর্মস্থলে না ফেরায় ২০১৪ সালে জোবাইদাকে বরখাস্ত করে সরকার। তারা এখন সেখানেই থাকেন। বিদেশে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারেক, তার মা খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দ- নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তিনিই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যেই চারটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ- মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন তারেক।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জন্মশতবার্ষিকীতে তাজউদ্দীন আহমদকে শ্রদ্ধায় স্মরণ

তারেক-জোবাইদার দুর্নীতির মামলায় রুল শুনানি পিছিয়ে ৫ জুন

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ‘সম্পদের তথ্য গোপন ও মিথ্যা বিবরণী দেওয়ার’ মামলায় রুলের শুনানি পিছিয়ে ৫ জুন তারিখ রেখেছে হাই কোর্ট।
আসামিপক্ষের আবেদনে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এই নতুন তারিখ নির্ধারণ করে দেয়।
‘দ-িত ও পলাতক’ থাকা অবস্থায় তারেক রহমান এ মামলার আইনি লড়াইয়ের জন্য আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন কিনা- দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবীর এ প্রশ্নের বিষয়েও সেদিন শুনানি হবে বলে আদালত জানিয়েছে। আদালতে তারেক-জোবাইদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। এক যুগের বেশি সময় পর গত এপ্রিলের মাঝামাঝি তারেক-জোবাইদার এ মামলা রুল শুনানির জন্য হাই কোর্টের কার্য তালিকায় আসে। পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য রোববার তারিখ রাখে আদালত। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানির পর সাংবাদিকদের বলেন, “রিট পিটিশনার (তারেক রহমান) মানিলন্ডারিং, একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা এবং জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বিদ্দমান। দ-িত এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি অবস্থায় একজন আসামির পক্ষে সময় চাওয়া যায় কিনা, এটা একটা প্রশ্ন।
“উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত হল- পলাতক আসামির পক্ষে কোনো কথা বলা যাবে না। পলাতক আসামির পক্ষে কথা বলতে হলে তাকে কোর্টে আত্মসমর্পণ করে আইনের আওতায় আসতে হবে। কিন্তু তিনি (তারেক রহমান) পলাতক, বিষয়টি হাই কোর্টের নজরে এনেছি। এরপর আদালত আগামি রোববার শুনানির জন্য রেখেছে।”
দুদকের তোলা ওই প্রশ্নের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারেক-জোবাইদার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, “দুদক তো অনেক প্রশ্নই তুলতে পারে, এটা যখন শুনানি হবে তখন আমরা আদালতে সাবমিশন রাখব।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। সেখানে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জোবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে। পরে একই বছর তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমান মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আলাদা রিট আবেদন করেন। এর মধ্যে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। আসামিরা তখন মামলা বাতিলের আবেদন করলে হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দেয়। দীর্ঘ বিরতির পর রিট মামলাগুলো গত ১৯ এপ্রিল আবার শুনানির জন্য আসে। এ মামলার বৈধতা নিয়ে আরেকটি ফৌজদারি আবেদন করেছিলেন ডা. জোবাইদা। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিল হাই কোর্ট। সেই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রুল খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। একই সঙ্গে জোবাইদা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছিলেন জোবাইদা রহমান। শুনানি শেষে গত ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগ জোবাইদার আবেদন খারিজ করে দিলে মামলা চালিয়ে নিতে আইনি বাধা কাটে। নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবাইদা ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন। তার দুই বছর আগে তারেকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর আর কর্মস্থলে না ফেরায় ২০১৪ সালে জোবাইদাকে বরখাস্ত করে সরকার। তারা এখন সেখানেই থাকেন। বিদেশে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারেক, তার মা খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দ- নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তিনিই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যেই চারটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে অগাস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ- মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন তারেক।