ঢাকা ০২:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫

তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করুন

  • আপডেট সময় : ০৬:৩৫:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

তামাক বিরোধী জোটের সংবাদ সম্মেলনের ফাইল ছবি

  • আমিনুল ইসলাম সুজন

তামাক ও তামাক পণ্য মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর – এটা অধিকাংশ মানুষই জানেন। তারপরও, অনেক মানুষ প্রাণঘাতী নেশায় আসক্ত। এ আসক্তির কারণে মানুষের শরীরে দেখা দেয় বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার, স্ট্রোক, হার্ট এটাক, অ্যাজমা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি প্রাণঘাতী রোগ। ফলে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই ধূমপান বা ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনে ক্ষতির ব্যাপকতা সম্পর্কে অবগত নন। অনেকে অবগত হলেও নেশার তীব্রতার কারণে ধূমপান বা তামাক সেবন ছাড়তে পারেন না।

যুক্তরাষ্ট্রে তামাক কোম্পানির বিরুদ্ধে একটি মামলার প্রেক্ষিতে তাদের গোপন নথিপত্র প্রকাশ হয়ে পড়লে জানা যায়, তামাক কোম্পানি তামাকের প্রাণঘাতী ক্ষতি সম্পর্ক জানার পরও অল্প বয়সীদের নেশায় আসক্ত করতে নানা ধরনের প্রতারণা ও প্রচারণার আশ্রয় নেয়। কারণ অল্প বয়সীদের নেশায় আসক্ত করতে পারলে বহু বছর তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব। এজন্য তারা অল্প বয়সীদের আসক্ত করতেই শিশুদের আই-লেবেলে সিগারেটের দোকান বসায়, অন্যান্য দোকানে শিশুদের দৃষ্টিসীমার মধ্যে সিগারেটের প্রচারণা করে। আইন লঙ্ঘন করে নাটক, সিনেমা, ওটিটিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধূমপানের প্রচারণা করে।

মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর ৯০ ভাগেরও বেশি ধূমপায়ী ধূমপান শুরু করে টিনএজ বয়সে, যে বয়সে মানুষ দুরন্ত, কৌতূহলী ও বেপরোয়া থাকে। একইসঙ্গে এ বয়সে তামাকের ক্ষতির ব্যাপকতা সম্পর্কেও ধারণা তৈরি হয় না। উপরন্তু, তামাক কোম্পানিগুলো স্মার্টনেস হিসাবে ধূমপানকে চিত্রায়িত করে। প্রাপ্তবয়সীদের কাজ হিসাবে উসকে দেয়।

তামাককে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান কারণ। বর্তমান বিশ্বে প্রতি ৪ সেকেন্ডে একজন এবং প্রতিবছর ৮৭ লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়। তন্মধ্যে পরোক্ষ ধূমপানে মারা যায় ১৩ লক্ষাধিক, যাদের অধিকাংশ শিশু। এত মানুষের মৃত্যুর কারণ কী? আসুন, একটু জেনে নেওয়া যাক, তামাক ও ধূমপানের বহুবিধ ক্ষতি।

বিশ্বব্যাপী ‘বিড়ি-সিগারেটে’ ধূমপান বেশি হয়ে থাকে। এগুলোর ধোঁয়ায় নিকোটিন, আর্সেনিক, বেনজিন, ক্যাডমিয়াম, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, এমোনিয়াসহ ৭ হাজার ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, তন্মধ্যে ২৫০টি মারাত্মক ক্ষতিকর এবং ৭০টির অধিক শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্যানসার সৃষ্টির জন্য দায়ী। সকল তামাকে রয়েছে নিকোটিন, যা মারাত্মক আসক্তিকারক। আসক্তির দিক থেকে নিকোটিনের প্রভাব খুবই তীব্র। তামাকের নিকোটিন আসক্তি অ্যালকোহল, হিরোইন, প্যাথেডিন আসক্তির চাইতেও শক্তিশালী। যে কারণে নেশায় আসক্ত একজন ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় পরপর শরীরে নিকোটিন চাহিদা পূরণের জন্য ধূমপান বা তামাক গ্রহণ করে। এ নিকোটিন আসক্তির জন্যই একজন মানুষ ধূমপান বা তামাকের ক্ষতি সম্পর্কে জানার পরও ধূমপান ছাড়তে পারে না।

আর্সেনিক শরীরের বিভিন্ন অংশে (ত্বক, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ইত্যাদি) ক্যানসার ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে। বেনজিন লিউকোমিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ক্যাডমিয়াম বিভিন্ন ক্যানসার সৃষ্টির ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। কার্বন মনোক্সাইড শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়, রক্তনালীর ক্ষতি করে, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্ষতিকর গ্যাস বা তরল রাসায়নিক, যা মানুষের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা, এমনকি মৃত্যুর অন্যতম কারণ। অ্যামোনিয়া চোখ, নাক, কান, ফুসফুস ইত্যাদি বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে এবং শরীরে নিকোটিনের প্রভাব বৃদ্ধি করে। ফরমালডিহাইড লিউকোমিয়া, ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি ও নাসিকা গ্রন্থির ক্ষতি করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তিন বছর আগে দ্য টোব্যাকো বডি নামে একটি পোস্টার প্রকাশ করে, সেখানে বলা হয়েছে, তামাক শরীরের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। ধূমপানে ফুসফুস ও মুখগহ্বরের ক্যানসার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগ (অ্যাজমা, ইমফিসেমা ও ব্রংকাইটিস), হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, বার্জার্স ডিজিসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। এছাড়া, ধূমপানের কারণে চোখের সমস্যা, হজমে সমস্যা, কিডনি, লিভার, পাকস্থলীরও ক্ষতি করে। অন্যদিকে ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যেও অনেক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে এবং এগুলো মুখ ও মুখগহ্বর ক্যানসার (দাঁত ও মাড়ি, জিহ্বা, গলা ও স্বরযন্ত্র ইত্যাদি), অগ্নাশয় (pancreas), খাদ্যনালী (esophagus)সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ক্যানসারের প্রধান কারণ।
এছাড়া হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। নস্যি ব্যবহারের কারণে নাসিকাগ্রন্থির ক্যানসার হয়ে থাকে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগ ও মৃত্যু বাংলাদেশের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে জনগোষ্ঠীর ৩৫.৫ শতাংশ (৪৬% পুরুষ ও ২৫.২% নারী) তামাক সেবন করে। তন্মধ্যে, ১৮% (পুরুষ ৩৬.২% ও নারী ০.৮%) ধূমপান করে এবং ২০.৬% (পুরুষ ১৬.২% ও নারী ২৪.৮%) ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করে। যত মানুষ তামাক সেবন করে তার চাইতে বেশি মানুষ পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায়।
বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি’র গবেষণায় দেখা গেছে, সরকার সব তামাক থেকে যত রাজস্ব পায়, তার চাইতে অনেক বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়, এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুর মধ্যে ৪ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি শিশু তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, যার মধ্যে ৬১ হাজারের অধিক শিশু বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার এবং প্রায় ২৬ হাজার মানুষ পরোক্ষ ধূমপানে মারা যায়।
এ প্রেক্ষাপটে আজ ৩১ মে, সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৫। সারাদেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য: ‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’।
শিশু-কিশোরদের টার্গেট করে তামাক কোম্পানি যেসব কূটকৌশলের আশ্রয় নেয় সেসব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী নীতিনির্ধারকদের সচেতন করতে এ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তামাক সেবী ও ধূমপায়ীদের অর্ধেক দীর্ঘমেয়াদে তামাকজনিত রোগে মারা যায়। ফলে, মুনাফার জন্য নতুন ভোক্তা সৃষ্টি করা তামাক কোম্পানির প্রধান লক্ষ্য। এজন্য তামাক কোম্পানিগুলো শিশু-কিশোরদের নেশায় আসক্ত করার জন্য বিভিন্ন অপচেষ্টা চালায়। শিশুদের আই-লেভেলে সিগারেটের দোকান ও সিগারেটের প্যাকেট সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়।
এছাড়া নাটক-সিনেমায় ধূমপানকে স্মার্টনেসের অংশ হিসাবে দেখানো হয়। এসব দৃশ্য মূলত টিন-এজ বয়সীদের টার্গেট করে করা হয়। জনপ্রিয় তারকাদের মাধ্যমে ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হলে অল্পবয়সীরা বেশি প্রভাবিত হয়। অল্পবয়সীদের নেশার দিকে ধাবিত করতে তামাক কোম্পানিগুলো ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্টস, ভ্যাপ/ভেপ ইত্যাদি নতুন নতুন তামাক পণ্য বাজারে আনছে। এসব পণ্যকে অল্পবয়সীদের নিকট আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন ফ্লেভার ও রং ব্যবহার করা হচ্ছে।
নাটক, সিনেমা, অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম ও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এসব পণ্যের প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ জনগোষ্ঠীকে ই-সিগারেটের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য মোড়ক ও পণ্যের মসৃণ নকশা, আকর্ষণীয় রঙ এবং লোভনীয় ফ্লেভার ব্যবহার করছে। প্রলুব্ধকরণ নকশা বা ডিজাইনের মাধ্যমে কিছু তামাক পণ্য মিষ্টি, ক্যান্ডি, এমনকি কার্টুন চরিত্রের অনুকরণে করা হয়- যেগুলো শিশু-কিশোরদের কাছে স্বাভাবিকভাবেই আকর্ষণীয়। তামাক পণ্যে এমন সব রাসায়নিক যুক্ত করে যা তামাকের ঝাঁজ কমায়, তামাক ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি করে এবং ধূমপান ছাড়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে।
মোদ্দাকথা, তামাক পণ্য ডিজাইনের মাধ্যমে উচ্ছলতা ও উদ্যমের প্রকাশ ঘটিয়ে তামাক পণ্যের মৃত্যুঝুঁকিসহ ক্ষতিসমূহ আড়াল করার চেষ্টা করছে। এসব বিষয় সম্পর্কে দেশের জনসাধারণকে সচেতন করা প্রয়োজন।
আমাদের মনে রাখতে হবে, তামাক চাষ, চুল্লীতে আগুনের তাপে কাঁচা তামাক পাতা শুকানো, কারখানায় তামাক পণ্য উৎপাদন, ধূমপান বা ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য সেবন এবং তামাক পণ্যের মোড়ক, বক্স, ফিল্টার, মোথা, রিফিল থেকে সৃষ্ট বর্জ্য- প্রতিটি পর্যায় জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তামাক পাতার নিকোটিন ও অন্যান্য রাসায়নিক এবং তামাক চাষে ব্যবহৃত সার ও কীটনাশকের কারণে মাটি, পানি ও বাতাস মারাত্মকভাবে দূষিত হয়। মাত্র একটি সিগারেট উৎপাদনে ৩.৭ লিটার পানি এবং তামাক চাষে প্রতিবছর পৃথিবীতে দু’হাজার দু’শত কোটি লিটার পানি ব্যবহার হচ্ছে। তামাক চাষে জড়িত কৃষক ও শ্রমিকগণ শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে প্রতিদিন ৫০টি সিগারেটের সমপরিমাণ নিকোটিন গ্রহণ করে থাকে। এতে গ্রীন টোব্যাকো সিকনেস দেখা দেয়, ফলে অনিদ্রা, খাবারে অনীহা, মাথা ব্যথা, ঝিমুনি ভাব, বমি ভাব, চর্মরোগ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। কৃষি জমিতে তামাক চাষের কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রতিবন্ধক হয়ে উঠছে।
প্রতি ৩০০টি সিগারেট তৈরির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ এবং বিশ্বব্যাপী সিগারেট তৈরির জন্য প্রতিবছর ৬০ কোটি গাছ কাটা পড়ছে। সিগারেটের ফিল্টার/উচ্ছিষ্ট, জর্দা-গুলসহ তামাক পণ্যের প্লাস্টিক মোড়ক, এবং ই-সিগারেটের ধাতব কয়েল, প্লাস্টিক কার্টিজ, রিফিল, ব্যাটারি, যন্ত্র, মোড়ক থেকে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। পৃথিবীতে উৎপাদিত বর্জ্যের বড় একটি অংশ অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন তামাক পণ্য হতে উৎপন্ন হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর মতে, বাসাবাড়ি ও পাবলিক প্লেসে অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কারণ ‘ধূমপান’। ২০২৪ সালে ৪ হাজার ১৩৯টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা থেকে। বিষয়টি উদ্বেগজনক!
মনে রাখতে হবে, ধূমপান হচ্ছে মাদক সেবনের প্রবেশ পথ। তামাকের নেশার মতো মাদকাসক্তিও বাংলাদেশে একটি বড় সামাজিক সমস্যা। তাই মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য তামাকের ব্যবহারও কমিয়ে আনা প্রয়োজন। আসুন, তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি। তামাকের আগ্রাসন থেকে পরিবারের শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সহায়তা করি।
লেখক: আইন ও নীতি বিশ্লেষক; কোষাধ্যক্ষ, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন; মডারেটর, স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করুন

আপডেট সময় : ০৬:৩৫:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
  • আমিনুল ইসলাম সুজন

তামাক ও তামাক পণ্য মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর – এটা অধিকাংশ মানুষই জানেন। তারপরও, অনেক মানুষ প্রাণঘাতী নেশায় আসক্ত। এ আসক্তির কারণে মানুষের শরীরে দেখা দেয় বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার, স্ট্রোক, হার্ট এটাক, অ্যাজমা, ডায়াবেটিস ইত্যাদি প্রাণঘাতী রোগ। ফলে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই ধূমপান বা ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনে ক্ষতির ব্যাপকতা সম্পর্কে অবগত নন। অনেকে অবগত হলেও নেশার তীব্রতার কারণে ধূমপান বা তামাক সেবন ছাড়তে পারেন না।

যুক্তরাষ্ট্রে তামাক কোম্পানির বিরুদ্ধে একটি মামলার প্রেক্ষিতে তাদের গোপন নথিপত্র প্রকাশ হয়ে পড়লে জানা যায়, তামাক কোম্পানি তামাকের প্রাণঘাতী ক্ষতি সম্পর্ক জানার পরও অল্প বয়সীদের নেশায় আসক্ত করতে নানা ধরনের প্রতারণা ও প্রচারণার আশ্রয় নেয়। কারণ অল্প বয়সীদের নেশায় আসক্ত করতে পারলে বহু বছর তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব। এজন্য তারা অল্প বয়সীদের আসক্ত করতেই শিশুদের আই-লেবেলে সিগারেটের দোকান বসায়, অন্যান্য দোকানে শিশুদের দৃষ্টিসীমার মধ্যে সিগারেটের প্রচারণা করে। আইন লঙ্ঘন করে নাটক, সিনেমা, ওটিটিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধূমপানের প্রচারণা করে।

মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর ৯০ ভাগেরও বেশি ধূমপায়ী ধূমপান শুরু করে টিনএজ বয়সে, যে বয়সে মানুষ দুরন্ত, কৌতূহলী ও বেপরোয়া থাকে। একইসঙ্গে এ বয়সে তামাকের ক্ষতির ব্যাপকতা সম্পর্কেও ধারণা তৈরি হয় না। উপরন্তু, তামাক কোম্পানিগুলো স্মার্টনেস হিসাবে ধূমপানকে চিত্রায়িত করে। প্রাপ্তবয়সীদের কাজ হিসাবে উসকে দেয়।

তামাককে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান কারণ। বর্তমান বিশ্বে প্রতি ৪ সেকেন্ডে একজন এবং প্রতিবছর ৮৭ লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়। তন্মধ্যে পরোক্ষ ধূমপানে মারা যায় ১৩ লক্ষাধিক, যাদের অধিকাংশ শিশু। এত মানুষের মৃত্যুর কারণ কী? আসুন, একটু জেনে নেওয়া যাক, তামাক ও ধূমপানের বহুবিধ ক্ষতি।

বিশ্বব্যাপী ‘বিড়ি-সিগারেটে’ ধূমপান বেশি হয়ে থাকে। এগুলোর ধোঁয়ায় নিকোটিন, আর্সেনিক, বেনজিন, ক্যাডমিয়াম, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, এমোনিয়াসহ ৭ হাজার ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, তন্মধ্যে ২৫০টি মারাত্মক ক্ষতিকর এবং ৭০টির অধিক শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্যানসার সৃষ্টির জন্য দায়ী। সকল তামাকে রয়েছে নিকোটিন, যা মারাত্মক আসক্তিকারক। আসক্তির দিক থেকে নিকোটিনের প্রভাব খুবই তীব্র। তামাকের নিকোটিন আসক্তি অ্যালকোহল, হিরোইন, প্যাথেডিন আসক্তির চাইতেও শক্তিশালী। যে কারণে নেশায় আসক্ত একজন ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় পরপর শরীরে নিকোটিন চাহিদা পূরণের জন্য ধূমপান বা তামাক গ্রহণ করে। এ নিকোটিন আসক্তির জন্যই একজন মানুষ ধূমপান বা তামাকের ক্ষতি সম্পর্কে জানার পরও ধূমপান ছাড়তে পারে না।

আর্সেনিক শরীরের বিভিন্ন অংশে (ত্বক, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ইত্যাদি) ক্যানসার ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে। বেনজিন লিউকোমিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ক্যাডমিয়াম বিভিন্ন ক্যানসার সৃষ্টির ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। কার্বন মনোক্সাইড শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়, রক্তনালীর ক্ষতি করে, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্ষতিকর গ্যাস বা তরল রাসায়নিক, যা মানুষের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা, এমনকি মৃত্যুর অন্যতম কারণ। অ্যামোনিয়া চোখ, নাক, কান, ফুসফুস ইত্যাদি বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে এবং শরীরে নিকোটিনের প্রভাব বৃদ্ধি করে। ফরমালডিহাইড লিউকোমিয়া, ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি ও নাসিকা গ্রন্থির ক্ষতি করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তিন বছর আগে দ্য টোব্যাকো বডি নামে একটি পোস্টার প্রকাশ করে, সেখানে বলা হয়েছে, তামাক শরীরের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। ধূমপানে ফুসফুস ও মুখগহ্বরের ক্যানসার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদী রোগ (অ্যাজমা, ইমফিসেমা ও ব্রংকাইটিস), হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, বার্জার্স ডিজিসসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। এছাড়া, ধূমপানের কারণে চোখের সমস্যা, হজমে সমস্যা, কিডনি, লিভার, পাকস্থলীরও ক্ষতি করে। অন্যদিকে ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্যেও অনেক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে এবং এগুলো মুখ ও মুখগহ্বর ক্যানসার (দাঁত ও মাড়ি, জিহ্বা, গলা ও স্বরযন্ত্র ইত্যাদি), অগ্নাশয় (pancreas), খাদ্যনালী (esophagus)সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ক্যানসারের প্রধান কারণ।
এছাড়া হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। নস্যি ব্যবহারের কারণে নাসিকাগ্রন্থির ক্যানসার হয়ে থাকে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগ ও মৃত্যু বাংলাদেশের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে জনগোষ্ঠীর ৩৫.৫ শতাংশ (৪৬% পুরুষ ও ২৫.২% নারী) তামাক সেবন করে। তন্মধ্যে, ১৮% (পুরুষ ৩৬.২% ও নারী ০.৮%) ধূমপান করে এবং ২০.৬% (পুরুষ ১৬.২% ও নারী ২৪.৮%) ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করে। যত মানুষ তামাক সেবন করে তার চাইতে বেশি মানুষ পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায়।
বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি’র গবেষণায় দেখা গেছে, সরকার সব তামাক থেকে যত রাজস্ব পায়, তার চাইতে অনেক বেশি অর্থ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়, এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুর মধ্যে ৪ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি শিশু তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, যার মধ্যে ৬১ হাজারের অধিক শিশু বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার এবং প্রায় ২৬ হাজার মানুষ পরোক্ষ ধূমপানে মারা যায়।
এ প্রেক্ষাপটে আজ ৩১ মে, সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৫। সারাদেশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য: ‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি’।
শিশু-কিশোরদের টার্গেট করে তামাক কোম্পানি যেসব কূটকৌশলের আশ্রয় নেয় সেসব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী নীতিনির্ধারকদের সচেতন করতে এ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তামাক সেবী ও ধূমপায়ীদের অর্ধেক দীর্ঘমেয়াদে তামাকজনিত রোগে মারা যায়। ফলে, মুনাফার জন্য নতুন ভোক্তা সৃষ্টি করা তামাক কোম্পানির প্রধান লক্ষ্য। এজন্য তামাক কোম্পানিগুলো শিশু-কিশোরদের নেশায় আসক্ত করার জন্য বিভিন্ন অপচেষ্টা চালায়। শিশুদের আই-লেভেলে সিগারেটের দোকান ও সিগারেটের প্যাকেট সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়।
এছাড়া নাটক-সিনেমায় ধূমপানকে স্মার্টনেসের অংশ হিসাবে দেখানো হয়। এসব দৃশ্য মূলত টিন-এজ বয়সীদের টার্গেট করে করা হয়। জনপ্রিয় তারকাদের মাধ্যমে ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হলে অল্পবয়সীরা বেশি প্রভাবিত হয়। অল্পবয়সীদের নেশার দিকে ধাবিত করতে তামাক কোম্পানিগুলো ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্টস, ভ্যাপ/ভেপ ইত্যাদি নতুন নতুন তামাক পণ্য বাজারে আনছে। এসব পণ্যকে অল্পবয়সীদের নিকট আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন ফ্লেভার ও রং ব্যবহার করা হচ্ছে।
নাটক, সিনেমা, অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম ও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এসব পণ্যের প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো তরুণ জনগোষ্ঠীকে ই-সিগারেটের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য মোড়ক ও পণ্যের মসৃণ নকশা, আকর্ষণীয় রঙ এবং লোভনীয় ফ্লেভার ব্যবহার করছে। প্রলুব্ধকরণ নকশা বা ডিজাইনের মাধ্যমে কিছু তামাক পণ্য মিষ্টি, ক্যান্ডি, এমনকি কার্টুন চরিত্রের অনুকরণে করা হয়- যেগুলো শিশু-কিশোরদের কাছে স্বাভাবিকভাবেই আকর্ষণীয়। তামাক পণ্যে এমন সব রাসায়নিক যুক্ত করে যা তামাকের ঝাঁজ কমায়, তামাক ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি করে এবং ধূমপান ছাড়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে।
মোদ্দাকথা, তামাক পণ্য ডিজাইনের মাধ্যমে উচ্ছলতা ও উদ্যমের প্রকাশ ঘটিয়ে তামাক পণ্যের মৃত্যুঝুঁকিসহ ক্ষতিসমূহ আড়াল করার চেষ্টা করছে। এসব বিষয় সম্পর্কে দেশের জনসাধারণকে সচেতন করা প্রয়োজন।
আমাদের মনে রাখতে হবে, তামাক চাষ, চুল্লীতে আগুনের তাপে কাঁচা তামাক পাতা শুকানো, কারখানায় তামাক পণ্য উৎপাদন, ধূমপান বা ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য সেবন এবং তামাক পণ্যের মোড়ক, বক্স, ফিল্টার, মোথা, রিফিল থেকে সৃষ্ট বর্জ্য- প্রতিটি পর্যায় জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তামাক পাতার নিকোটিন ও অন্যান্য রাসায়নিক এবং তামাক চাষে ব্যবহৃত সার ও কীটনাশকের কারণে মাটি, পানি ও বাতাস মারাত্মকভাবে দূষিত হয়। মাত্র একটি সিগারেট উৎপাদনে ৩.৭ লিটার পানি এবং তামাক চাষে প্রতিবছর পৃথিবীতে দু’হাজার দু’শত কোটি লিটার পানি ব্যবহার হচ্ছে। তামাক চাষে জড়িত কৃষক ও শ্রমিকগণ শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে প্রতিদিন ৫০টি সিগারেটের সমপরিমাণ নিকোটিন গ্রহণ করে থাকে। এতে গ্রীন টোব্যাকো সিকনেস দেখা দেয়, ফলে অনিদ্রা, খাবারে অনীহা, মাথা ব্যথা, ঝিমুনি ভাব, বমি ভাব, চর্মরোগ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। কৃষি জমিতে তামাক চাষের কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রতিবন্ধক হয়ে উঠছে।
প্রতি ৩০০টি সিগারেট তৈরির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ এবং বিশ্বব্যাপী সিগারেট তৈরির জন্য প্রতিবছর ৬০ কোটি গাছ কাটা পড়ছে। সিগারেটের ফিল্টার/উচ্ছিষ্ট, জর্দা-গুলসহ তামাক পণ্যের প্লাস্টিক মোড়ক, এবং ই-সিগারেটের ধাতব কয়েল, প্লাস্টিক কার্টিজ, রিফিল, ব্যাটারি, যন্ত্র, মোড়ক থেকে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। পৃথিবীতে উৎপাদিত বর্জ্যের বড় একটি অংশ অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন তামাক পণ্য হতে উৎপন্ন হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর মতে, বাসাবাড়ি ও পাবলিক প্লেসে অগ্নিকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কারণ ‘ধূমপান’। ২০২৪ সালে ৪ হাজার ১৩৯টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা থেকে। বিষয়টি উদ্বেগজনক!
মনে রাখতে হবে, ধূমপান হচ্ছে মাদক সেবনের প্রবেশ পথ। তামাকের নেশার মতো মাদকাসক্তিও বাংলাদেশে একটি বড় সামাজিক সমস্যা। তাই মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য তামাকের ব্যবহারও কমিয়ে আনা প্রয়োজন। আসুন, তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি। তামাকের আগ্রাসন থেকে পরিবারের শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সহায়তা করি।
লেখক: আইন ও নীতি বিশ্লেষক; কোষাধ্যক্ষ, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন; মডারেটর, স্টপ টোব্যাকো বাংলাদেশ