ঢাকা ০৯:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

তাইওয়ান ইস্যুতে বাইডেনের ‘ডিগবাজি’

  • আপডেট সময় : ১১:৪৭:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২
  • ৯২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : মাত্র এক দিন আগে তাইওয়ান প্রসঙ্গে চীনকে একহাত দেখে নেওয়ার হুমকি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার টোকিওতে চারটি দেশের জোট কোয়াডের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোনোরকম রদবদল একেবারেই ঘটেনি। গত সোমবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেছিলেন, তাইওয়ানের ওপর চীন হামলা চালালে সেই ভূখ-ের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ। একই সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন সে মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন যে তাইওয়ানে জরুরি অবস্থা দেখা দিলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে জড়িত হবে। উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘হ্যাঁ, এ অঙ্গীকার আমরা ইতিমধ্যে ব্যক্ত করেছি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই মন্তব্যকে অনেকেই পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ প্রস্তুতির পাঁয়তারা হিসেবে দেখেছেন। সংবাদমাধ্যমে এ খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করেছে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে চীন কঠোর ভাষায় বাইডেনের সমালোচনা করে বলেছে, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারও নেই এবং কেউ তা করতে চাইলে বেইজিং এর কড়া জবাব দেবে।
তাইওয়ান প্রসঙ্গে কয়েক বছর ধরে ধোঁয়াশায় ঘেরা নীতি অনুসরণ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৭০–এর দশকের শুরুতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নেওয়ার পর মার্কিন প্রশাসন তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেওয়া স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নিয়ে তাইওয়ান যে চীনের ভূখ-ের অংশ, তা পরোক্ষে মেনে নিয়েছিল। তবে অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে চীন ক্রমেই শক্তিশালী এক রাষ্ট্রে পরিণত হতে থাকায় হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান প্রসঙ্গে অস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করতে থাকে। তাইওয়ান প্রণালিতে চীনের সামরিক তৎপরতা প্রতিহত করার প্রস্তুত থাকার ইঙ্গিত দিতে শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য প্রকাশে তাইওয়ান নিয়ে আগের সেই অবস্থান থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়নি। অর্থাৎ মার্কিন সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে তাইওয়ান স্বাধীন রাষ্ট্র নয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যখন হঠাৎ করে বলে বসেন, তাইওয়ানের স্বাধীন অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিরত থাকবে না, স্বাভাবিকভাবেই সেই বক্তব্যের এ রকম ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, আগের সেই অবস্থান থেকে ওয়াশিংটন সরে এসেছে। বাইডেনের গতকালের মন্তব্যের এ রকম ব্যাখ্যাই সংবাদমাধ্যম করেছে, যা কিনা মার্কিন প্রশাসনকে অবস্থান পরিষ্কার করে নেওয়ার জন্য অনেকটা যেন পরোক্ষ এক চাপের মুখে ফেলে দিয়েছিল। ফলে বলা যায়, সে রকম পরোক্ষ চাপের মুখেই এক দিন আগে করা মন্তব্য থেকে সরে এসে বাইডেনকে মঙ্গলবার বলতে হয়েছে যে তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোনোরকম রদবদল একেবারেই হয়নি। আবারও তাই ডিগবাজি খেতে দেখা গেল তাঁকে। ইতিমধ্যে একাধিকবার আগের বক্তব্য থেকে সরে যেতে দেখা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

তাইওয়ান ইস্যুতে বাইডেনের ‘ডিগবাজি’

আপডেট সময় : ১১:৪৭:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২

প্রত্যাশা ডেস্ক : মাত্র এক দিন আগে তাইওয়ান প্রসঙ্গে চীনকে একহাত দেখে নেওয়ার হুমকি দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার টোকিওতে চারটি দেশের জোট কোয়াডের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোনোরকম রদবদল একেবারেই ঘটেনি। গত সোমবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেছিলেন, তাইওয়ানের ওপর চীন হামলা চালালে সেই ভূখ-ের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ। একই সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন সে মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন যে তাইওয়ানে জরুরি অবস্থা দেখা দিলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে জড়িত হবে। উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘হ্যাঁ, এ অঙ্গীকার আমরা ইতিমধ্যে ব্যক্ত করেছি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই মন্তব্যকে অনেকেই পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ প্রস্তুতির পাঁয়তারা হিসেবে দেখেছেন। সংবাদমাধ্যমে এ খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করেছে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে চীন কঠোর ভাষায় বাইডেনের সমালোচনা করে বলেছে, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারও নেই এবং কেউ তা করতে চাইলে বেইজিং এর কড়া জবাব দেবে।
তাইওয়ান প্রসঙ্গে কয়েক বছর ধরে ধোঁয়াশায় ঘেরা নীতি অনুসরণ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৭০–এর দশকের শুরুতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নেওয়ার পর মার্কিন প্রশাসন তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেওয়া স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নিয়ে তাইওয়ান যে চীনের ভূখ-ের অংশ, তা পরোক্ষে মেনে নিয়েছিল। তবে অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে চীন ক্রমেই শক্তিশালী এক রাষ্ট্রে পরিণত হতে থাকায় হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান প্রসঙ্গে অস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করতে থাকে। তাইওয়ান প্রণালিতে চীনের সামরিক তৎপরতা প্রতিহত করার প্রস্তুত থাকার ইঙ্গিত দিতে শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য প্রকাশে তাইওয়ান নিয়ে আগের সেই অবস্থান থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়নি। অর্থাৎ মার্কিন সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে তাইওয়ান স্বাধীন রাষ্ট্র নয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যখন হঠাৎ করে বলে বসেন, তাইওয়ানের স্বাধীন অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিরত থাকবে না, স্বাভাবিকভাবেই সেই বক্তব্যের এ রকম ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, আগের সেই অবস্থান থেকে ওয়াশিংটন সরে এসেছে। বাইডেনের গতকালের মন্তব্যের এ রকম ব্যাখ্যাই সংবাদমাধ্যম করেছে, যা কিনা মার্কিন প্রশাসনকে অবস্থান পরিষ্কার করে নেওয়ার জন্য অনেকটা যেন পরোক্ষ এক চাপের মুখে ফেলে দিয়েছিল। ফলে বলা যায়, সে রকম পরোক্ষ চাপের মুখেই এক দিন আগে করা মন্তব্য থেকে সরে এসে বাইডেনকে মঙ্গলবার বলতে হয়েছে যে তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোনোরকম রদবদল একেবারেই হয়নি। আবারও তাই ডিগবাজি খেতে দেখা গেল তাঁকে। ইতিমধ্যে একাধিকবার আগের বক্তব্য থেকে সরে যেতে দেখা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে।