প্রত্যাশা ডেস্ক: আগামী বছর ৩০ শতাংশ বাজেট কমে যাওয়ায় এবং ২০২৯ সাল নাগাদ ১০০ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার তহবিল ঘাটতির কারণে বিশ্বব্যাপী পোলিও দূরীকরণ কর্মসূচি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) এমন তথ্য জানিয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
গ্লোবাল পোলিও ইরাডিকেশন ইনিশিয়েটিভ (জিপিইআই) এর আওতায় ডব্লিওএইচও ও গেটস ফাউন্ডেশনসহ একাধিক সংস্থা কাজ করছে। জিপিইআই থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অর্থ সংকটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অর্থ ঘাটতির মূল কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের অনুদান হ্রাসকে দায়ী করা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় অর্থায়ন ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যদি সকল দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে এবং কোনো শিশুই টিকার বাইরে না থাকে তা নিশ্চিত করা যায় তবে পোলিও নির্মূল এখনো সম্ভব।
এমন পরিস্থিতিতে সংস্থাটি এখন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নজরদারি ও টিকাদান কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দেবে। হাম ও অন্যান্য রোগের টিকা কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় করে ফ্র্যাকশনাল ডোজিং কৌশলও ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। এ কৌশলের মাধ্যমে একটি টিকার পাঁচ ভাগের এক ভাগ ডোজ ব্যবহার করেও শিশুদের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জিপিইআই অপারেশন সীমিত করবে, তবে কোনো নতুন প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিওএইচও এর পোলিও নির্মূল পরিচালক জামাল আহমেদ বলেন, অর্থায়নে বড় ধরনের কাটছাঁট মানে অনেক কার্যক্রমই বন্ধ হয়ে যাবে।
১৯৮৮ সালে পোলিও নির্মূলের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। তখন থেকে ব্যাপক টিকাদান কার্যক্রমের কারণে পোলিও সংক্রমণ নাটকীয়ভাবে কমেছে। তবুও ভাইরাসটি এখনো টিকে আছে। বিশেষ করে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ২০২৫ সালে ৩৬টি বন্য পোলিও আক্রান্তের ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও নাইজেরিয়াসহ অন্যান্য দেশে ১৪৯টি ভ্যাকসিন-উৎপন্ন পোলিওর ঘটনা রিপোর্ট হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, রোগটিকে চিরতরে নির্মূল করার একমাত্র পথ হলো টিকাদান ও নজরদারি অব্যাহত রাখা।
সানা/ওআ/আপ্র/২২/১০/২০২৫