ঢাকা ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

তরুণরা আক্রান্ত হওয়ায় বয়স্করা মৃত্যুবরণ করছেন : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০৯:৪৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১
  • ১৬০ বার পড়া হয়েছে


নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা বাইরে ঘুরে সংক্রমিত হয়, বাসায় নিয়ে চলে আসে এবং বয়স্ক লোকদের সংক্রমিত করে। ফলে তারাই মৃত্যুবরণ করছে। এই বিষয়ে সবার সজাগ হওয়া উচিত। গতকাল বুধবার অনলাইনে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জাতীয় অ্যাজমা সেন্টারে ১৫০টি বেডের করোনা ইউনিটি উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ কিন্তু অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যে হচ্ছে। এই অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেহেতু বয়স্কদের থেকে অনেক বেশি, তাদের তেমন ক্ষতি হয় না। তাদের মৃত্যু হয় না সেই সংখ্যায়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের। তারা তো ঘর থেকে বেশি বাইরে বের হন না, তারপরও কীভাবে সংক্রমিত হচ্ছেন। ওই তরুণ কিশোর-কিশোরীদের সতর্ক হতে হবে। তাদের কারণে যেন বয়স্করা মৃত্যুবরণ না করেন। সিটি করপোরেশন এলাকার আশপাশে আমাদের সংক্রমণের হার ৮০-৯০ শতাংশ। সেজন্য মৃত্যুর হারও ৮০-৯০ শতাংশ। কাজেই এসব জায়গায় যারা বাস করেন, তাদেরকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বেশ কিছুদিন যাবত আমাদের দেশের করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। আমরা হিমশিম খাচ্ছিলাম রোগী রাখার জন্য। আমাদের সবার তড়িৎ সিদ্ধান্তে আমাদের সচিব, ডিজি, সবাই একযোগে কাজ করলাম এবং আমাদের ঢাকায় যে আড়াই হাজার বেড ছিল, সেটি বৃদ্ধি করে অল্প সময়েই আমরা সাড়ে ৫ হাজার বেডে উন্নীত করলাম। আমরা দেখছি, কয়েকদিন যাবত রোগী কমে আসছে। ঢাকা শহরের সব হাসপাতাল মিলে প্রায় অর্ধেক বেড খালি। তার পেছনে জনগণের সচেতনতা ও মাস্ক পড়া বেড়েছে। লকডাউনের কারণে যাতায়াত কম হচ্ছে, সব মিলিয়ে এটা কমেছে। কিন্তু বাড়তে সময় লাগে না। যদি আমরা বেপরোয়াভাবে চলি, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখি, মাস্ক না পরি, তাহলে আবারও এটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতের মতো অবস্থা আমরা বাংলাদেশে কামনা করি না। ইতোমধ্যে আমরা ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছি। লকডাউন সবসময় দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ, এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, মানুষ গরিব হয়ে যায়, সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয়। লকডাউন একটি সার্বক্ষণিক বিষয় হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শপিং সেন্টারগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু একটা বিশেষ নির্দেশনাও আছে। একটা লম্বা সময় দেওয়া হয়েছে যাতে ভিড় না হয়। সেখানে আমাদেরই দায়িত্ব মাস্ক পরে যাওয়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করা। শপিং করা না করা এটা আমাদের নিজেদের বিষয়। আমরা সেই ভিড়ের মধ্যে যাবো কিনা সেটা আমাদের ওপর নির্ভর করে। কাজেই আমরা ঝুঁকি নেবো কিনা এবং আমাদের পরিবারকে সেই ঝুঁকিতে ফেলবো কিনা, এটা আমাদের ওপরে অনেকটা নির্ভর করে। কাজেই আমি মনে করি, এই বিষয়ে আমাদের সবারই কাজগুলো সচেতন হয়ে করা দরকার।’
ভ্যাকসিনের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের সঙ্গেও আমরা চিঠি আদান-প্রদান করেছি। অল্প সময়ের মধ্যে হয়তো আমরা চীনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবো। সেটি এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছায়নি। আশা করি, অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে। ভারতের সঙ্গেও আমাদের কথাবার্তা চলছে, যাতে ভ্যাকসিন আমরা তাড়াতাড়ি পাই।’
আমাদের যে পরিমাণ অক্সিজেন আছে তা যথেষ্ট উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত থেকে গত এক সপ্তাহ যাবত অক্সিজেন পাচ্ছি না। কিন্তু আমরা তা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, লিকুইড অক্সিজেনের পাশাপাশি আমরা গ্যাস অক্সিজেন সরবরাহ করছি। তাছাড়া মজুতেরও ব্যবস্থা করেছি। এখন আমরা ভালো আছি, তবে আমরা চাই না, রোগী আরও ৩ গুণ বেড়ে যাক। তখন কিন্তু সমস্যার পড়ে যাবো। আমাদের সংক্রমণের হার ২৪ শতাংশে উঠে গিয়েছিল, সেটা এখন ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। এটা অনেকটা আশার আলো যে, কমছে। আমরা চাই, এটা আরও কমুক, মৃত্যুর হারও কমে আসুক।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

তরুণরা আক্রান্ত হওয়ায় বয়স্করা মৃত্যুবরণ করছেন : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৯:৪৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১


নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা বাইরে ঘুরে সংক্রমিত হয়, বাসায় নিয়ে চলে আসে এবং বয়স্ক লোকদের সংক্রমিত করে। ফলে তারাই মৃত্যুবরণ করছে। এই বিষয়ে সবার সজাগ হওয়া উচিত। গতকাল বুধবার অনলাইনে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জাতীয় অ্যাজমা সেন্টারে ১৫০টি বেডের করোনা ইউনিটি উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ কিন্তু অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যে হচ্ছে। এই অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেহেতু বয়স্কদের থেকে অনেক বেশি, তাদের তেমন ক্ষতি হয় না। তাদের মৃত্যু হয় না সেই সংখ্যায়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের। তারা তো ঘর থেকে বেশি বাইরে বের হন না, তারপরও কীভাবে সংক্রমিত হচ্ছেন। ওই তরুণ কিশোর-কিশোরীদের সতর্ক হতে হবে। তাদের কারণে যেন বয়স্করা মৃত্যুবরণ না করেন। সিটি করপোরেশন এলাকার আশপাশে আমাদের সংক্রমণের হার ৮০-৯০ শতাংশ। সেজন্য মৃত্যুর হারও ৮০-৯০ শতাংশ। কাজেই এসব জায়গায় যারা বাস করেন, তাদেরকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বেশ কিছুদিন যাবত আমাদের দেশের করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। আমরা হিমশিম খাচ্ছিলাম রোগী রাখার জন্য। আমাদের সবার তড়িৎ সিদ্ধান্তে আমাদের সচিব, ডিজি, সবাই একযোগে কাজ করলাম এবং আমাদের ঢাকায় যে আড়াই হাজার বেড ছিল, সেটি বৃদ্ধি করে অল্প সময়েই আমরা সাড়ে ৫ হাজার বেডে উন্নীত করলাম। আমরা দেখছি, কয়েকদিন যাবত রোগী কমে আসছে। ঢাকা শহরের সব হাসপাতাল মিলে প্রায় অর্ধেক বেড খালি। তার পেছনে জনগণের সচেতনতা ও মাস্ক পড়া বেড়েছে। লকডাউনের কারণে যাতায়াত কম হচ্ছে, সব মিলিয়ে এটা কমেছে। কিন্তু বাড়তে সময় লাগে না। যদি আমরা বেপরোয়াভাবে চলি, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখি, মাস্ক না পরি, তাহলে আবারও এটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতের মতো অবস্থা আমরা বাংলাদেশে কামনা করি না। ইতোমধ্যে আমরা ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছি। লকডাউন সবসময় দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ, এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, মানুষ গরিব হয়ে যায়, সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয়। লকডাউন একটি সার্বক্ষণিক বিষয় হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘শপিং সেন্টারগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু একটা বিশেষ নির্দেশনাও আছে। একটা লম্বা সময় দেওয়া হয়েছে যাতে ভিড় না হয়। সেখানে আমাদেরই দায়িত্ব মাস্ক পরে যাওয়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করা। শপিং করা না করা এটা আমাদের নিজেদের বিষয়। আমরা সেই ভিড়ের মধ্যে যাবো কিনা সেটা আমাদের ওপর নির্ভর করে। কাজেই আমরা ঝুঁকি নেবো কিনা এবং আমাদের পরিবারকে সেই ঝুঁকিতে ফেলবো কিনা, এটা আমাদের ওপরে অনেকটা নির্ভর করে। কাজেই আমি মনে করি, এই বিষয়ে আমাদের সবারই কাজগুলো সচেতন হয়ে করা দরকার।’
ভ্যাকসিনের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের সঙ্গেও আমরা চিঠি আদান-প্রদান করেছি। অল্প সময়ের মধ্যে হয়তো আমরা চীনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবো। সেটি এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছায়নি। আশা করি, অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে। ভারতের সঙ্গেও আমাদের কথাবার্তা চলছে, যাতে ভ্যাকসিন আমরা তাড়াতাড়ি পাই।’
আমাদের যে পরিমাণ অক্সিজেন আছে তা যথেষ্ট উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত থেকে গত এক সপ্তাহ যাবত অক্সিজেন পাচ্ছি না। কিন্তু আমরা তা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, লিকুইড অক্সিজেনের পাশাপাশি আমরা গ্যাস অক্সিজেন সরবরাহ করছি। তাছাড়া মজুতেরও ব্যবস্থা করেছি। এখন আমরা ভালো আছি, তবে আমরা চাই না, রোগী আরও ৩ গুণ বেড়ে যাক। তখন কিন্তু সমস্যার পড়ে যাবো। আমাদের সংক্রমণের হার ২৪ শতাংশে উঠে গিয়েছিল, সেটা এখন ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। এটা অনেকটা আশার আলো যে, কমছে। আমরা চাই, এটা আরও কমুক, মৃত্যুর হারও কমে আসুক।’