ঢাকা ০২:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

ঢাবির ফার্মাসি অনুষদের ব্যাংক হিসাব থেকে ১১ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ

  • আপডেট সময় : ০২:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মাসি অনুষদের দুটি ব্যাংক হিসাবের চেক বই চুরি করে ১০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। এ অর্থ কীভাবে চুরি হলো, কে বা কারা সরাল, তা তদন্তে তিন সপ্তাহ আগে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
অনুষদ থেকে পাওয়া নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় পরিচালিত ফার্মাসি অনুষদের উন্নয়ন তহবিলের হিসাব থেকে ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আর ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফার্মাসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব থেকে ৩ লাখ টাকা সরানো হয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এ অর্থ সরানো হয়। চেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে অনুষদের সদ্য সাবেক ডিন এস এম আবদুর রহমানের সই। তাঁর দাবি, সই নকল করা হয়েছে।
চুরির বিষয়টি নজরে আসার পর ১০ জানুয়ারি ফার্মাসি বিভাগের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন তৎকালীন ডিন আবদুর রহমান। ১৩ জানুয়ারি ডিন নির্বাচন হওয়ার পর তিনি এখন সদ্য সাবেক ডিন। তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন দেয়নি। কারণ, হিসেবে কমিটি বলেছে, করোনায় তদন্তে দেরি হচ্ছে। শিগগিরই প্রতিবেদন দেওয়া হবে। অধ্যাপক আবদুর রহমান বলছেন, চুরির বিষয়টি নজরে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কমিটি করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হলেও তা শেষ হয়নি। তাঁর দাবি, তদন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিলম্বিত করা হচ্ছে।
এস এম আবদুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার স্বাক্ষর নকল করা হয়েছে। কে এই চুরির সঙ্গে জড়িত, তা আমরা ধারণা করতে পেরেছি। অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদরাও জানেন। তবু তদন্ত কমিটি করা হয়। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে প্রধান করেই তদন্ত কমিটি করা হয়। আমি ডিন থাকাবস্থায় ফার্মাসি বিভাগে পছন্দের ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন অধ্যাপক ফিরোজরা। এতে অনুষদে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে বলে আমি বিরোধিতা করেছিলাম। আমি সাবেক ডিন হওয়ার পর তাঁরা এক হয়ে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।’
তবে কমিটির প্রধান ফিরোজ আহমেদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা করে তদন্ত দীর্ঘায়িত করার অভিযোগটি একেবারে ঠিক নয়।
অধ্যাপক আবদুর রহমান এ কথা কেন বললেন, বুঝতে পারছি না। তদন্ত কমিটি হওয়ার পরপরই ডিন নির্বাচন হয়। নতুন ডিন দায়িত্ব নেন। এর মধ্যে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন। এ কারণে আমরা বসতে পারিনি। অধ্যাপক আবদুর রহমানও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমরা তাঁর বক্তব্য পেয়েছি গত বৃহস্পতিবার। সব মিলিয়ে তদন্ত পিছিয়ে গেছে।’ তবে ইতিমধ্যে তদন্তের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে এবং শিগগির তাঁরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন কমিটির প্রধান।
ফিরোজ আহমেদ আরও বলেন, ‘যেসব চেকের মাধ্যমে টাকা ওঠানো হয়েছে, সেগুলোর প্রতিলিপি সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাক্ষরগুলো কার সঙ্গে মিলছে, তা জানার জন্য ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের এগুলো দেখাতে হবে। আমরা উচ্চপর্যায়ের আরেকটি তদন্ত কমিটি ও নিয়মিত মামলা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করব। মামলা ও ফরেনসিক প্রতিবেদন—দুই দিক থেকে দেখা হলে ঘটনার পূর্বাপর তথ্য বেরিয়ে আসবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্মাসি অনুষদের ডিন সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেছেন, তিনি আশা করছেন, তদন্ত কমিটি দ্রুতই তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। এমন একটি ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে আশা তাঁর।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঢাবির ফার্মাসি অনুষদের ব্যাংক হিসাব থেকে ১১ লাখ টাকা চুরির অভিযোগ

আপডেট সময় : ০২:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মাসি অনুষদের দুটি ব্যাংক হিসাবের চেক বই চুরি করে ১০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। এ অর্থ কীভাবে চুরি হলো, কে বা কারা সরাল, তা তদন্তে তিন সপ্তাহ আগে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
অনুষদ থেকে পাওয়া নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় পরিচালিত ফার্মাসি অনুষদের উন্নয়ন তহবিলের হিসাব থেকে ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা আর ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফার্মাসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব থেকে ৩ লাখ টাকা সরানো হয়েছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এ অর্থ সরানো হয়। চেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে অনুষদের সদ্য সাবেক ডিন এস এম আবদুর রহমানের সই। তাঁর দাবি, সই নকল করা হয়েছে।
চুরির বিষয়টি নজরে আসার পর ১০ জানুয়ারি ফার্মাসি বিভাগের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন তৎকালীন ডিন আবদুর রহমান। ১৩ জানুয়ারি ডিন নির্বাচন হওয়ার পর তিনি এখন সদ্য সাবেক ডিন। তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন দেয়নি। কারণ, হিসেবে কমিটি বলেছে, করোনায় তদন্তে দেরি হচ্ছে। শিগগিরই প্রতিবেদন দেওয়া হবে। অধ্যাপক আবদুর রহমান বলছেন, চুরির বিষয়টি নজরে আসার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কমিটি করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হলেও তা শেষ হয়নি। তাঁর দাবি, তদন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিলম্বিত করা হচ্ছে।
এস এম আবদুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার স্বাক্ষর নকল করা হয়েছে। কে এই চুরির সঙ্গে জড়িত, তা আমরা ধারণা করতে পেরেছি। অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদরাও জানেন। তবু তদন্ত কমিটি করা হয়। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে প্রধান করেই তদন্ত কমিটি করা হয়। আমি ডিন থাকাবস্থায় ফার্মাসি বিভাগে পছন্দের ব্যক্তিদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন অধ্যাপক ফিরোজরা। এতে অনুষদে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে বলে আমি বিরোধিতা করেছিলাম। আমি সাবেক ডিন হওয়ার পর তাঁরা এক হয়ে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন।’
তবে কমিটির প্রধান ফিরোজ আহমেদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা করে তদন্ত দীর্ঘায়িত করার অভিযোগটি একেবারে ঠিক নয়।
অধ্যাপক আবদুর রহমান এ কথা কেন বললেন, বুঝতে পারছি না। তদন্ত কমিটি হওয়ার পরপরই ডিন নির্বাচন হয়। নতুন ডিন দায়িত্ব নেন। এর মধ্যে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন। এ কারণে আমরা বসতে পারিনি। অধ্যাপক আবদুর রহমানও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমরা তাঁর বক্তব্য পেয়েছি গত বৃহস্পতিবার। সব মিলিয়ে তদন্ত পিছিয়ে গেছে।’ তবে ইতিমধ্যে তদন্তের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে এবং শিগগির তাঁরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন কমিটির প্রধান।
ফিরোজ আহমেদ আরও বলেন, ‘যেসব চেকের মাধ্যমে টাকা ওঠানো হয়েছে, সেগুলোর প্রতিলিপি সংগ্রহ করা হয়েছে। স্বাক্ষরগুলো কার সঙ্গে মিলছে, তা জানার জন্য ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের এগুলো দেখাতে হবে। আমরা উচ্চপর্যায়ের আরেকটি তদন্ত কমিটি ও নিয়মিত মামলা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করব। মামলা ও ফরেনসিক প্রতিবেদন—দুই দিক থেকে দেখা হলে ঘটনার পূর্বাপর তথ্য বেরিয়ে আসবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্মাসি অনুষদের ডিন সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেছেন, তিনি আশা করছেন, তদন্ত কমিটি দ্রুতই তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। এমন একটি ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে আশা তাঁর।