নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের পুকুরে গোসলে নেমে পানিতে ডুবে পলাশ আহমেদ নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। এদিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাশিদুল ইসলাম (৪০) পুকুরে ডুবে মারা গেছেন।
গতকাল রোববার দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পলাশ আহমেদের মৃত্যু হয়। জানা গেছে, রোববার দুপুরে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের পুকুরে গোসলে নেমে ডুবে যান পলাশ আহমেদ। প্রায় ২৫ মিনিট পর তাকে উদ্ধার করতে আসে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল। এর আগেই তার বন্ধু ও হলের শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। দ্রুত তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তবে দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে তিনি মারা যান। নিহতের বন্ধু সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই মিলে পুকুরে গোসল করছিলাম। এসময় পলাশ হঠাৎ পানিতে তলিয়ে যান। পরে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানে তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন, পলাশ জামালপুরের মাদারগঞ্জ থানার সদরাবাড়ি গ্রামের মো. আতাউর রহমানের সন্তান। তিনি ঢাবির শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ৩০১৪ নম্বর রুমে থাকতেন। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘হলের পুকুরে এক শিক্ষার্থী গোসলে নেমে ডুবে যায়। তার বন্ধু ও হলের শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জানা গেছে, পলাশের মরদেহ বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢামেক হাসপাতাল থেকে ঢাবির সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে তার মরদেহ নেওয়া হবে গ্রামের বাড়ি জামালপুরে।
সাতক্ষীরায় পুকুরে তলিয়ে গেলেন এসআই : এদিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাশিদুল ইসলাম (৪০) পুকুরে ডুবে মারা গেছেন। রোববার সকাল ১০টার দিকে থানা এলাকার ভেতরের পুকুরে গোসল করতে নেমে সাঁতার কাটতে কাটতে তলিয়ে যান তিনি। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। তিনি দুই মাস আগে কুষ্টিয়ার খোকসা থানা থেকে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানায় যোগ দেন। রাশিদুল ইসলামের বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পোপালনগর গ্রামে। কলারোয়া থানার এসআই জসিমউদ্দিন বলেন, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাশিদুল ইসলাম পুকুরে গোসল করতে নামেন। তিনি পুকুরে সাঁতার কাটতে কাটতে তলিয়ে যান। ঘটনা জানার পর অন্য পুলিশ সদস্যরা পুকুরে নেমে তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তাঁকে উদ্ধার করতে না পেরে কলারোয়া ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে তাঁকে সকাল ১০টার দিকে উদ্ধার করেন। কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল সোয়া ১০টার দিকে পুকুর থেকে উদ্ধার করে রাশিদুল ইসলামকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। তবে এখানে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কলারোয়া ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দলের প্রধান মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, থানার পুকুর থেকে এসআই রাশিদুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দীন মৃধা পুকুরের পানিতে ডুবে রাশিদুল ইসলামের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রাশিদুল হৃদ্রোগে ভুগছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, পুকুরে সাঁতার কাটার সময় তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ডুবে যান। তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। গত ২৩ মার্চ তিনি কলারোয়া থানায় যোগ দেন। তাঁর মরদেহ মেহেরপুরে তাঁর বাড়িতে পাঠানো হবে।
ঢাবিতে পুকুরে ডুবে শিক্ষার্থী ও সাতক্ষীরায় এসআইয়ের মৃত্যু
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ