ঢাকা ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

ঢাকা শহরে এক পরিবারের খাবার কেনায় খরচ মাসে ২২,৪২১ টাকা

  • আপডেট সময় : ০১:২৭:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক ডেস্ক : মাছ-মাংস না খেয়েও ঢাকা শহরের ৪ সদস্যের এক পরিবারকে মাসে এখন খাবার কিনতে গড়ে ৯ হাজার ৫৯ টাকা খরচ করতে হয়। আর মাছ-মাংস খেলে ওই পরিবারের খাবারে খরচ হয় ২২ হাজার ৪২১ টাকা। এটি চলতি অক্টোবর মাসের হিসাব। গত পৌনে চার বছরে খাবার কেনায় ওই সব পরিবারের খাবার খরচ ২৭ থেকে ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। মূল্যস্ফীতির চাপ বোঝাতে সিপিডি ঢাকা শহরের পরিবারের খাবার কেনার খরচ কত বাড়ছে, এর উদাহরণ দিতে এ হিসাব দিয়েছে। ধানমন্ডির সিপিডি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাচ্ছে। শুধু আমদানি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নয়; দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। এটা মানুষের ওপর বোঝা হয়ে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতির লাগামহীন অবস্থা। ফলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বিঘিœত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘খাদ্যসংকটের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বলছে, ভবিষ্যতে বিশ্বের ৪২টি দেশে খাদ্যসংকট হতে পারে। এই তালিকায় বাংলাদেশ আছে।’ মূল্যস্ফীতি চাপ কমাতে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুপারিশ করেন ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ চাপে আছে। সিপিডি আরও বলছে, মূল্যস্ফীতির তুলনায় মজুরি বৃদ্ধির হার কম। মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি, আর ৫ শতাংশ হারে মজুরি বাড়ছে। সিপিডি দেখিয়েছে, এত কম হারে মজুরি বাড়লে বিভিন্ন খাতের শ্রমিকেরা মাছ-মাংস না খেয়েও সংসার চালাতে পারবেন না। তাঁদের ন্যূনতম মজুরি চেয়ে খাবার খরচের বেশি। এ তালিকায় আছে তৈরি পোশাক, হোটেল-রেস্তোরাঁ, প্রসাধনী, দরজি, বেকারি, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ, প্লাস্টিক, চালকল, চামড়া ও পাদুকা খাতের শ্রমিকেরা। সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, খাদ্য একটি রাজনৈতিক পণ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্যপণ্য কেনায় সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, নিজের মজুত নিশ্চিত না করে কোনো দেশ পণ্য রপ্তানি করতে চাইবে না। তাই ভবিষ্যতে ডলার থাকলেও বিশ্ববাজারে পর্যাপ্ত খাদ্যপণ্য না-ও থাকতে পারে। অর্থনীতিতে সাতটি সংকট আছে বলে মনে করে সিপিডি। এই সংকটগুলো হলো মূল্যস্ফীতি, ডলার, খাদ্য, জ্বালানি, ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন। সিপিডি বলছে, এ সংকট মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগগুলো সঠিক, কিন্তু পর্যাপ্ত নয়। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘২০২৩ সালেও এ সংকট থেকে মুক্তি পাব না। বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এক বছরের মধ্যে পরিত্রাণ পাব-এটা আশা করা যায় না।’

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা শহরে এক পরিবারের খাবার কেনায় খরচ মাসে ২২,৪২১ টাকা

আপডেট সময় : ০১:২৭:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২

অর্থনৈতিক ডেস্ক : মাছ-মাংস না খেয়েও ঢাকা শহরের ৪ সদস্যের এক পরিবারকে মাসে এখন খাবার কিনতে গড়ে ৯ হাজার ৫৯ টাকা খরচ করতে হয়। আর মাছ-মাংস খেলে ওই পরিবারের খাবারে খরচ হয় ২২ হাজার ৪২১ টাকা। এটি চলতি অক্টোবর মাসের হিসাব। গত পৌনে চার বছরে খাবার কেনায় ওই সব পরিবারের খাবার খরচ ২৭ থেকে ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। মূল্যস্ফীতির চাপ বোঝাতে সিপিডি ঢাকা শহরের পরিবারের খাবার কেনার খরচ কত বাড়ছে, এর উদাহরণ দিতে এ হিসাব দিয়েছে। ধানমন্ডির সিপিডি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাচ্ছে। শুধু আমদানি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নয়; দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। এটা মানুষের ওপর বোঝা হয়ে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতির লাগামহীন অবস্থা। ফলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বিঘিœত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘খাদ্যসংকটের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বলছে, ভবিষ্যতে বিশ্বের ৪২টি দেশে খাদ্যসংকট হতে পারে। এই তালিকায় বাংলাদেশ আছে।’ মূল্যস্ফীতি চাপ কমাতে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুপারিশ করেন ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ চাপে আছে। সিপিডি আরও বলছে, মূল্যস্ফীতির তুলনায় মজুরি বৃদ্ধির হার কম। মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি, আর ৫ শতাংশ হারে মজুরি বাড়ছে। সিপিডি দেখিয়েছে, এত কম হারে মজুরি বাড়লে বিভিন্ন খাতের শ্রমিকেরা মাছ-মাংস না খেয়েও সংসার চালাতে পারবেন না। তাঁদের ন্যূনতম মজুরি চেয়ে খাবার খরচের বেশি। এ তালিকায় আছে তৈরি পোশাক, হোটেল-রেস্তোরাঁ, প্রসাধনী, দরজি, বেকারি, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ, প্লাস্টিক, চালকল, চামড়া ও পাদুকা খাতের শ্রমিকেরা। সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, খাদ্য একটি রাজনৈতিক পণ্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্যপণ্য কেনায় সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, নিজের মজুত নিশ্চিত না করে কোনো দেশ পণ্য রপ্তানি করতে চাইবে না। তাই ভবিষ্যতে ডলার থাকলেও বিশ্ববাজারে পর্যাপ্ত খাদ্যপণ্য না-ও থাকতে পারে। অর্থনীতিতে সাতটি সংকট আছে বলে মনে করে সিপিডি। এই সংকটগুলো হলো মূল্যস্ফীতি, ডলার, খাদ্য, জ্বালানি, ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন। সিপিডি বলছে, এ সংকট মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগগুলো সঠিক, কিন্তু পর্যাপ্ত নয়। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘২০২৩ সালেও এ সংকট থেকে মুক্তি পাব না। বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এক বছরের মধ্যে পরিত্রাণ পাব-এটা আশা করা যায় না।’