ঢাকা ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫

ঢাকা লিগ ও বিপিএল যেভাবে বদলে দিয়েছে ইংল্যান্ডের মালানকে

  • আপডেট সময় : ১২:১৫:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : জাতীয় দলের জার্সিতে মিরপুর শের-ই-বাংলায় প্রথম খেলার আগেই ২৭ ম্যাচ খেলে ফেলেছিলেন ডেভিড মালান। তাইতো মিরপুরের সবকিছুই তার নখদর্পনে। বাটলার, ভিঞ্চ, সল্টরা যখন অচেনা উইকেট, বিরুদ্ধ কন্ডিশনে নাকানিচুবানি খাচ্ছিলেন তখন মালান সিদ্ধহস্তে সামলে নিয়েছেন সকল প্রতিকূলতা। মিরপুরের উইকেট সম্পর্কে তার মূল্যায়ন শুনলে অবাকই হবেন, ‘উইকেটে শিশির প্রভাব রাখছিল এবং বল সে কারণে স্কিড করছিল। আমরা দ্রুত খেলা শুরু করেছি কারণ জানতাম এখানে শিশির প্রভাব রাখে। জানতাম শেষ দিকে এসে ব্যাটিং করা সহজ হবে যদি আপনি ম্যাচে থাকেন। আমার চেষ্টাই ছিল যতটা সম্ভব নিজেকে লড়াইয়ে রাখা এবং শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা।’ মালানকে মিরপুরের এমন উইকেট সম্পর্কে মূল্যায়নের সুযোগ করে দিয়েছে ঢাকা লিগ ও বিপিএল। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ঢাকা লিগে প্রথম খেলতে আসেন মালান। প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে খেলেন ৮ ম্যাচ। পরের মৌসুমেও একই দলের হয়ে ১৬ ইনিংস খেলেন। ঢাকা লিগে দুই মৌসুমে ২৪ ম্যাচে ৯০২ রান করার অভিজ্ঞতা চাট্টেখানি কথা নয়। যেখানে ছিল ১ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটি। এছাড়া ২০১৬ থেকে বিপিএলেও খেলেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, কুমিল্লা ওয়ারির্স, খুলনা টাইটান্স ও বরিশাল বুলসে খেলেছেন। যেখানে ২৮ ম্যাচে তার রান ৮৬৯। রয়েছে ১ সেঞ্চুরি, ৫ ফিফটি।
বাংলাদেশের মাটিতে এমন পারফরম্যান্সের সুবাদে মিরপুরে রান করার সহজ পথ খুঁজে পেয়েছেন মালান। ২১০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তার ১১৪ রানের ঝকঝকে ইনিংসে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জিতেছে ইংল্যান্ড। মাত্র ৩ উইকেটে জিতলেও দলের জয়ে অবদান রাখতে পারায় দারুণ খুশি ১৬তম ওয়ানডে খেলতে নামা মালান। ‘ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা সব সময়ই আনন্দের। আমি ২০১৭ সাল থেকে দলটির সঙ্গে আছি এবং পানি টানছিলাম। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। মাত্রই ১৬টি ওয়ানডে খেলেছি। বেশ ভালো লাগছে যে আমি রান পাচ্ছি। খুবই ভালো লাগছে। দলের জয়ে অবদান রাখতে পারা বেশ আনন্দের। আমার জন্য রান তাড়া করে, চাপের মুহূর্তে ব্যাটিং করে জয়টা তুলে নেওয়াটাই মুখ্য। আমি পরিসংখ্যানের থেকে নিজের রান বেশি উপভোগ করি। নিজের গর্ব খুঁজে পাই।’ বাংলাদেশে খেলার আমন্ত্রণ যখনই পেয়েছেন তখনই লুফে নিয়েছেন মালান। নিজের সামর্থ্যকে ছাড়িয়ে নতুন কিছু পাওয়ার তাড়ণাতেই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বড় নাম। নিজের দলের আস্থার প্রতীক।
‘আপনি যখন ভিন্ন কন্ডিশনে খেলেন তখন আপনার খেলার উন্নতি হয়। আপনি পূর্বে সফল হয়েছেন কিনা হননি সেটা আসলে বড় বিষয় নয়। আপনি ভিন্ন কন্ডিশন সম্পর্কে সবটা জানছেন সেটাই আসল। আমার এখানে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এখানে শুরুটা সহজ হবে না কখনোই। আপনাকে নিজের প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস রাখতে হবে। কঠিন পরিস্থিতিতে আস্থা রাখতে হবে।’ বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে যুক্ত হওয়ার স্মৃতি আজও তরতাজা তার স্মৃতিতে,‘ওয়াইজ শাহ আমাকে মেসেজ করেছিল। বলেছিল, রবি বোপারা চাচ্ছিল প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলি। পরপর দুই মৌসুম তাদের হয়ে খেলি যা আমার খেলায় দারুণ উন্নতি করেছিল। ইংল্যান্ডে আপনাকে বল স্কয়ারে খেলতে হয়। কিন্তু এখানে দিনের বেলায় বল স্কিড করে। দিন যত গড়ায় উইকেট তত ভালো হয়। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে হলে আমাকে স্পিনে ভালো খেলতে হতো। বলার অপেক্ষা রাখে না এখানে খেলার কারণে এবং ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের কারণে আমি উন্নতি করতে পেরেছি।’ খোলস থেকে বেরিয়ে নিজের খেলায় উন্নতি আনার পেছনে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের কৃতিত্বও দিলেন মালান। সঙ্গে জানিয়ে রাখলেন, আজকের ১১৪ রানের ইনিংসটি ক্যারিয়ারের সেরা। ‘আমি মনে করি ঘরোয়া ক্রিকেটে আপনি যখন রান করেন অবশ্যই সেখানে স্বস্তি খুঁজে পান। ব্যাটসম্যান হিসেবে আনন্দ সেখানেই। ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী সেখানে যাওয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকা বিরাট কিছু। আমি বলবো আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস হয়ে থাকবে আজকের ইনিংস।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা লিগ ও বিপিএল যেভাবে বদলে দিয়েছে ইংল্যান্ডের মালানকে

আপডেট সময় : ১২:১৫:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩

ক্রীড়া ডেস্ক : জাতীয় দলের জার্সিতে মিরপুর শের-ই-বাংলায় প্রথম খেলার আগেই ২৭ ম্যাচ খেলে ফেলেছিলেন ডেভিড মালান। তাইতো মিরপুরের সবকিছুই তার নখদর্পনে। বাটলার, ভিঞ্চ, সল্টরা যখন অচেনা উইকেট, বিরুদ্ধ কন্ডিশনে নাকানিচুবানি খাচ্ছিলেন তখন মালান সিদ্ধহস্তে সামলে নিয়েছেন সকল প্রতিকূলতা। মিরপুরের উইকেট সম্পর্কে তার মূল্যায়ন শুনলে অবাকই হবেন, ‘উইকেটে শিশির প্রভাব রাখছিল এবং বল সে কারণে স্কিড করছিল। আমরা দ্রুত খেলা শুরু করেছি কারণ জানতাম এখানে শিশির প্রভাব রাখে। জানতাম শেষ দিকে এসে ব্যাটিং করা সহজ হবে যদি আপনি ম্যাচে থাকেন। আমার চেষ্টাই ছিল যতটা সম্ভব নিজেকে লড়াইয়ে রাখা এবং শেষ পর্যন্ত টিকে থাকা।’ মালানকে মিরপুরের এমন উইকেট সম্পর্কে মূল্যায়নের সুযোগ করে দিয়েছে ঢাকা লিগ ও বিপিএল। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ঢাকা লিগে প্রথম খেলতে আসেন মালান। প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে খেলেন ৮ ম্যাচ। পরের মৌসুমেও একই দলের হয়ে ১৬ ইনিংস খেলেন। ঢাকা লিগে দুই মৌসুমে ২৪ ম্যাচে ৯০২ রান করার অভিজ্ঞতা চাট্টেখানি কথা নয়। যেখানে ছিল ১ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটি। এছাড়া ২০১৬ থেকে বিপিএলেও খেলেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, কুমিল্লা ওয়ারির্স, খুলনা টাইটান্স ও বরিশাল বুলসে খেলেছেন। যেখানে ২৮ ম্যাচে তার রান ৮৬৯। রয়েছে ১ সেঞ্চুরি, ৫ ফিফটি।
বাংলাদেশের মাটিতে এমন পারফরম্যান্সের সুবাদে মিরপুরে রান করার সহজ পথ খুঁজে পেয়েছেন মালান। ২১০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তার ১১৪ রানের ঝকঝকে ইনিংসে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জিতেছে ইংল্যান্ড। মাত্র ৩ উইকেটে জিতলেও দলের জয়ে অবদান রাখতে পারায় দারুণ খুশি ১৬তম ওয়ানডে খেলতে নামা মালান। ‘ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা সব সময়ই আনন্দের। আমি ২০১৭ সাল থেকে দলটির সঙ্গে আছি এবং পানি টানছিলাম। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। মাত্রই ১৬টি ওয়ানডে খেলেছি। বেশ ভালো লাগছে যে আমি রান পাচ্ছি। খুবই ভালো লাগছে। দলের জয়ে অবদান রাখতে পারা বেশ আনন্দের। আমার জন্য রান তাড়া করে, চাপের মুহূর্তে ব্যাটিং করে জয়টা তুলে নেওয়াটাই মুখ্য। আমি পরিসংখ্যানের থেকে নিজের রান বেশি উপভোগ করি। নিজের গর্ব খুঁজে পাই।’ বাংলাদেশে খেলার আমন্ত্রণ যখনই পেয়েছেন তখনই লুফে নিয়েছেন মালান। নিজের সামর্থ্যকে ছাড়িয়ে নতুন কিছু পাওয়ার তাড়ণাতেই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বড় নাম। নিজের দলের আস্থার প্রতীক।
‘আপনি যখন ভিন্ন কন্ডিশনে খেলেন তখন আপনার খেলার উন্নতি হয়। আপনি পূর্বে সফল হয়েছেন কিনা হননি সেটা আসলে বড় বিষয় নয়। আপনি ভিন্ন কন্ডিশন সম্পর্কে সবটা জানছেন সেটাই আসল। আমার এখানে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এখানে শুরুটা সহজ হবে না কখনোই। আপনাকে নিজের প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস রাখতে হবে। কঠিন পরিস্থিতিতে আস্থা রাখতে হবে।’ বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে যুক্ত হওয়ার স্মৃতি আজও তরতাজা তার স্মৃতিতে,‘ওয়াইজ শাহ আমাকে মেসেজ করেছিল। বলেছিল, রবি বোপারা চাচ্ছিল প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলি। পরপর দুই মৌসুম তাদের হয়ে খেলি যা আমার খেলায় দারুণ উন্নতি করেছিল। ইংল্যান্ডে আপনাকে বল স্কয়ারে খেলতে হয়। কিন্তু এখানে দিনের বেলায় বল স্কিড করে। দিন যত গড়ায় উইকেট তত ভালো হয়। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে হলে আমাকে স্পিনে ভালো খেলতে হতো। বলার অপেক্ষা রাখে না এখানে খেলার কারণে এবং ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের কারণে আমি উন্নতি করতে পেরেছি।’ খোলস থেকে বেরিয়ে নিজের খেলায় উন্নতি আনার পেছনে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের কৃতিত্বও দিলেন মালান। সঙ্গে জানিয়ে রাখলেন, আজকের ১১৪ রানের ইনিংসটি ক্যারিয়ারের সেরা। ‘আমি মনে করি ঘরোয়া ক্রিকেটে আপনি যখন রান করেন অবশ্যই সেখানে স্বস্তি খুঁজে পান। ব্যাটসম্যান হিসেবে আনন্দ সেখানেই। ম্যাচ পরিস্থিতি অনুযায়ী সেখানে যাওয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকা বিরাট কিছু। আমি বলবো আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস হয়ে থাকবে আজকের ইনিংস।’