ঢাকা ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা মেডিকেলে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৬ বেওয়ারিশ লাশ

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলের সদস্যরা শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফটকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষিত ছয়টি বেওয়ারিশ লাশের তথ্য সামনে এনেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেল। খবর পাওয়ার পর ঢাকা মেডিকেলের মর্গে যায় বিশেষ সেলের একটি দল। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বেওয়ারিশ লাশগুলো শনাক্ত করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায় বিশেষ সেল।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফটকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলের সদস্যরা। সেখানে বেওয়ারিশ লাশের বিষয়ে সাংবাদিকদের তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন বিশেষ সেল সম্পাদক হাসান ইনাম। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশেষ সেল তার রুটিন ওয়ার্ক (নিয়মিত কাজ) করতে গিয়ে গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ছয়টি বেওয়ারিশ লাশের কথা জানতে পারে। এরপর আজ সকালে সেলের একটি দল শাহবাগ থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুরের সঙ্গে কথা বলে ছয়টি লাশ হিমাগারে থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়। লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মর্গে আছে বলে ওসি জানান। পরে বিশেষ সেলের দলটি সরেজমিনে মর্গ পরিদর্শন করে।

৬টি লাশের বিষয়ে হাসান ইমাম জানান, লাশগুলো হলো অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২০), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২৫), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২২), অজ্ঞাতনামা নারী (৩২) ও অজ্ঞাতনামা পুরুষ (৩০)। আরকেজনের নাম এনামুল (২৫), তবে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। লাশগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, মৃতদেহগুলোর ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। শাহবাগ থানা থেকে বলা হয়েছে, লাশগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের।

লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসান ইনাম বলেন, ‘শাহবাগ থানা থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, তারা দেশের বিভিন্ন থানায় ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছে, বিভিন্নভাবে খোঁজার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা খুঁজে পায়নি। থানা থেকে আমাদের জানিয়েছে, আমরা যেন এটা ভালোভাবে প্রচার করি, যেন শহীদদের পরিবার লাশগুলো খুঁজে পায়।’

পরে বিশেষ সেলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লাশগুলোর ময়নাতদন্তে পাঁচজনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘আঘাতজনিত মৃত্যু’। এনামুলের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘ওপর থেকে নিচে পড়ে মৃত্যু’।

অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বেওয়ারিশ লাশগুলোকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উল্লিখিত বয়সের কেউ যদি নিখোঁজ থাকেন, তবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যোগাযোগের নম্বর: ০১৬২১৩২৪১৮৭।

সেলের অন্যতম সদস্য নাফিসা ইসলাম সাকাফি বলেন, ‘আজ সকালে লাশগুলো দেখে আমাদের মনে হয়েছে, এসব ব্যক্তি গুলির কারণে শহীদ হয়েছেন। আমরা চাই, এটার সুষ্ঠু ময়নাতদন্ত হোক।’

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, ছয়টি লাশ ৫ আগস্টের পর থেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ এসে দেখে যান, কিন্তু কেউ এখন পর্যন্ত লাশগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি। কেউ শনাক্ত করেন কি না, তা দেখার জন্য লাশগুলো আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে দেওয়া হয়নি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘মাইনাস টু’ আশা কখনো পূরণ হবে না

ঢাকা মেডিকেলে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৬ বেওয়ারিশ লাশ

আপডেট সময় : ০৮:৫৫:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষিত ছয়টি বেওয়ারিশ লাশের তথ্য সামনে এনেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেল। খবর পাওয়ার পর ঢাকা মেডিকেলের মর্গে যায় বিশেষ সেলের একটি দল। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বেওয়ারিশ লাশগুলো শনাক্ত করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায় বিশেষ সেল।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফটকে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলের সদস্যরা। সেখানে বেওয়ারিশ লাশের বিষয়ে সাংবাদিকদের তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন বিশেষ সেল সম্পাদক হাসান ইনাম। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশেষ সেল তার রুটিন ওয়ার্ক (নিয়মিত কাজ) করতে গিয়ে গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ছয়টি বেওয়ারিশ লাশের কথা জানতে পারে। এরপর আজ সকালে সেলের একটি দল শাহবাগ থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুরের সঙ্গে কথা বলে ছয়টি লাশ হিমাগারে থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়। লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মর্গে আছে বলে ওসি জানান। পরে বিশেষ সেলের দলটি সরেজমিনে মর্গ পরিদর্শন করে।

৬টি লাশের বিষয়ে হাসান ইমাম জানান, লাশগুলো হলো অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২০), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২৫), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২২), অজ্ঞাতনামা নারী (৩২) ও অজ্ঞাতনামা পুরুষ (৩০)। আরকেজনের নাম এনামুল (২৫), তবে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। লাশগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, মৃতদেহগুলোর ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। শাহবাগ থানা থেকে বলা হয়েছে, লাশগুলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের।

লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসান ইনাম বলেন, ‘শাহবাগ থানা থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, তারা দেশের বিভিন্ন থানায় ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছে, বিভিন্নভাবে খোঁজার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা খুঁজে পায়নি। থানা থেকে আমাদের জানিয়েছে, আমরা যেন এটা ভালোভাবে প্রচার করি, যেন শহীদদের পরিবার লাশগুলো খুঁজে পায়।’

পরে বিশেষ সেলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লাশগুলোর ময়নাতদন্তে পাঁচজনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘আঘাতজনিত মৃত্যু’। এনামুলের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘ওপর থেকে নিচে পড়ে মৃত্যু’।

অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বেওয়ারিশ লাশগুলোকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উল্লিখিত বয়সের কেউ যদি নিখোঁজ থাকেন, তবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যোগাযোগের নম্বর: ০১৬২১৩২৪১৮৭।

সেলের অন্যতম সদস্য নাফিসা ইসলাম সাকাফি বলেন, ‘আজ সকালে লাশগুলো দেখে আমাদের মনে হয়েছে, এসব ব্যক্তি গুলির কারণে শহীদ হয়েছেন। আমরা চাই, এটার সুষ্ঠু ময়নাতদন্ত হোক।’

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, ছয়টি লাশ ৫ আগস্টের পর থেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ এসে দেখে যান, কিন্তু কেউ এখন পর্যন্ত লাশগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি। কেউ শনাক্ত করেন কি না, তা দেখার জন্য লাশগুলো আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে দেওয়া হয়নি।