ঢাকা ১০:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

ঢাকায় ফিরতে পদে পদে ভোগান্তি

  • আপডেট সময় : ০২:০৬:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মে ২০২১
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চলমান লকডাউন তথা বিধিনিষেধের মধ্যে ঈদে বাড়ি গেছেন লাখো মানুষ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ শেষে ঈদের পরদিন থেকেই ঢাকায় ফেরার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কর্মস্থলে ফিরতে মরিয়া মানুষ নানা কৌশলে ফিরছেন রাজধানীতে। ভোগান্তির পাশাপাশি তাদের গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি টাকা।
দূরপাল্লার গাড়ি না চললেও অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস আর প্রাইভেটকার ভাড়া করে ঢাকার পানে ছুটছেন তারা। কেউ কেউ পিকআপ ভ্যানে করেও ঢাকায় ফিরছেন। গত চার দিনের মতো বুধবারও দেশের বিভিন্ন ঘাটে ও মহাসড়কে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় আজকে ঢাকামুখী মানুষের চাপ অনেকটা কম ছিল। তারপরও যারা ফিরছেন তাদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ বাড়তি টাকা। দেশের দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা বিভিন্ন জেলার মানুষের আজও ভিড় ছিল ফেরিঘাটে। পদ্মার ঘাটে ফেরি পেলেই তাতে লাফিয়ে উঠছেন ঢাকামুখী যাত্রীরা। মহাসড়ক দিয়ে আসা মানুষও বিভিন্ন উপায়ে রাজধানীতে ফিরছেন।
এদিকে ঈদের পর থেকে রাজধানীর সড়কে মানুষ আর গণপরিবহনের চলাচল অনেকটা বেড়ে গেছে। তবে করোনাভাইরাস মহামারির আশঙ্কা আর ভয় থাকায় অধিকাংশ যানে যাত্রী সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম দেখা গেছে। ঘরে থাকা আর সামাজিক দূরত্ব মানার পরিবর্তে শুরু হয়েছে অবাধ চলাচল। নির্বিচারে মানুষের চলাফেরায় ঈদের পর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি শেষে জাজিরা থেকে ঢাকায় ফিরছেন রাশেদুল। করোনা মহামারির কারণে লঞ্চ বন্ধ থাকায় কৌশলী হয়ে ফিরতে হচ্ছে তাকে। বাড়ি থেকে ঘাট পর্যন্ত তিনবার গাড়ি পরিবর্তন করতে হয়েছে তাকে। এজন্য গুণতে হয়েছে কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া। অন্যান্য সময় বাড়ি থেকে ঘাট পর্যন্ত আসতে যেখানে তার খরচ হতো ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সেখানে আজ খরচ হয়েছে ৩০০ টাকা। ঢাকায় ফেরার বাড়ি পথেও বাড়তি ভাড়া দিয়ে যেতে হবে তাকে। রাশেদুল বলেন, অফিস খুললেও বিশেষ কাজে বাড়তি ছুটি নিয়েছি। বৃহস্পতিবার থেকে অফিসে যাবো। এজন্য আজ রওনা হয়েছি। উপায় না থাকায় বাড়তি ভাড়া দিয়েই ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।
এদিকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকার দিকে আসতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। গাজীপুরে চান্দুরা, চৌরাস্তা, বাইপাল, ঢাকার আমিনবাজার, গাবতলী, আব্দুল্লাহপুরসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ঢাকা ফেরত মানুষ দেখা গেছে। দূরপাল্লার বাস, ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা। কেউ কেউ ফিরছেন ব্যক্তিগত পরিবহনে। এক্ষেত্রে একই জেলার কয়েকজন মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করেছেন, আর তাতে করেই ফিরছেন রাজধানীতে। এক্ষেত্রে সবাই মিলে ভাড়া বহন করছেন।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শনিবার সকাল থেকেই ছিল ঢাকামুখী মানুষের ভিড়। পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যান, ট্রাকে করে ঢাকায় ফিরতে দেখা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রামে মহাসড়কের চিত্রও একই। করোনা মহামারির কারণে দূরপাল্লার সকল পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবুও ঈদকে সামনে রেখে বাড়ি যাওয়া মানুষকে ঈদ করে ফিরতে দেখা গেছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, খোলা ট্রাক, বাস যা পাচ্ছেন তাতে করেই ঢাকায় ফিরতে দেখা গেছে মানুষকে।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ঘারিন্দা, কান্দিলা, রাবনা বাইপাস, বিক্রমহাটি, রসুলপুর ও এলেঙ্গা অংশেও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানে মানুষদের ফিরতে দেখা গেছে। ঈদ শেষে রংপুর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন রফিকুল। তিনি বলেন, এত কষ্ট করে জীবনে কোনো দিন যাতায়াত করিনি। বাড়িতে বৃদ্ধ মা থাকেন। যেজন্য দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছিল। তখনো বেশ কষ্ট হয়েছিল, তবে ফেরার পথে কয়েকগুণ বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। জীবিকার তাগিদে ফিরতে হবে, তাই এমন কষ্ট করে ঢাকায় ফিরলাম।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছিনতাইয়ের শিকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বাসায় আসামির ছেলে

ঢাকায় ফিরতে পদে পদে ভোগান্তি

আপডেট সময় : ০২:০৬:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মে ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চলমান লকডাউন তথা বিধিনিষেধের মধ্যে ঈদে বাড়ি গেছেন লাখো মানুষ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ শেষে ঈদের পরদিন থেকেই ঢাকায় ফেরার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কর্মস্থলে ফিরতে মরিয়া মানুষ নানা কৌশলে ফিরছেন রাজধানীতে। ভোগান্তির পাশাপাশি তাদের গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি টাকা।
দূরপাল্লার গাড়ি না চললেও অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস আর প্রাইভেটকার ভাড়া করে ঢাকার পানে ছুটছেন তারা। কেউ কেউ পিকআপ ভ্যানে করেও ঢাকায় ফিরছেন। গত চার দিনের মতো বুধবারও দেশের বিভিন্ন ঘাটে ও মহাসড়কে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় আজকে ঢাকামুখী মানুষের চাপ অনেকটা কম ছিল। তারপরও যারা ফিরছেন তাদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ বাড়তি টাকা। দেশের দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা বিভিন্ন জেলার মানুষের আজও ভিড় ছিল ফেরিঘাটে। পদ্মার ঘাটে ফেরি পেলেই তাতে লাফিয়ে উঠছেন ঢাকামুখী যাত্রীরা। মহাসড়ক দিয়ে আসা মানুষও বিভিন্ন উপায়ে রাজধানীতে ফিরছেন।
এদিকে ঈদের পর থেকে রাজধানীর সড়কে মানুষ আর গণপরিবহনের চলাচল অনেকটা বেড়ে গেছে। তবে করোনাভাইরাস মহামারির আশঙ্কা আর ভয় থাকায় অধিকাংশ যানে যাত্রী সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম দেখা গেছে। ঘরে থাকা আর সামাজিক দূরত্ব মানার পরিবর্তে শুরু হয়েছে অবাধ চলাচল। নির্বিচারে মানুষের চলাফেরায় ঈদের পর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি শেষে জাজিরা থেকে ঢাকায় ফিরছেন রাশেদুল। করোনা মহামারির কারণে লঞ্চ বন্ধ থাকায় কৌশলী হয়ে ফিরতে হচ্ছে তাকে। বাড়ি থেকে ঘাট পর্যন্ত তিনবার গাড়ি পরিবর্তন করতে হয়েছে তাকে। এজন্য গুণতে হয়েছে কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া। অন্যান্য সময় বাড়ি থেকে ঘাট পর্যন্ত আসতে যেখানে তার খরচ হতো ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সেখানে আজ খরচ হয়েছে ৩০০ টাকা। ঢাকায় ফেরার বাড়ি পথেও বাড়তি ভাড়া দিয়ে যেতে হবে তাকে। রাশেদুল বলেন, অফিস খুললেও বিশেষ কাজে বাড়তি ছুটি নিয়েছি। বৃহস্পতিবার থেকে অফিসে যাবো। এজন্য আজ রওনা হয়েছি। উপায় না থাকায় বাড়তি ভাড়া দিয়েই ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।
এদিকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকার দিকে আসতে দেখা গেছে অনেক মানুষকে। গাজীপুরে চান্দুরা, চৌরাস্তা, বাইপাল, ঢাকার আমিনবাজার, গাবতলী, আব্দুল্লাহপুরসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ঢাকা ফেরত মানুষ দেখা গেছে। দূরপাল্লার বাস, ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা। কেউ কেউ ফিরছেন ব্যক্তিগত পরিবহনে। এক্ষেত্রে একই জেলার কয়েকজন মিলে একটি গাড়ি ভাড়া করেছেন, আর তাতে করেই ফিরছেন রাজধানীতে। এক্ষেত্রে সবাই মিলে ভাড়া বহন করছেন।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শনিবার সকাল থেকেই ছিল ঢাকামুখী মানুষের ভিড়। পণ্যবাহী পিকআপ ভ্যান, ট্রাকে করে ঢাকায় ফিরতে দেখা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রামে মহাসড়কের চিত্রও একই। করোনা মহামারির কারণে দূরপাল্লার সকল পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবুও ঈদকে সামনে রেখে বাড়ি যাওয়া মানুষকে ঈদ করে ফিরতে দেখা গেছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, খোলা ট্রাক, বাস যা পাচ্ছেন তাতে করেই ঢাকায় ফিরতে দেখা গেছে মানুষকে।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ঘারিন্দা, কান্দিলা, রাবনা বাইপাস, বিক্রমহাটি, রসুলপুর ও এলেঙ্গা অংশেও সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানে মানুষদের ফিরতে দেখা গেছে। ঈদ শেষে রংপুর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন রফিকুল। তিনি বলেন, এত কষ্ট করে জীবনে কোনো দিন যাতায়াত করিনি। বাড়িতে বৃদ্ধ মা থাকেন। যেজন্য দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছিল। তখনো বেশ কষ্ট হয়েছিল, তবে ফেরার পথে কয়েকগুণ বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। জীবিকার তাগিদে ফিরতে হবে, তাই এমন কষ্ট করে ঢাকায় ফিরলাম।