ঢাকা ০৬:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

ঢাকায় তীব্র গ্যাস সংকট

  • আপডেট সময় : ০১:১৫:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রান্নাঘরে গ্যাসের সংকটে ভুগছেন রাজধানীবাসী। রমজানের শুরুতেই ইফতার ও দ্বিতীয় দিনের সেহরিতে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সব আয়োজন থাকলেও অনেকেই নিজের মতো করে বাসা-বাড়িতে ইফতার তৈরি করতে পারেননি। কোনো কোনো জায়গায় রাত ১০টার পর লাইনে গ্যাসের চাপ কিছুটা বাড়ায় কোনোমতে রান্না করা সম্ভব হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রবিবার থেকে রাজধানীসহ দেশের অনেক জায়গায় গ্রাহকরা গ্যাস সংকটে পড়েছেন। রোববারের তুলনায় সোমবার লাইনে গ্যাসের চাপ কিছুটা বাড়লেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে রাজধানীতে গ্যাসের সমস্যা সোমবারের মধ্যে সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ মোল্লাহ।
সরেজমিনে রাজধানীর হাতিরঝিল, রামপুরা, ওয়াপদা রোড, মহানগর প্রজেক্ট, ঝিলকানন আবাসিক এলাকা, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, চকবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সংকটের চিত্র দেখা গেছে।
মহানগর প্রজেক্টের বাসিন্দা মেহেরুন নেছা বলেন, রোজার শুরুতেই গ্যাস নিয়ে মহাবিপদে পড়েছি। প্রথম রোজার ইফতার বাইরে থেকে কিনে সারতে হয়েছে। এরকম প্রতি বছর রমজান মাস এলেই গ্যাস নিয়ে জটিল সমস্যায় পড়তে হয়। এর মধ্যে সোমবার ঘুম থেকে উঠেই সবার আগে গ্যাসের চুলা চালু করে দেখি সামান্য গ্যাসের চাপ আছে। ঝিলকানন আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রোববার কী যে মহাবিপদে পড়েছি, ইফতারের সময় নেই গ্যাস! এর মধ্যে আযানের সময়ও হয়। তখন আমি দোকানে বসেছিলাম। বাসা থেকে হঠাৎ ফোন এলো বাইরে থেকে ইফতারি কিনে বাসায় নিতে। তখন তাড়াহুড়া করে ইফতার নিয়ে বাসায় যেতে হয়েছে। আজকেও গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের প্রতি দ্রুত এর সমাধান করার দাবি জানান তিনি। রাজু আহমেদ নামে আরেকজন ঢাকাটাইমসকে বলেন, রমজান মাসে সব সমস্যা শুরু হয়ে যায়। বাজারের সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সবকিছুর দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছেড়ে যায়। এখন আবার গ্যাসের সমস্যা। এরকম চলতে থাকলে রমজান মাসে কষ্ট হয়ে যাবে। প্রথম রমজান খুব কষ্টে কাটিয়েছি। রোজা শুরু হওয়ার আগের দিন শাক-সবজি, মাছসহ যাবতীয় সব ধরনের খাবারের পণ্য কিনে রেখেছি, যাতে রমজানে রোজা রেখে কষ্ট না করতে হয়। রমজান মাস নামাজ-কালাম পড়ে সময় কাটাবো। এর মধ্যে গ্যাস হাওয়া হয়ে গেলো প্রথম দিনই। আজকেও (সোমবার) কম আসছে গ্যাস। এরকম আর কত কষ্ট করবো। এদিকে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু রোববার রাত ১০টার দিকে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করা বিজ্ঞপ্তি শেয়ার করে লেখেন, ‘বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রোববার বেশকিছু এলাকার গ্রাহকরা গ্যাস সংকটে পড়েছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ভোগান্তির জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বিবিয়ানা অন্যতম। এই গ্যাসক্ষেত্রের ছয়টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের জোগানের সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট কাটিয়ে গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক হতে প্রায় এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতে পারে।
বিবিয়ানা আকস্মিক বন্ধ, কারণ অনুসন্ধানে শেভরন : বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রে আকস্মিক কূপ বন্ধ হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে শেভরন। দেশের সব চেয়ে উৎপাদনশীল গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানায় একসঙ্গে ছয়টি কূপ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টিকে ‘বিরল ঘটনা’ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র আংশিক বন্ধ থাকায় সোমবারও গ্যাস নেই রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ এলাকায়। রমজানের দ্বিতীয় দিনটিও চরম ভোগান্তির মাঝে পার করেছেন রাজধানীবাসী।
এদিকে বিবিয়ানার দুর্ঘটনার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা বিরল। সোমবার শেভরনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঠিক কারণ তারা বুঝতে পারছেন না। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। শেভরন জানিয়েছে, ‘শেভরন বাংলাদেশ’ বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলার সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি কূপ উৎপাদনে এসেছে। আজকের মধ্যে আরও তিনটি উৎপাদনে আসবে বলে আশা করছে শেভরন।
এর আগে রোববার (৩ এপ্রির) পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছিল-বিবিয়ানার ছয়টি কূপ থেকে রোববার রাতে গ্যাস উত্তোলনের সময় বালি উঠতে শুরু করে। এ কারণে বন্ধ করে দিতে হয় উৎপাদন। এতে রাতে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। আবাসিক এলাকায় সাধারণত প্রায় ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এখন সরবরাহ হচ্ছে প্রায় ১৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। শেভরনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হঠাৎ করে গ্যাসের সঙ্গে বালি বা ডাস্ট ওঠার বিষয়টি এখনও আমরা বুঝতে পারছি না। এজন্য আমাদের টিম কাজ করছে। শিগগিরই সঠিক কারণ বের করতে পারবো বলে আশা করছি।
শিগগিরই কাটছে না সংকট : প্রথম রোজার দিন থেকেই রাজধানীতে শুরু হয় গ্যাস সংকট। সারা দিন চুলা জ্বালাতে পারেননি গৃহিণীরা। বন্ধ ছিল রান্না। ইফতারি তৈরি করতে পারেননি অনেকেই। এই ভোগান্তি নিয়ে যখন দিন পার হলো তখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানাল সংকটের কারণ। আরও জানাল, ১০ এপ্রিল পর্যন্ত এ সংকট চলবে। দিনশেষে জানা গেল সংকটের কারণ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় রোববার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিবিয়ানায় গ্যাস উত্তোলনে হঠাৎ করে সমস্যা তৈরি হওয়ায় সারা দেশে তার প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে রাজধানীতে। শেভরন পরিচালিত এই গ্যাসক্ষেত্রে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন। বিজ্ঞপ্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হলেও ১০ এপ্রিলের আগে সংকট কাটবে না বলে জানানো হয়। সূত্র জানায়, বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের ছয়টি কূপ থেকে শনিবার রাতে গ্যাস উত্তোলনের সময় বালু উঠতে শুরু করে। এ কারণে গ্যাস উত্তোলন কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। রাতে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে সরবরাহ ব্যবস্থায়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঢাকায় তীব্র গ্যাস সংকট

আপডেট সময় : ০১:১৫:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রান্নাঘরে গ্যাসের সংকটে ভুগছেন রাজধানীবাসী। রমজানের শুরুতেই ইফতার ও দ্বিতীয় দিনের সেহরিতে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সব আয়োজন থাকলেও অনেকেই নিজের মতো করে বাসা-বাড়িতে ইফতার তৈরি করতে পারেননি। কোনো কোনো জায়গায় রাত ১০টার পর লাইনে গ্যাসের চাপ কিছুটা বাড়ায় কোনোমতে রান্না করা সম্ভব হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রবিবার থেকে রাজধানীসহ দেশের অনেক জায়গায় গ্রাহকরা গ্যাস সংকটে পড়েছেন। রোববারের তুলনায় সোমবার লাইনে গ্যাসের চাপ কিছুটা বাড়লেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে রাজধানীতে গ্যাসের সমস্যা সোমবারের মধ্যে সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ মোল্লাহ।
সরেজমিনে রাজধানীর হাতিরঝিল, রামপুরা, ওয়াপদা রোড, মহানগর প্রজেক্ট, ঝিলকানন আবাসিক এলাকা, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, চকবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সংকটের চিত্র দেখা গেছে।
মহানগর প্রজেক্টের বাসিন্দা মেহেরুন নেছা বলেন, রোজার শুরুতেই গ্যাস নিয়ে মহাবিপদে পড়েছি। প্রথম রোজার ইফতার বাইরে থেকে কিনে সারতে হয়েছে। এরকম প্রতি বছর রমজান মাস এলেই গ্যাস নিয়ে জটিল সমস্যায় পড়তে হয়। এর মধ্যে সোমবার ঘুম থেকে উঠেই সবার আগে গ্যাসের চুলা চালু করে দেখি সামান্য গ্যাসের চাপ আছে। ঝিলকানন আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রোববার কী যে মহাবিপদে পড়েছি, ইফতারের সময় নেই গ্যাস! এর মধ্যে আযানের সময়ও হয়। তখন আমি দোকানে বসেছিলাম। বাসা থেকে হঠাৎ ফোন এলো বাইরে থেকে ইফতারি কিনে বাসায় নিতে। তখন তাড়াহুড়া করে ইফতার নিয়ে বাসায় যেতে হয়েছে। আজকেও গ্যাসের সমস্যা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের প্রতি দ্রুত এর সমাধান করার দাবি জানান তিনি। রাজু আহমেদ নামে আরেকজন ঢাকাটাইমসকে বলেন, রমজান মাসে সব সমস্যা শুরু হয়ে যায়। বাজারের সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সবকিছুর দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছেড়ে যায়। এখন আবার গ্যাসের সমস্যা। এরকম চলতে থাকলে রমজান মাসে কষ্ট হয়ে যাবে। প্রথম রমজান খুব কষ্টে কাটিয়েছি। রোজা শুরু হওয়ার আগের দিন শাক-সবজি, মাছসহ যাবতীয় সব ধরনের খাবারের পণ্য কিনে রেখেছি, যাতে রমজানে রোজা রেখে কষ্ট না করতে হয়। রমজান মাস নামাজ-কালাম পড়ে সময় কাটাবো। এর মধ্যে গ্যাস হাওয়া হয়ে গেলো প্রথম দিনই। আজকেও (সোমবার) কম আসছে গ্যাস। এরকম আর কত কষ্ট করবো। এদিকে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু রোববার রাত ১০টার দিকে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করা বিজ্ঞপ্তি শেয়ার করে লেখেন, ‘বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রোববার বেশকিছু এলাকার গ্রাহকরা গ্যাস সংকটে পড়েছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত এ ভোগান্তির জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বিবিয়ানা অন্যতম। এই গ্যাসক্ষেত্রের ছয়টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের জোগানের সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট কাটিয়ে গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক হতে প্রায় এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতে পারে।
বিবিয়ানা আকস্মিক বন্ধ, কারণ অনুসন্ধানে শেভরন : বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রে আকস্মিক কূপ বন্ধ হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে শেভরন। দেশের সব চেয়ে উৎপাদনশীল গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানায় একসঙ্গে ছয়টি কূপ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টিকে ‘বিরল ঘটনা’ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র আংশিক বন্ধ থাকায় সোমবারও গ্যাস নেই রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ এলাকায়। রমজানের দ্বিতীয় দিনটিও চরম ভোগান্তির মাঝে পার করেছেন রাজধানীবাসী।
এদিকে বিবিয়ানার দুর্ঘটনার বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা বিরল। সোমবার শেভরনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঠিক কারণ তারা বুঝতে পারছেন না। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। শেভরন জানিয়েছে, ‘শেভরন বাংলাদেশ’ বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলার সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি কূপ উৎপাদনে এসেছে। আজকের মধ্যে আরও তিনটি উৎপাদনে আসবে বলে আশা করছে শেভরন।
এর আগে রোববার (৩ এপ্রির) পেট্রোবাংলা সূত্র জানিয়েছিল-বিবিয়ানার ছয়টি কূপ থেকে রোববার রাতে গ্যাস উত্তোলনের সময় বালি উঠতে শুরু করে। এ কারণে বন্ধ করে দিতে হয় উৎপাদন। এতে রাতে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। আবাসিক এলাকায় সাধারণত প্রায় ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এখন সরবরাহ হচ্ছে প্রায় ১৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। শেভরনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হঠাৎ করে গ্যাসের সঙ্গে বালি বা ডাস্ট ওঠার বিষয়টি এখনও আমরা বুঝতে পারছি না। এজন্য আমাদের টিম কাজ করছে। শিগগিরই সঠিক কারণ বের করতে পারবো বলে আশা করছি।
শিগগিরই কাটছে না সংকট : প্রথম রোজার দিন থেকেই রাজধানীতে শুরু হয় গ্যাস সংকট। সারা দিন চুলা জ্বালাতে পারেননি গৃহিণীরা। বন্ধ ছিল রান্না। ইফতারি তৈরি করতে পারেননি অনেকেই। এই ভোগান্তি নিয়ে যখন দিন পার হলো তখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানাল সংকটের কারণ। আরও জানাল, ১০ এপ্রিল পর্যন্ত এ সংকট চলবে। দিনশেষে জানা গেল সংকটের কারণ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় রোববার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিবিয়ানায় গ্যাস উত্তোলনে হঠাৎ করে সমস্যা তৈরি হওয়ায় সারা দেশে তার প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে রাজধানীতে। শেভরন পরিচালিত এই গ্যাসক্ষেত্রে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন। বিজ্ঞপ্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হলেও ১০ এপ্রিলের আগে সংকট কাটবে না বলে জানানো হয়। সূত্র জানায়, বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের ছয়টি কূপ থেকে শনিবার রাতে গ্যাস উত্তোলনের সময় বালু উঠতে শুরু করে। এ কারণে গ্যাস উত্তোলন কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। রাতে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে সরবরাহ ব্যবস্থায়।