নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন সারা বিশ্বে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে ঢাকায় ষাটোর্ধ্ব ও ‘ফ্রন্টলাইনারদের’ বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, এসএমএস পেয়ে অনেকেই এসেছেন টিকার তৃতীয় ডোজ নিতে। বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে এখন
বনানী থেকে এ কেন্দ্রে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব দম্পতি লিয়াকত আলী ও তাবিন্দা লিয়াকত। তারা জানালেন, গত এপ্রিলে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছিলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তাবিন্দা বললেন, “কাল এসএমএস এসেছে বুস্টার ডোজ নেওয়ার জন্য। আজ স্বামীকে নিয়ে এসেছি। টিকা নিয়েছি, এখন পর্যন্ত খারাপ লাগছে না।”
এই টিকাদান কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, বেলা সোয়া ১২টা পর্যন্ত ১০২ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। এদিন ২০০ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।
সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কোভিড টিকার সুরক্ষা দুর্বল হয়ে আসায় কিছু দেশ বাড়তি আরেক ডোজ টিকা দিচ্ছে নাগরিকদের, যাকে বলা হচ্ছে বুস্টার ডোজ। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন গোটা বিশ্বেই অপ্রত্যাশিত গতিতে ছড়িয়ে পড়ায় সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বলা হচ্ছে, দুই ডোজ টিকায় ওমিক্রন ঠেকানো সম্ভব না, দরকার আরও একটি ডোজ। সেজন্য বাংলাদেশেও বুস্টার ডোজ দেওয়ার পরামর্শ দেয় কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরী পরামর্শক কমিটি।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের টিকাদান কেন্দ্রেও সকাল থেকে টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৬ জন বুস্টার ডোজ নিয়েছেন।
এপ্রিল মাসে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছিলেন শাহজাদপুরের মল্লিক নুরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী। এদিন তারা এ কেন্দ্র থেকে তৃতীয় ডোজ নেন।
নুরুল ইসলাম বলেন, “আমি সব সময়ই টিকা নেওয়ার পক্ষে।ৃ আমার বিশ্বাস টিকা দিয়ে সুস্থ থাকা যায়। আমি টিকা নিয়েছি, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হইনি।”
যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং যারা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছেন, তাদেরই এখন করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে।
দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার অন্তত ছয় মাস পেরিয়েছে এমন ব্যক্তিরাই তৃতীয় ডোজ পাচ্ছেন। সেজন্য নতুন করে নিবন্ধন করতে হচ্ছে না। যারা তৃতীয় ডোজ পাওয়ার যোগ্য, তাদের কাছে এসএমএস চলে যাচ্ছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও বেলা ১২টা পর্যন্ত সেখানে কেউ টিকা নিতে যাননি। সকালে কয়েকজন নার্সকে টিকা দেওয়া হয়।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বুস্টার ডোজ দেওয়ার সব প্রস্তুতি আছে। ফ্রন্টলাইনার ও ষাটোর্ধ্ব সকলকে সিরিয়াল অনুযায়ী এসএমএস পাঠানো হবে।
“নিধারিত দিনে এসে টিকা নিতে হবে, এখানে প্রবাসীদেরকে টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেই কার্যক্রম চালু থাকবে, সাথে বুস্টার ডোজও চালু থাকবে।”
গত ১৯ ডিসেম্বর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএসএ) মিলনায়তনে পরীক্ষামূলকভাবে বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
দেশে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছিল এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। ১০ মাসের বেশি সময় পর তৃতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হলো।
ঢাকায় কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ