ঢাকা ০১:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

ঢাকায় অসহনীয় যানজটে চরম ভোগান্তি

  • আপডেট সময় : ০১:০৫:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২
  • ৯৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে প্রায় প্রতিদিনই সকাল থেকে শুরু হয় যানজট। এবারের রোজার মাসে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। যানজট এড়াতে বিভিন্ন ধাপে পদক্ষেপ নেওয়ার পরও যানজট লেগেই থাকে।
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে গত দুই বছর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এ কারণে বিগত সময়ে যানজট তুলনামূলক কিছুটা কম ছিল। বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার পর থেকে যানজট আগের মতো বাড়ছে। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি শুরু হওয়ার আগে যানজট নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। চলাচলকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীর শাহবাগ থেকে কুড়িল প্রায় ১৩ কিলোমিটার পথ। এই পথ বাসে যেতে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। এ রকম অন্য এলাকায়ও যাতায়াতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। গত কয়েকদিন ধরে সরেজমিনে দেখা গেছে শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, কাকরাইল, মৌচাক, মালিবাগ, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা, গুলিস্তান, পল্টন, ফার্মগেট, তেজগাঁও, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রতিটি মোড়ে লেগে থাকে যানজট।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে ঢাকার সড়কে এক লাখ ১৮ হাজার এবং ২০২১ সালে এক লাখ ৫০ হাজার নতুন যানবাহন নেমেছে। চলতি ২০২২ সালের প্রথম দুই মাসে নেমেছে ২৯ হাজার ৬৭৮টি গাড়ি। গত দুই বছরে তিন লাখ গাড়ি বেড়েছে। তবে বাড়েনি সড়কের সক্ষমতা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের কাছ থেকে জানা যায়, রমজান শুরুর পর থেকে ঈদ যত সামনে এগিয়ে আসছে ততো যানজট আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমাসহ আর্থিক সব প্রতিষ্ঠান থেকে মানুষ একসঙ্গে বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কারণে প্রাইভেট এবং লোকাল গাড়িতে চাপ পড়ে বেশি। ফলে যানজট লেগেই থাকে।
বাসের সহকারী রফিক মিয়া বলেন, আমাদের কিছু করার থাকে না। আমাদের মানুষ খারাপ ভাষায় কথা বলে। আমরাওতো চাই সুন্দর পরিবেশে গাড়ি চালাতে। যানজট লেগে থাকলে আমাদের বেশি ক্ষতি হয়। কারণ সময় যায় বেশি, ৩০ মিনিটের জায়গায় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। এতে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
যাত্রী কফিল আহমদ বলেন, এত বেশি বিরক্ত লাগছে গাড়িতে বসে থাকতে। আমি যাবো কুড়িল, ফার্মগেট দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে আছি। এভাবে বসে থাকতে আর ভালো লাগছে না। মোটরসাইকেল চালক ফরিদ উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, মোটরসাইকেল দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাই। ফলে টাকা পাই। কিন্তু মাঝে মধ্যে বিরক্ত হয়ে মনে হয় মোটরসাইকেল আর চালাবো না। কিন্তু কিছু করার নেই। টাকা তো আয় করতে হবে। রামপুরা থেকে কাকরাইল পর্যন্ত আসতে প্রায় ৪৫ মিনিট লাগছে। খুব খারাপ অবস্থা চলছে। ভোগান্তির শেষ নেই। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বলেন, রোজাদাররা যেন নির্বিঘেœ বাসায় গিয়ে ইফতার করতে পারেন, সেজন্য রমজান মাসে পুলিশ বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছে। যানজট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুনিবুর রহমান বলেন, রমজান মাসে আলাদা সময় দিতে হয় আমাদের। কারণ মানুষ অফিস-আদালত শেষ করে ইফতার করতে যায়। তাই আমরা চেষ্টা করি একটু বাড়তি ডিউটি করার পরও যেন মানুষ নিজের বাসস্থানে গিয়ে ইফতার করতে পারে। পুলিশ সব সময় মাঠে আছে। তারপরও দুপুর ২টার পর ৫টা পর্যন্ত পুলিশের সবাই মাঠে থাকবে। বাণিজ্যিক এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি সেসব এলাকায় বাড়তি সতর্কতায় থাকবে ট্রাফিক পুলিশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকায় অসহনীয় যানজটে চরম ভোগান্তি

আপডেট সময় : ০১:০৫:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে প্রায় প্রতিদিনই সকাল থেকে শুরু হয় যানজট। এবারের রোজার মাসে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। যানজট এড়াতে বিভিন্ন ধাপে পদক্ষেপ নেওয়ার পরও যানজট লেগেই থাকে।
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে গত দুই বছর সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এ কারণে বিগত সময়ে যানজট তুলনামূলক কিছুটা কম ছিল। বন্ধ থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার পর থেকে যানজট আগের মতো বাড়ছে। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি শুরু হওয়ার আগে যানজট নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। চলাচলকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীর শাহবাগ থেকে কুড়িল প্রায় ১৩ কিলোমিটার পথ। এই পথ বাসে যেতে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। এ রকম অন্য এলাকায়ও যাতায়াতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। গত কয়েকদিন ধরে সরেজমিনে দেখা গেছে শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, কাকরাইল, মৌচাক, মালিবাগ, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা, গুলিস্তান, পল্টন, ফার্মগেট, তেজগাঁও, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রতিটি মোড়ে লেগে থাকে যানজট।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে ঢাকার সড়কে এক লাখ ১৮ হাজার এবং ২০২১ সালে এক লাখ ৫০ হাজার নতুন যানবাহন নেমেছে। চলতি ২০২২ সালের প্রথম দুই মাসে নেমেছে ২৯ হাজার ৬৭৮টি গাড়ি। গত দুই বছরে তিন লাখ গাড়ি বেড়েছে। তবে বাড়েনি সড়কের সক্ষমতা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের কাছ থেকে জানা যায়, রমজান শুরুর পর থেকে ঈদ যত সামনে এগিয়ে আসছে ততো যানজট আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমাসহ আর্থিক সব প্রতিষ্ঠান থেকে মানুষ একসঙ্গে বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কারণে প্রাইভেট এবং লোকাল গাড়িতে চাপ পড়ে বেশি। ফলে যানজট লেগেই থাকে।
বাসের সহকারী রফিক মিয়া বলেন, আমাদের কিছু করার থাকে না। আমাদের মানুষ খারাপ ভাষায় কথা বলে। আমরাওতো চাই সুন্দর পরিবেশে গাড়ি চালাতে। যানজট লেগে থাকলে আমাদের বেশি ক্ষতি হয়। কারণ সময় যায় বেশি, ৩০ মিনিটের জায়গায় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। এতে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
যাত্রী কফিল আহমদ বলেন, এত বেশি বিরক্ত লাগছে গাড়িতে বসে থাকতে। আমি যাবো কুড়িল, ফার্মগেট দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে আছি। এভাবে বসে থাকতে আর ভালো লাগছে না। মোটরসাইকেল চালক ফরিদ উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, মোটরসাইকেল দিয়ে মানুষকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাই। ফলে টাকা পাই। কিন্তু মাঝে মধ্যে বিরক্ত হয়ে মনে হয় মোটরসাইকেল আর চালাবো না। কিন্তু কিছু করার নেই। টাকা তো আয় করতে হবে। রামপুরা থেকে কাকরাইল পর্যন্ত আসতে প্রায় ৪৫ মিনিট লাগছে। খুব খারাপ অবস্থা চলছে। ভোগান্তির শেষ নেই। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বলেন, রোজাদাররা যেন নির্বিঘেœ বাসায় গিয়ে ইফতার করতে পারেন, সেজন্য রমজান মাসে পুলিশ বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছে। যানজট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুনিবুর রহমান বলেন, রমজান মাসে আলাদা সময় দিতে হয় আমাদের। কারণ মানুষ অফিস-আদালত শেষ করে ইফতার করতে যায়। তাই আমরা চেষ্টা করি একটু বাড়তি ডিউটি করার পরও যেন মানুষ নিজের বাসস্থানে গিয়ে ইফতার করতে পারে। পুলিশ সব সময় মাঠে আছে। তারপরও দুপুর ২টার পর ৫টা পর্যন্ত পুলিশের সবাই মাঠে থাকবে। বাণিজ্যিক এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি সেসব এলাকায় বাড়তি সতর্কতায় থাকবে ট্রাফিক পুলিশ।