ঢাকা ১০:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫

ঢাকার ২১টি হাটে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু

  • আপডেট সময় : ০৬:২৭:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • ৫৮ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এ বছর কোরবানির পশুর হাট বসছে ২১টি। হাটগুলোয় পশু নিয়ে আসতে শুরু করেছেন বিক্রেতারা। আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের চার দিন আগে থেকে ঢাকার পশুর হাটে বিক্রি শুরু হওয়ার কথা। তবে এরইমধ্যে হাটে ক্রেতারাও ঢুঁ মারতে শুরু করেছেন। কিছু বেচাকেনাও শুরু হয়েছে।

ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক নামে পরিচিত এক্সপ্রেসওয়ের পাশে মস্তুল এলাকায় অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটে গত রোববার (১ জুন) গিয়ে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে কোরবানির পশু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। স্থানীয় কিছু লোকজনও হাটে এসেছেন গরু দেখতে। এরমধ্যে দুয়েকটা গরু বিক্রিও হয়েছে।

পাবনার আতাইকুলা থেকে ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন বারেক প্রামাণিক নামে এক খামারি। তিনি বলেন, গত বছর এই হাটেই এসেছিলেন। ‘আমরা গরু কিনে এক মাস বাসায় পালি, এরপর হাটে আনি। এইবারও এক গাড়িতে ১৫টা গরু নিয়া আসছি। এখনও কাস্টমার তেমন আসতেছে না।’

কোরবানির গরু দেখার জন্য ঢাকার বিভিন্ন হাটে ঘোরেন খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা এস এম মঈনুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, একটি খামারে আগেই গরু কিনে রেখেছেন, তারপরও আগ্রহের জায়গা থেকে হাটে এসেছেন গরু দেখতে। এরইমধ্যে শাহজাহানপুর হাটে গিয়েছি। আজ এসেছি ৩০০ ফুট হাটে, এরপর ভাটারায় যাবো। আমি প্রতি বছর এই সময় হাট ঘোরা শুরু করি। সত্যি বলতে, এবার এই সময় পর্যন্ত হাটে গরু কমই এসেছে মনে হচ্ছে।

খিলক্ষেত বরুয়া এলাকা থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে হাটে এসেছেন আল আমিন শিকদার। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে ৩ লাখ টাকায় দুটি গরু কিনেছেন তিনি। আল আমিন বলেন, মস্তুলের এই গরুর হাট বাড়ির কাছে। পরিবেশ ভালো, ভালো গরু ওঠে। গরু কেমন কিনলেন সেটা নির্ভর করে আপনার কেনাকাটা করার ক্ষমতার ওপর। ঘুরেফিরে দেখে আপনার আইডিয়ার ওপর গরু কিনতে হবে। এখন পর্যন্ত বাজার ভালোই আছে। দাম খুব বেশি মনে হচ্ছে না।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে গরু নিয়ে আসা আতাউল্লাহ জানান, তিনি ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন। এরমধ্যে দুটি গরু বিক্রি করেছেন। আতাউল্লাহ বলেন, নানা কারণে এ বছর বেপারীরা গরু কিনছে কম। ‘এইবার ভারত থেকে গরু আসবে না বলে শুনিছি। এইডা নিয়া বেপারীরা একটু টেনশনে আছে। অনেকে গরু কিনে নাই, যে গতবার ১০টা কিনছে, হে এইবার পাঁচটাও কিনে নাই।’

এই হাটের ইজারাদার সুরমি এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মজিবুল্লা খন্দকার বলেন, হাটে কোরবানির পশু আসতে শুরু করেছে। কিছু ক্রেতাও আছে। তবে মূল বিক্রি শুরু হবে ঈদের দুইদিন আগে থেকে। বেপারিদের অনেকেই গরু নিয়ে এসেছেন, আরো অনেকে আসবেন বলে জানিয়েছেন। হাটে গরু উঠলে টুকটাক বেচাকেনাও শুরু হয়। ঢাকার অন্য হাটগুলোয়ও কোরবানির পশু আসতে শুরু করেছে।

ইস্টার্ন হাউজিং হাটের ইজারাদার মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. রতন মিয়া বলেন, বৃষ্টির কারণে গত দুদিন হাটে গরু এসেছে কম। তবে রোববার থেকে আসা শুরু হয়েছে। ইজারার সব কাগজপত্র পাওয়ার পর আমরা হাটের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিলাম। এখনও হাটে কাজ চলছে। তবে এরমধ্যেই হাটে গরু আসা শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে গত দুদিন কিছুটা কম এসেছিল। আজ থেকে বেপারীরা ভালোই গরু নিয়ে আসছেন। আমাদের হাটে কাল (সোমবার) থেকে বেচাকেনা শুরু হবে।

ঢাকার প্রধান হাট গাবতলীতেও আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। তবে রোববার সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, হাট এখনও কোরবানির পশুতে ভরে ওঠেনি। হাটে গরুর পাশাপাশি উট, মহিষ, ভেড়াও এসেছে। গাবতলী হাটে এদিন কিছু গরু বিক্রি হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে একটি বড় আকারের গরু নিয়ে এসেছেন উজ্জল হোসেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় কালো, ধূসর রঙের গরুটির দাম হাঁকছেন ৩০ লাখ টাকা। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাহীওয়াল জাতের এই গরুর ওজন ‘অনেক’। দেখতেও ভালো, তাই ৩০ লাখ টাকা দাম চেয়েছেন তিনি, তবে এখনও ক্রেতা পাননি। লোকজন দেখছে, আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। দুয়েকজন পছন্দও করেছে। একজন বলেছেন, কাল আবার আসবেন। আসলে ঈদের এখনও কয়েকদিন বাকি। এ জন্য কাস্টমাররা ঘুরেফিরে দেখে, পরে নিজেদের পছন্দমতো গরু কিনে নিয়ে যায়। ওই হাটের আরেক ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, এইবার হাটে গরু কম আসতে পারে। কারণ এলাকায় গরু কম। ভূষি, খাবারের দাম বেশি বলে কৃষক গরু পালছে কম।

মিরপুরের পীরেরবাগ থেকে আসা আবদুল্লাহ আল মামুন গাবতলী হাট থেকে একটি গরু কিনেছেন। তিনি বলেন, আমি দেশি গরু কিনতেই এসেছি। একটা গরু পছন্দ হয়েছে, বাজেটের মধ্যে। এ কারণে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে ফেলেছি।

দুই সিটিতে ২১ হাট: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবার ১৩টি জায়গায় কোরবানির পশুর হাট ইজারা দিয়েছে। এরমধ্যে গাবতলীতে স্থায়ী একটি হাট, বাকি অস্থায়ী হাটের মধ্যে ৯টির ইজারা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তিনটি হাটের ইজারা প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন। উত্তর সিটির হাটগুলো হলো- গাবতলী পশুর হাট। ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা। উত্তরা দিয়াবাড়ি ১৬ এবং ১৮ নম্বর সেকটরের পাশে বউবাজার এলাকার খালি জায়গা। মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা। মোহাম্মদপুর বছিলা ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা। ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর রানাভোলা স্লুইসগেইট পর্যন্ত খালি জায়গা। কাঁচকুড়া বাজারের পাশে রহমান নগর আবাসিক এলাকার খালি জায়গা। খিলক্ষেত বাজারের পাশে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচের খালি জায়গা। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা। পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের মস্তুল চেকপোস্টের পাশে খালি জায়গা। মেরুল কাঁচাবাজার সংলগ্ন খালি জায়গা। মালিবাগ পুর্ব হাজীপাড়া ইকরা মাদ্রাসার পাশের খালি জায়গা। মিরপুর কালশী বালুর মাঠের খালি জায়গা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-ডিএসসিসি এলাকায় প্রতি বছর ১১টি কোরবানির পশুর হাট বসে। এরমধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আফতাবনগর প্রকল্পের হাট এবং মেরাদিয়া বাজার হাটের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আর শ্যামপুর কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ডের খালি জায়গায় প্রত্যাশিত দর না পাওয়ায় এ বছর হাটের ইজারা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ডিএসসিসি। সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল হাট এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের পাশের হাটের অনুমোদন রোববার পর্যন্ত চুড়ান্ত হয়নি। দক্ষিণ সিটির যেখানে বসছে পশুর হাট- উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাবের খালি জায়গা। পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের পশ্চিমপাশে নদীর পাড়ের খালি জায়গা। দনিয়া কলেজের পুর্বপাশে এবং ছনটেক মহিলা মাদ্রাসার পাশের খালি জায়গা। সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল। রহমতগঞ্জ ক্লাবের খালি জায়গা। হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট ও লেদার টেকনোলজির পুর্ব পাশের খালি জায়গা। ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের পাশের খালি জায়গা। আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের উত্তর পাশের খালি জায়গা।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দেশে কোরবানির পশু পর্যাপ্ত, পাশের দেশের প্রয়োজন নেই: উপদেষ্টা

ঢাকার ২১টি হাটে কোরবানির পশু বিক্রি শুরু

আপডেট সময় : ০৬:২৭:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এ বছর কোরবানির পশুর হাট বসছে ২১টি। হাটগুলোয় পশু নিয়ে আসতে শুরু করেছেন বিক্রেতারা। আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের চার দিন আগে থেকে ঢাকার পশুর হাটে বিক্রি শুরু হওয়ার কথা। তবে এরইমধ্যে হাটে ক্রেতারাও ঢুঁ মারতে শুরু করেছেন। কিছু বেচাকেনাও শুরু হয়েছে।

ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক নামে পরিচিত এক্সপ্রেসওয়ের পাশে মস্তুল এলাকায় অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাটে গত রোববার (১ জুন) গিয়ে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে কোরবানির পশু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। স্থানীয় কিছু লোকজনও হাটে এসেছেন গরু দেখতে। এরমধ্যে দুয়েকটা গরু বিক্রিও হয়েছে।

পাবনার আতাইকুলা থেকে ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন বারেক প্রামাণিক নামে এক খামারি। তিনি বলেন, গত বছর এই হাটেই এসেছিলেন। ‘আমরা গরু কিনে এক মাস বাসায় পালি, এরপর হাটে আনি। এইবারও এক গাড়িতে ১৫টা গরু নিয়া আসছি। এখনও কাস্টমার তেমন আসতেছে না।’

কোরবানির গরু দেখার জন্য ঢাকার বিভিন্ন হাটে ঘোরেন খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা এস এম মঈনুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, একটি খামারে আগেই গরু কিনে রেখেছেন, তারপরও আগ্রহের জায়গা থেকে হাটে এসেছেন গরু দেখতে। এরইমধ্যে শাহজাহানপুর হাটে গিয়েছি। আজ এসেছি ৩০০ ফুট হাটে, এরপর ভাটারায় যাবো। আমি প্রতি বছর এই সময় হাট ঘোরা শুরু করি। সত্যি বলতে, এবার এই সময় পর্যন্ত হাটে গরু কমই এসেছে মনে হচ্ছে।

খিলক্ষেত বরুয়া এলাকা থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে হাটে এসেছেন আল আমিন শিকদার। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে ৩ লাখ টাকায় দুটি গরু কিনেছেন তিনি। আল আমিন বলেন, মস্তুলের এই গরুর হাট বাড়ির কাছে। পরিবেশ ভালো, ভালো গরু ওঠে। গরু কেমন কিনলেন সেটা নির্ভর করে আপনার কেনাকাটা করার ক্ষমতার ওপর। ঘুরেফিরে দেখে আপনার আইডিয়ার ওপর গরু কিনতে হবে। এখন পর্যন্ত বাজার ভালোই আছে। দাম খুব বেশি মনে হচ্ছে না।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে গরু নিয়ে আসা আতাউল্লাহ জানান, তিনি ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন। এরমধ্যে দুটি গরু বিক্রি করেছেন। আতাউল্লাহ বলেন, নানা কারণে এ বছর বেপারীরা গরু কিনছে কম। ‘এইবার ভারত থেকে গরু আসবে না বলে শুনিছি। এইডা নিয়া বেপারীরা একটু টেনশনে আছে। অনেকে গরু কিনে নাই, যে গতবার ১০টা কিনছে, হে এইবার পাঁচটাও কিনে নাই।’

এই হাটের ইজারাদার সুরমি এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মজিবুল্লা খন্দকার বলেন, হাটে কোরবানির পশু আসতে শুরু করেছে। কিছু ক্রেতাও আছে। তবে মূল বিক্রি শুরু হবে ঈদের দুইদিন আগে থেকে। বেপারিদের অনেকেই গরু নিয়ে এসেছেন, আরো অনেকে আসবেন বলে জানিয়েছেন। হাটে গরু উঠলে টুকটাক বেচাকেনাও শুরু হয়। ঢাকার অন্য হাটগুলোয়ও কোরবানির পশু আসতে শুরু করেছে।

ইস্টার্ন হাউজিং হাটের ইজারাদার মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. রতন মিয়া বলেন, বৃষ্টির কারণে গত দুদিন হাটে গরু এসেছে কম। তবে রোববার থেকে আসা শুরু হয়েছে। ইজারার সব কাগজপত্র পাওয়ার পর আমরা হাটের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিলাম। এখনও হাটে কাজ চলছে। তবে এরমধ্যেই হাটে গরু আসা শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে গত দুদিন কিছুটা কম এসেছিল। আজ থেকে বেপারীরা ভালোই গরু নিয়ে আসছেন। আমাদের হাটে কাল (সোমবার) থেকে বেচাকেনা শুরু হবে।

ঢাকার প্রধান হাট গাবতলীতেও আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। তবে রোববার সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, হাট এখনও কোরবানির পশুতে ভরে ওঠেনি। হাটে গরুর পাশাপাশি উট, মহিষ, ভেড়াও এসেছে। গাবতলী হাটে এদিন কিছু গরু বিক্রি হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে একটি বড় আকারের গরু নিয়ে এসেছেন উজ্জল হোসেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় কালো, ধূসর রঙের গরুটির দাম হাঁকছেন ৩০ লাখ টাকা। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাহীওয়াল জাতের এই গরুর ওজন ‘অনেক’। দেখতেও ভালো, তাই ৩০ লাখ টাকা দাম চেয়েছেন তিনি, তবে এখনও ক্রেতা পাননি। লোকজন দেখছে, আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। দুয়েকজন পছন্দও করেছে। একজন বলেছেন, কাল আবার আসবেন। আসলে ঈদের এখনও কয়েকদিন বাকি। এ জন্য কাস্টমাররা ঘুরেফিরে দেখে, পরে নিজেদের পছন্দমতো গরু কিনে নিয়ে যায়। ওই হাটের আরেক ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, এইবার হাটে গরু কম আসতে পারে। কারণ এলাকায় গরু কম। ভূষি, খাবারের দাম বেশি বলে কৃষক গরু পালছে কম।

মিরপুরের পীরেরবাগ থেকে আসা আবদুল্লাহ আল মামুন গাবতলী হাট থেকে একটি গরু কিনেছেন। তিনি বলেন, আমি দেশি গরু কিনতেই এসেছি। একটা গরু পছন্দ হয়েছে, বাজেটের মধ্যে। এ কারণে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে ফেলেছি।

দুই সিটিতে ২১ হাট: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবার ১৩টি জায়গায় কোরবানির পশুর হাট ইজারা দিয়েছে। এরমধ্যে গাবতলীতে স্থায়ী একটি হাট, বাকি অস্থায়ী হাটের মধ্যে ৯টির ইজারা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তিনটি হাটের ইজারা প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন। উত্তর সিটির হাটগুলো হলো- গাবতলী পশুর হাট। ভাটারা সুতিভোলা খাল সংলগ্ন খালি জায়গা। উত্তরা দিয়াবাড়ি ১৬ এবং ১৮ নম্বর সেকটরের পাশে বউবাজার এলাকার খালি জায়গা। মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা। মোহাম্মদপুর বছিলা ৪০ ফুট সড়কের পাশের খালি জায়গা। ভাটুলিয়া সাহেব আলী মাদ্রাসা থেকে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর রানাভোলা স্লুইসগেইট পর্যন্ত খালি জায়গা। কাঁচকুড়া বাজারের পাশে রহমান নগর আবাসিক এলাকার খালি জায়গা। খিলক্ষেত বাজারের পাশে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচের খালি জায়গা। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা। পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের মস্তুল চেকপোস্টের পাশে খালি জায়গা। মেরুল কাঁচাবাজার সংলগ্ন খালি জায়গা। মালিবাগ পুর্ব হাজীপাড়া ইকরা মাদ্রাসার পাশের খালি জায়গা। মিরপুর কালশী বালুর মাঠের খালি জায়গা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-ডিএসসিসি এলাকায় প্রতি বছর ১১টি কোরবানির পশুর হাট বসে। এরমধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আফতাবনগর প্রকল্পের হাট এবং মেরাদিয়া বাজার হাটের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আর শ্যামপুর কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ডের খালি জায়গায় প্রত্যাশিত দর না পাওয়ায় এ বছর হাটের ইজারা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ডিএসসিসি। সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল হাট এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের পাশের হাটের অনুমোদন রোববার পর্যন্ত চুড়ান্ত হয়নি। দক্ষিণ সিটির যেখানে বসছে পশুর হাট- উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাবের খালি জায়গা। পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের পশ্চিমপাশে নদীর পাড়ের খালি জায়গা। দনিয়া কলেজের পুর্বপাশে এবং ছনটেক মহিলা মাদ্রাসার পাশের খালি জায়গা। সাদেক হোসেন খোকা মাঠের দক্ষিণ পাশের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল। রহমতগঞ্জ ক্লাবের খালি জায়গা। হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট ও লেদার টেকনোলজির পুর্ব পাশের খালি জায়গা। ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের পাশের খালি জায়গা। আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজের উত্তর পাশের খালি জায়গা।