নিজস্ব প্রতিবেদক: মানবতাবিরোধী অপরাধে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণা হবে। সেই রায়কে ঘিরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ দেশব্যাপী শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। সেই শাটডাউনের প্রভাব পড়েছে রাজধানীজুড়ে। প্রতিদিনের তুলনায় আজ সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা কম, এমনকি যাত্রীও কম।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সরেজমিনে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঢাকার প্রধান সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা, গণপরিবহন সীমিত। এমনি রাইড শেয়ারিংও কম। তবে ব্যক্তিগত গাড়ি ও অটোরিকশার চলাচল বিভিন্ন জায়গায় ছিল লক্ষণীয়।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে শাহবাগ, কাঁটাবন, মৎস্য ভবন ও বাংলামটর এলাকায় গণপরিবহন চলাচল ছিল কম। তাছাড়া যেসব গণপরিবহন চলাচল করছে তাদের অধিকাংশ আসনই ছিল ফাঁকা। শান্তিনগর এলাকাতেও একই চিত্র দেখা গেছে।
সকাল ৯টার দিকে বিজয় সরণী, ফার্মগেট, মনিপুরিপারাসহ কারওয়ান বাজার ও ধানমন্ডি এলাকাতেও গণপরিবহনের চলাচল তেমন চোখে পড়েনি। ব্যক্তিগত গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিকভাবের তুলনায় অনেক কম।
তবে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার এলাকায় গণপরিবহন চলাচল অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার চলাচল কিছুটা কমতে থাকে। সেখানেও যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল।
শাহবাগে বাসের জন্য অপেক্ষারত মোক্তার হোসেন নামের একজন যাত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ রাস্তাঘাট ফাঁকা। তাছাড়া গাড়িও ফাঁকা ফাঁকা যাচ্ছে। মূলত আজ আওয়ামী লীগের ডাকা শাটডাউনকে কেন্দ্র করে অপ্রয়োজনে মানুষ বাসা থেকে বের হয়নি। কারণ কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে তা তো বলা যায় না। আমাদের যাদের অফিস আছে আমরা না পারতে বের হলাম।’
গুলিস্তান থেকে সাভার পরিবহনের ওঠা একজন যাত্রী বলেন, ‘অন্যান্য দিন তো বাসে সিট পাওয়া যায় না, আজ অর্ধেক বাস খালি।’
এদিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন কর্মসূচিকে উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গণপরিবহন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। তবে তার বাস্তবায়ন মাঠ পর্যায়ে তেমন একটা চোখে পড়েনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাস মালিক সমিতির একজন নেতা বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে প্রায় ২০টি পরিবহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে একটি বাসে আগুন দিয়ে চালক জুলহাসকে হত্যা করা হয়েছে। যার কারণে ঝুঁকি নিয়ে অনেক শ্রমিক বাস চালাতে চায়নি। তাছাড়া আমরাও অগ্নিসংযোগের ভয়ে আজ সড়কে বেশি বাস নামায়নি।’
এই বাস মালিক আরো বলেন, ‘স্বাভাবিক দিনে আমার ২০-২২টা বাস নিয়মিত রাস্তায় চলাচল করে। আজ রাস্তায় চলছে মাত্র ৯টা। তা-ও উপর মহলের প্রতিশ্রুতি আছে যে বাসের ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দিবে। যদিও এটা আসলে অনেক সময় বাস্তবায়ন করতে দেখি না। তাই অতিরিক্ত ঝুঁকি নেইনি।’
এসি/আপ্র/১৭/১১/২০২৫




















