মারুফ রায়হান
নভেম্বরের মাঝামাঝি এসে ঢাকায় রাতের বেলা শীতের আমেজ অনুভব করা যাচ্ছে। তবে দিনের বেলা কিন্তু কড়া তাপ। তাপমাত্রার এই ব্যবধান দুর্বল মানব শরীরের জন্য মন্দ বার্তা বয়ে আনতে পারে। তাই সাবধানে থাকা জরুরি। অগ্রহায়ণেই ঠাণ্ডা লেগে যাওয়া কোনো কাজের কথা নয়।
ব্যতিক্রমী বৃহস্পতিবার: ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করেছে এক ব্যতিক্রমী বৃহস্পতিবার। অনেকটা ঢিলেঢালা হরতালের মতোই ছিল পরিবেশ। আওয়ামী লীগ ডাক দিয়েছে ঢাকা লক ডাউনের। এদিন শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে তারই প্রতিক্রিয়ায় লকডাউন। আবার এদিন ইন্টেরিম সরকারপ্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।
যাহোক, শঙ্কা, উদ্বেগ ও উত্তেজনার ওই বৃহস্পতিবার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলো শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে অনলাইন ক্লাসের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল। অনেক অভিভাবকের মতো আমিও সন্তানের জন্য দুশ্চিন্তা করছিলাম। যাক বাঁচা গেল ভেবে স্বস্তি পাচ্ছিলাম। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল যে অনলাইন ক্লাস বাতিল, অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তানকে জিজ্ঞেস করলাম, কী করবে? সে সোজা জানিয়ে দিল, বৃহস্পতিবারে ঘরে থাকবে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যারা অনলাইন ক্লাস বাতিল করল তারা কি আসলে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করল?
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতুর সামনে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করা হয়। ঢাকায় বেশ কিছু যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
রায়ের তারিখ ঘোষণা ও আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘিরে যেকোনো নাশকতা ঠেকাতে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ডিএমপির ১৭ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়। এর বাইরে মোতায়েন থাকে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরাও।
নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আগের দিন বুধবার থেকেই ঢাকার প্রবেশপথগুলোয় বিভিন্ন চেকপোস্টে গণপরিবহন আর সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলাতে উত্তরায় নিজের চোখেই দেখেছি নিরাপত্তা তল্লাশির ঘটনা। বৃহস্পতিবারও ওই কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। বুধবার রাতে ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও মেসে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হয়।
ঢাকা মহানগরীর কয়েকটি অতিব্যস্ত এলাকার একটি কারওয়ান বাজার। সপ্তাহ শেষে দু’দিন ছুটির ঘণ্টা বাজলে বৃহস্পতিবার শহরের হুঁশ থাকে না বলে রসিকজনেরা দিনটির নাম দিয়েছেন বেহুঁশপতিবার। এদিন কারওয়ান বাজারের চেহারা ছিল অন্যরকম। কোনো যানজট ছিল না; বরং ছিল যান সংকট। হুড়োহুড়ি করে পথচারীদেরও সড়ক পারাপার হতে দেখা যায়নি। মেট্রোরেলে যাত্রী ছিল অর্ধেকেরও কম। অনলাইনে ডাকা ‘লকডাউন’ কর্মসূচিতে ঢাকাবাসীর বাসার বাইরে না যাওয়া কিছতা নজিরবিহীনই বলতে হবে।
উত্তরায় নতুন গ্যালারি প্যালেট: উত্তরায় বসবাস করছি বলে একদা মডেল টাউন হিসেবে পরিচিত এই জনবহুল এলাকার কোনো সুসংবাদ পেলে এই কলামে তুলে আনার চেষ্টা করি। ঢাকাবাসী জানেন এই মহানগরী থেকে উত্তর প্রান্ত দিয়ে বেরুনোর, মানে অন্যান্য জেলায় যাওয়ার ঢাকা-টঙ্গী সড়কটি উত্তরাকে দুভাগে ভাগ করে রেখেছে। জোড় সংখ্যার সেক্টরগুলোর অবস্থান ওই মহাসড়কের পুবদিকে, আর বেজোড় সংখ্যার সেক্টরগুলো পড়েছে পশ্চিম দিকে। বিমানবন্দর পেরিয়ে উত্তরায় প্রবেশমুখে যে সড়কটি বামে চলে গেছে সেটি দেশের একজন বড় কবির নামে (কবি জসীমউদদ্ীন)।
ওই সড়ক ধরে বেশ কিছতা সামনে এগোলেই উত্তর দিকের রাস্তা ঘেঁষে সম্প্রতি চালু হয়েছে একটি আর্ট গ্যালারি। এটির নাম প্যালেট। শিল্পীরা ছবি আঁকার জন্য যে পাত্রে রং ঢেলে রাখেন সেটিই প্যালেট। তিনতলা ভবনের নিচতলার পুরোটাই আর্ট গ্যালারি। আর যিনি এই গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনিও শিল্পী, মূলত ভাস্কর্যশিল্পী বা ভাস্কর। নাম শরিফ আহমেদ কঙ্কন। বাড়ির প্রধান ফটক পেরুলেই বিশালাকার ‘হস্তীমস্তক’ ভাস্কর্য নজর কাড়ে, এটির ওজন ৩০০ কেজি বলে জানালেন হাতিটির ভাস্কর কঙ্কন।
হঠাৎ করেই প্যালেট গ্যালারিতে যাওয়া। আমার ভ্রাতৃপ্রতিম বন্ধু কবি লুৎফুল হোসেন প্রায় জোর করেই আমাকে সেখানে নিয়ে যান শুক্রবার রাতে। তাকে ধন্যবাদ। না গেলে সত্যিই আমার জানা হতো না উত্তরার নতুন এই শিল্পকেন্দ্র সম্পর্কে। কঙ্কন খুবই মিশুক প্রকৃতির উদারহৃদয় মানুষ। অতিথিপরায়ণও। সব কটি কক্ষ নিজেই ঘুরে ঘুরে দেখালেন। সবগুলো কক্ষের সব দেয়াল প্রায় ঠাসা একজন শিল্পীরই (ওয়াহিদ জামান) শিল্পকর্ম দিয়ে। গ্যালারির প্রথম প্রদর্শনীর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এখনো ছবিগুলো নামানো হয়নি। তাই বাড়তি পাওয়া ছিল এই শিল্পদর্শন।
ওয়াহিদ জামানের নাম আগে শুনিনি কারণ দেশে এটিই তার প্রথম প্রর্দশনী। জয়পুরহাট মহিলা ক্যাডেট কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিল্পী ওয়াহিদ জামান দেশের বাইরে জাপান, ইতালি, ভারত ও নেপালে দলীয় চিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। তার ছবিতে রঙের ঔজ্জ্বল্য দৃষ্টিকে দখল করে নেয়। বিমূর্ত মোটিফের বহুলতা তার স্বাতন্ত্র্য তুলে ধরেছে। যেগুলো বাস্তবধর্মী ছবি, এতে দেশের প্রকৃতি সুন্দরভাবে উদ্ভাসিত। দেখলাম বেশ কিছু ছবি ‘লাল টিপ’ ধারণ করেছে অর্থাৎ সেগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। গ্যালারি-মালিক কঙ্কন বললেন, এখানে আমরা শিল্প-আড্ডা দেব, কবিতাসন্ধ্যার আয়োজন করব। হবে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।
পুরস্কৃত সমাজসচেতন লেখক: ‘আমাদের এখন প্রতিটি বিভাজন হচ্ছে নারীকে কেন্দ্র করে। আমাদের রাষ্ট্রকাঠামোতে শক্তি পেলেই দানবীয় হয়ে উঠতে দেখা যায়। কিন্তু প্রকৃতির কাছে গেলে মানুষ জানে, দানবীয় শক্তি পেলেও কীভাবে শক্তিহীনের মতো বিনয়ী আচরণ করতে হয়।’ সমাজসচেতন লেখকের মতোই কথা বলেছেন মহুয়া রউফ, সদ্য অনন্যা সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক। মহুয়া রউফ জানান, তিনি কৈশোর থেকেই সুদূরের স্বপ্ন দেখেন। অ্যান্টার্কটিকা থেকে আমাজন জঙ্গল বা নিকারাগুয়ায় ভ্রমণ এবং সেসব অনুপুঙ্খ বর্ণনা পাঠকের কাছে তুলে ধরার শক্তি তিনি জগৎ পাঠের ইচ্ছা থেকেই অর্জন করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
পৃথিবীর দূরতম অঞ্চলে ছুটে গেছেন ভ্রমণ-মত্ত মহুয়া। আর সেই পথচলার মধ্যেই জন্ম নিয়েছে তার লেখকসত্তা। তার ভ্রমণগদ্য মানুষের জীবন, ইতিহাস, প্রকৃতি আর স্মৃতির ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক আলোকরেখা। ভূপর্যটক ও লেখক মহুয়া রউফ ১৪৩২ অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ায় নিশ্চয়ই ভ্রমণকাহিনির পাঠকদের ভালো লাগবে। শনিবার ঢাকায় এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার সম্মাননা। এই পুরস্কারের সঙ্গে আছে এক লাখ টাকা। মহুয়া রউফের লেখা ‘দখিন দুয়ার খোলা’ এবং ‘লাতিনের নাটাই’ বই দুটির জন্য তিনি এ সম্মাননা পেলেন।
সরেজমিন বাংলাদেশ আই হসপিটাল: ঢাকার বাংলাদেশ আই হসপিটাল ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। হাসপাতালে সর্বাধুনিক মেশিন এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত অটো লেন্স এজিং মেশিনের মতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যা নির্ভুল ডায়াগনস্টিক এবং চিকিৎসা নিশ্চিত করে।
গত বছর জুন মাসে প্রথম যখন বাংলাদেশ আই হসপিটালের চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইশতিয়াক আনোয়ারকে চোখ দেখাই তখন তিনি স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছিলেন চশমার পাওয়ার বাড়িয়ে কোনো উপকার হবে না। আপনার ক্যাটারেক্ট (ছানি) অপারেশন করা লাগবে। আমি তাতে সম্মতি প্রদান করলে আমাকে কনসালটেশন কক্ষে পাঠানো হয় এবং সেখানে প্যাকেজ সম্পর্কে বিশদ বুঝিয়ে দিয়ে ২ পাতার একটি লিটারেচর দেয়া হয়। সেখানে ‘ছানি রোগীদের জন্য তথ্য’- এই মূল শিরোনামে সার্বিক তথ্য সন্নিবেশিত দেখি। বিষয়টি আমার ভালো লাগে।
বিদেশে ডাক্তাররা রোগীর অসুখ ও চিকিৎসা সম্পর্কে রোগীকে বিশদভাবেই অবহিত করেন। এ দেশে এমনটি দেখি না। ছানি কী, কেন এটি হয়, অপারেশন না করলে কী ক্ষতি হতে পারে, অপারেশনের কী কী পদ্ধতি রয়েছে, অপারেশনের ব্যয় কোন ৭টি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, লেন্সের মূল্য কেমন, অপারেশনের পরে করণীয় কী ইত্যাদি সম্পর্কে জানার এই সুযোগ লাভে আমি উপকৃত হই।
‘বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ মানের যন্ত্রপাতি দিয়ে অপারেশন করা হয়। তাই এখানে অপারেশনের খরচ তুলনামূলক বেশি’- ই বাক্যটি পরিষ্কারভাবেই লেখা ছিল প্রদত্ত পত্রে। কিন্তু ব্যয়ভার সংকুলান করতে না পারায় দুচোখের একটি (বাম) আমি অন্য হাসপাতালে আমার পুরানো ডাক্তারের মাধ্যমে অপারেশন করাই চব্বিশের নভেম্বরে। অপারেশনের পর সুস্থ হয়ে বাম চোখের সামনে আমি কালো দাগ ও কালো ডট দেখতে পেয়ে কিছতা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। এটি যে স্বাভাবিক বিষয় সেটি ডা. ইশতিয়াকের দেওয়া কাগজে পরিষ্কার করে উল্লেখ রয়েছে দেখলাম। বিষয়টি আমি ভুলে গিয়েছিলাম কিংবা আগে পড়িনি বলেই চিন্তিত হয়ে পড়ি।
যাহোক, বাম চোখে অপারেশনের পর আমার আগের ডাক্তার আমার দুশ্চিন্তা দূর করেননি। ফেকোসার্জারির জন্য ওই ডাক্তার খ্যাতিমান। দশ বছর যাবৎ তিনি আমার চোখের ডাক্তার হিসেবে কয়েক দফা লেন্সের পাওয়ার বদলেছেন। কয়েক বছর আগে থেকে সার্জারির সংকেত দিচ্ছিলেন। কিন্তু আমলে নিইনি। শেষ পর্যন্ত গত বছর নভেম্বরে বাম চোখে সার্জারিটা করাই। তবে তার আগে নানা মূল্যবান পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ‘আমার চোখের আর কোনোই সমস্যা নেই, রেটিনাসহ সব কিছু এক্সেলেন্ট’ শুনে টাকার কষ্ট ভুলে যাই। লেন্স কেনায় কার্পণ্য করিনি, কিনি জার্মানিরটাই।
যাহোক, অপারেশন শেষে ধাতস্থ হয়ে নতুন চশমা নিয়ে ‘নতুন’ চোখ পেয়ে নিজেকে যখন যুবক ভাবছি, তখনই শুরু হলো ওই বাম চোখেই সমস্যা। সেই ডাক্তার দীর্ঘ-দীর্ঘক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে আবারও চশমার পাওয়ার বদলে দিলেন। এত কম সময়ে দ্বিতীয় দফা বদল আমাকে যারপরনাই বিস্মিত করেছিল। তার ওপর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হবে রমজান। রোজা রাখলে চোখের পাওয়ার এক দফা বদলে যায়, এটা আমি জানতাম। তার মানে আমার ডাক্তার কি ঈদ শেষে আবারও আমাকে নতুন চশমা পরিয়ে দেবেন? সবচেয়ে দুঃখের কথা বলি। তিনি আমাকে একজন রেটিনা বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করলেন। কেন? সম্পূর্ণ সুস্থ রেটিনা কি সার্জারির ধকলে দুর্বল হয়ে পড়ল! আমার চোখের তো কোনো অসুখ ছিল না!
যাহোক, পুরানো কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। খরচ বেশি হলেও আমি ডান চোখের অপারেশন বাংলাদেশ আই হসপিটালে করাব বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং ডা. ইশতিয়াক আনোয়ারকেই বেছে নিই। তিনি আমেরিকা ও সিঙ্গাপুরে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অপারেশন টেবিলে অপারেশনের শেষ পর্যায়ে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এটি আপনার কততম অপারেশন? তিনি বিনয়ের সঙ্গে বলেছিলেন তিন হাজার পেরিয়ে গেছে। চোখের রোগীদের জন্যেই আমি এত কথা বলছি। সঠিক চিকিৎসক বেছে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে ভোগান্তি বাড়বে। এই লেখা চিকিৎসকেরা পড়লে তথ্য গোপন ও অহেতুক পরোক্ষ ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকবেন, আশা করি। অপারেশনের পরের নির্দেশাবলী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের বাম ও ডান চোখের ভেতর দূরত্ব অতি সামান্য। কিন্তু দুই চোখের ব্যাপারে দুই হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের পরামর্শ এবং হসপিটালের পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনার মধ্যে দূরত্ব অনেক বেশি অনুভূত হয়েছে- এ কথা স্বীকার করতে আমার দ্বিধা নেই। দুইয়ের তুলনা না করে আমি বলতেই পারি যে ব্যয় সংকুলান করা সম্ভব হলে আধুনিকতম অপারেশন থিয়েটারে বেশি অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যাওয়াই বিচক্ষণতা।
শেষে সরকারের কাছে একটি আবেদন। দুস্থ, বিত্তহীন, স্বল্প আয়ের বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটা সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ কি খুব বেশি কষ্টকর হবে? তাদের জন্য বিনামূল্যে অপারেশন এবং চোখে নতুন লেন্স স্থাপন, এই কাজ সরকারের অনুদানে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন বছর থেকেই শুরু করা যেতে পারে। এজন্যে সুনির্দিষ্টভাবে বাজেট রাখতে হবে। চোখ মানুষের অত্যন্ত মূল্যবান অঙ্গ। দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষ অত্যন্ত অসহায়। দৃষ্টিশক্তির ঝুঁকিতে যেসব বয়স্ক মানুষ থাকেন, তাদের পাশে শুধু সরকারকে নয়, বিত্তবান মানুষেরও দাঁড়ানো চাই সামাজিক অঙ্গীকারবোধ থেকে।
লেখক: কলামিস্ট
(মতামত লেখকের সম্পূর্ণ নিজস্ব)
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ
























