ঢাকা ০৫:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ঢাকার দিকে অগ্রসর হতে থাকে যৌথবাহিনী

  • আপডেট সময় : ০৪:১২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর। সব দিকে দিয়ে যৌথবাহিনী ঢাকার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। যৌথবাহিনীর জন্য দিনটি ছিল শুধুই ঢাকা দখলের লড়াই। যৌথবাহিনী একে একে আশুগঞ্জ, দাউদকান্দি, চাঁদপুর ও ময়মনসিংহ দখলমুক্ত করে। দ্রুত মুক্ত হতে থাকে একের পর এক এলাকা।

এ দিন সকালে প্রথমবারের মতো জেনারেল নিয়াজি স্বীকার করেন, পরিস্থিতি নিদারুণ সংকটপূর্ণ। আকাশে যৌথবাহিনীর একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনীর পুনর্বিন্যাস সম্ভব নয় বলে রাওয়ালপিন্ডিতে একটি সংকেতবাণী পাঠান তিনি।

এদিকে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়কে নস্যাৎ করে দিতে পাকিস্তানের সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা থেমে থাকেনি। এ দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন তার সপ্তম নৌ বহর বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হওয়ার আদেশ দেন। উদ্দেশ্য, মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ভেঙে দেওয়া।

কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কারণ বীর সন্তানদের মনোবল ভেঙে দেওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। এ দিন যেসব এলাকা শত্রুমুক্ত হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো— দাউদকান্দি, গাইবান্ধা, কপিলমুনি, ত্রিশাল, নকলা, ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনা, পাইকগাছা, কুমারখালী, শ্রীপুর, অভয়নগর, পূর্বধলা ও চট্টগ্রামের নাজিরহাট।

দাউদকান্দি শত্রমুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে মূলত মেঘনার সম্পূর্ণ পূর্বাঞ্চল মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে। এর আগে কুমিল্লা মুক্ত হওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দাউদকান্দির মুক্তিযোদ্ধারা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিবাহিনীর হামলায় টিকতে না পেরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়।

৯ ডিসেম্বর স্মরণ করে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক হাসান মোরশেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘৩ ডিসেম্বরের পরবর্তী দিনগুলো ছিল মুক্তিযুদ্ধের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ভারত যৌথ কমান্ডের অধীনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন উইং বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। তাদের ওপর নির্দেশ ছিল মুক্তিবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ঢাকার দিকে এগিয়ে যাওয়া। ৯ মাসের গেরিলা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে মুক্তিবাহিনী অলআউট অ্যাকশনে নামে। ফলে একের পর এক জনপদ মুক্ত হতে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ব্যক্তিগত শোক ও গৌরব আছে আমার পরিবারের। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানা মুক্ত করার যুদ্ধে শহিদ হন আমার চাচা গেরিলা যোদ্ধা মতিউর রহমান। শেষের দিনগুলোর চূড়ান্ত যুদ্ধে এভাবে শহিদ হয়েছেন অসংখ্য সাহসী মুক্তিযোদ্ধা, ভারতীয় সৈনিকেরাও।’

সানা/আপ্র/০৯/১২/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকার দিকে অগ্রসর হতে থাকে যৌথবাহিনী

আপডেট সময় : ০৪:১২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর। সব দিকে দিয়ে যৌথবাহিনী ঢাকার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। যৌথবাহিনীর জন্য দিনটি ছিল শুধুই ঢাকা দখলের লড়াই। যৌথবাহিনী একে একে আশুগঞ্জ, দাউদকান্দি, চাঁদপুর ও ময়মনসিংহ দখলমুক্ত করে। দ্রুত মুক্ত হতে থাকে একের পর এক এলাকা।

এ দিন সকালে প্রথমবারের মতো জেনারেল নিয়াজি স্বীকার করেন, পরিস্থিতি নিদারুণ সংকটপূর্ণ। আকাশে যৌথবাহিনীর একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনীর পুনর্বিন্যাস সম্ভব নয় বলে রাওয়ালপিন্ডিতে একটি সংকেতবাণী পাঠান তিনি।

এদিকে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয়কে নস্যাৎ করে দিতে পাকিস্তানের সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা থেমে থাকেনি। এ দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন তার সপ্তম নৌ বহর বঙ্গোপসাগরের দিকে রওনা হওয়ার আদেশ দেন। উদ্দেশ্য, মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ভেঙে দেওয়া।

কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কারণ বীর সন্তানদের মনোবল ভেঙে দেওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। এ দিন যেসব এলাকা শত্রুমুক্ত হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো— দাউদকান্দি, গাইবান্ধা, কপিলমুনি, ত্রিশাল, নকলা, ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনা, পাইকগাছা, কুমারখালী, শ্রীপুর, অভয়নগর, পূর্বধলা ও চট্টগ্রামের নাজিরহাট।

দাউদকান্দি শত্রমুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে মূলত মেঘনার সম্পূর্ণ পূর্বাঞ্চল মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে। এর আগে কুমিল্লা মুক্ত হওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দাউদকান্দির মুক্তিযোদ্ধারা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিবাহিনীর হামলায় টিকতে না পেরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়।

৯ ডিসেম্বর স্মরণ করে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক হাসান মোরশেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘৩ ডিসেম্বরের পরবর্তী দিনগুলো ছিল মুক্তিযুদ্ধের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ভারত যৌথ কমান্ডের অধীনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন উইং বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। তাদের ওপর নির্দেশ ছিল মুক্তিবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ঢাকার দিকে এগিয়ে যাওয়া। ৯ মাসের গেরিলা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে মুক্তিবাহিনী অলআউট অ্যাকশনে নামে। ফলে একের পর এক জনপদ মুক্ত হতে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ব্যক্তিগত শোক ও গৌরব আছে আমার পরিবারের। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানা মুক্ত করার যুদ্ধে শহিদ হন আমার চাচা গেরিলা যোদ্ধা মতিউর রহমান। শেষের দিনগুলোর চূড়ান্ত যুদ্ধে এভাবে শহিদ হয়েছেন অসংখ্য সাহসী মুক্তিযোদ্ধা, ভারতীয় সৈনিকেরাও।’

সানা/আপ্র/০৯/১২/২০২৫