স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: রোবটিক সার্জারিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইসিভিডি)। এবার হাসপাতালের দুইতলার ক্যাথল্যাবে থাকা দুই রোগীর হৃদযন্ত্রের রক্তনালীতে আটতলা থেকে রিং পরান চিকিৎসকরা। ইন্টারনেট ব্যবহার করে রোবটিক সার্জারির মাধ্যমে এই রিং পরানো হয়। প্রথমবারের ধারাবাহিকতায় এবারও রোবটিক সার্জারিতে নেতৃত্ব দেন হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার। তিনি বলেন, ‘দূরনিয়ন্ত্রিত রোবটিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের দ্বিতীয় কেস (সার্জারি) সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। প্রথমদিন আমরা একই ফ্লোরে ক্যাথল্যাবের কাছাকাছি দূরত্বে কন্ট্রোল রুমে বসে কাজ করেছি। এবার করেছি আটতলা থেকে। অর্থাৎ আমি আটতলায় আর রোগী ছিলেন দুইতলায়। রিমোটের মাধ্যমে যেটা করা যায়, সেটা এবার সম্পন্ন করতে পেরেছি, যা আমাদের মূল লক্ষ্য। এ প্রক্রিয়ায় ঢাকায় বসে দেশের বিভিন্ন জেলার ক্যাথল্যাবে থাকা রোগীদের অস্ত্রোপচার করতে পারবো আমরা।’ ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার বলেন, ‘গত ২৮ জানুয়ারি হারুন উর রশিদ (৫৫) ও লিটন কর্মকার (৪৫) নামে দুইজনের দেহে এ রিং পরানো হয়েছে।’
তিনি জানান, দুই রোগীর হার্টের মূল রক্ত নালিতে ৯০ শতাংশ ব্লক ধরা পড়ে। দূরনিয়ন্ত্রিত রোবটিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিনামূল্যে তাদের ধমনীতে রিং স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এতে সাড়া দেন রোগী ও স্বজনরা। এনআইসিভিডির দ্বিতীয় তলার ক্যাথল্যাব অস্ত্রোপচারের জন্য প্রস্তুত করা হয়। এরপর হাসপাতালের ৮ম তলার কনফারেন্স রুমে স্থাপিত রোবটিক কন্ট্রোল ইউনিট থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিখুঁতভাবে দুই রোগীর হার্টে সফলভাবে রিং পরানো হয়। অপারেশন প্রক্রিয়া উদ্বোধন ও প্রত্যক্ষ করেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আজাদসহ অন্য চিকিৎসকরা। এনআইসিভিডি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে রোবটিং প্রযুক্তিতে রিং পরানোর মাধ্যমে এশিয়া মহাদেশে তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই প্রযুক্তিতে আত্মপ্রকাশ করলো। এর আগে ভারত ও চীনে এই প্রযুক্তিতে অস্ত্রোপচার হয়েছে।