নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী ঢাকাকে নিরাপদ শহর হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, এরপর চট্টগ্রাম ও রাজশাহী ও চট্টগ্রামকেও নিরাপদ শহর বানানো হবে। এতে ট্রাফিক ও ক্রাইম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।
গতকাল শনিবার শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের ৯ম মহা সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পথচারীদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালে বলেন, ডানে-বায়ে খেয়াল না করে রাস্তা পার হওয়ার মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সব দোষ চালক-মালিকদের না। অনেকেই মোবাইল ফোন কানে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় পার হয়ে যাচ্ছি। মোটেও খেয়াল করি না। কোনো গাড়ি আসছে কিনা। কিছু হলেই আমরা পরিবহন শ্রমিক ও পরিবহন মালিকদের দিকে আঙ্গুল তুলে দিই।
পুরো রাজধানীকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এতে ঢাকা শহরের ট্রাফিক ও ক্রাইম নিয়ন্ত্রণসহ প্রায় সব কাজে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে। আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি ঢাকাকে নিরাপদ শহর করার জন্য। আমরা যদি এটা পারি, এরপর চট্টগ্রাম ও রাজশাহীকে করব। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। এতে আমরা বিশেষ করে ট্রাফিক ও ক্রাইম নিয়ন্ত্রণসহ সবকিছুতেই সুবিধা পাব।
‘নিরাপদ সড়ক সবাই চায়, আমিও চাই। আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। ট্রাফিক আইন মানতে হবে। আমাদের সিটবেল্ট ব্যবহার ও সড়কে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমরা অনেকেই সেটি করি না। আমাদের আইন মেনে চলার প্রবণতা নিয়ে কাজ করতে হবে। আইন অমান্য করলে পুলিশ দিয়ে জেলখানায় ভরলাম, জরিমানা করলাম, তার চেয়ে বেশি দরকার সবার সচেতনতা’-বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী আরও বলেন, ঈদের সময় মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা ফেরির ব্যবস্থা করতে হয়েছে। শুধু মোটরসাইকেল পার হওয়ার জন্য। যারা চালান তারা নিয়ম নেমে চালান। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যারা মারা যান তাদের অধিকাংশ তরুণ। এজন্য আমরা নিয়ম করে দিয়েছি এখন পেট্রলপাম্পে হেলমেট ছাড়া তেল দেবে না। করোনার সময় যেমন নো মাস্ক নো সার্ভিস, তেমন নো হেলমেট নো হেলমেট ছাড়া যেন কেউ পেট্রল না পায় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। ‘বলেন, ‘আমরা যদি সচেতন হই, যদি আইন মেনে চলি, যদি বাস্তবতার নিরিখে কাজ করি, তবেই সফলতা আসবে এবং অবশ্যই আমরা তা পারব। আর সবাই সচেতন হলে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুহার কমবে।’
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের ভাইস-চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসান-উল হক কামালের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জীবনে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনা : বক্তব্যে নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি সড়ক দুর্ঘটনার বিষয় তুলে ধরেন মন্ত্রী। বলেন, ‘আপনারা মোটরসাইকেল বেপরোয়া চালিয়ে নিজের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। ১৯৭৩ বিসিএসে সিলেক্ট হয়ে রয়েছি, আর সেনাবাহিনীর ফার্স্ট কমিশনের জন্য সিলেক্ট হয়েছি। আমি একাডেমিতে যাব, তার আগের দিন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হলাম। এতে তিন মাস হাসপাতালে থাকতে হল। এতে বিসিএস ও সেনাবাহিনী ক্যারিয়ার সব শেষ। এই সড়ক দুর্ঘটনা যে কতখানি জীবনের মোড় পরিবর্তন করে দেয়। একটা জীবন কীভাবে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয় তার উদাহরণ আমি নিজেও একজন।
মহাসমাবেশে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন নিরাপদ সড়ক চাই’এর পক্ষ থেকে ১১১টি সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানান। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের মহাসমাবেশ সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে শিল্পকলা একাডেমি চত্বর ছিল মুখরিত।
ঢাকাকে নিরাপদ শহর বানাতে কাজ করছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ