বিনোদন ডেস্ক: না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। শিল্পী সমিতির সাভপতি শহীদ হাসান মিশা (মিশা সওদাগর) তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
টানা ১০ দিন অচেতন অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন অঞ্জনা রহমান। আশানুরূপ কোনো উন্নতি না হওয়ায় বুধবার (১ জানুয়ারি) রাতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়।
জানা গেছে, হাসপাতালে ভর্তির আগে টানা ১৫ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন অঞ্জনা। ওষুধ খেয়েও কাজ হচ্ছিল না। শেষে জানা যায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিনেত্রীর ছেলে নিশাত মণি জানান, জ্বর ও রক্তে ইনফেকশনজনিত কারণে গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে।
বনানীতে চিরনিদ্রা: প্রাণের কর্মস্থল বিএফডিসির পর চ্যানেল আইয়ে শেষশ্রদ্ধার পর বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রা গেলেন অঞ্জনা রহমান। শনিবার বিকেল ৩টার পর তার দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা সুব্রত, জয় চৌধুরী, কমল পাটেকর, সনি রহমান, পরিচালক আতিকুর রহমান চুন্নু, গাজী মাহবুব, মালেক আফসারি, প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু প্রমুখ।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বেশ সুপরিচিত মুখ ছিলেন চিত্রনায়িকা অঞ্জনা। নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করা একমাত্র দেশীয় চিত্রনায়িকাও তিনি। তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন অঞ্জনা। দুবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
দক্ষ নৃত্যশিল্পী থেকে অভিনয়ে অনন্য: ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে’, অথবা ‘আমি যেমন আছি তেমন রব, বউ হব না রে’ বাণীসমৃদ্ধ যে গানগুলো মানুষকে ফিরিয়ে নেয় ঢাকাই সিনেমার ‘সোনালি দিনে’, সেসব সিনেমার নায়িকা অঞ্জনা রহমান জীবনের শুরুতে আলো জ্বালিয়েছিলেন নাচের মঞ্চে।
তাল-ছন্দ-ঘুঙুরের জীবন থেকে সত্তর মাঝামাঝিতে সিনেমার আসার পর, এর পরের প্রায় পাঁচ দশক ধরে ‘সেতু’, ‘দস্যু বনহুর’, ‘অশিক্ষিত’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘আশার আলো’, ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’, ‘বিধাতা’, ‘বৌরানী’, ‘সোনার হরিণ’, ‘মানা’, ‘রামরহিমজন’, ‘সানাই’, ‘সোহাগ’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ও ‘অভিযান’-এর মত দর্শকনন্দিত চলচ্চিত্রে পাওয়া গেছে অঞ্জনাকে।
অভিনেত্রীর প্রয়াণের পর তার অভিনীত সিনেমাগুলো মধ্য থেকে জনপ্রিয় কিছু চলচ্চিত্র ও সিনেমার গানের সুলুকসন্ধান করেছে একটি সংবাদমাধ্যমের বিনোদন বিভাগ।
অভিনেতা সোহেল রানা প্রযোজনায় এবং শামসুদ্দিন টগরের পরিচালনায় অঞ্জনার মুক্তি পাওয়া প্রথম সিনেমা ‘দস্যু বনহুর’। ১৯৭৬ সালে রোজার ঈদের মুক্তি পাওয়া সিনেমাটিতে অঞ্জনার নায়কও ছিলেন সোহেল রানা।
‘দস্যু বনহুর’ সিনেমার আরেকটি গান ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’। রহস্য-অ্যাডভেঞ্চারে গল্পের এই সিনেমা নিয়ে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে অঞ্জনা বলেছিলেন, ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমায় তিনি সম্মানী পেয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা। বলা হয়, এই সিনেমার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী অঞ্জনাকে। নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গেই অঞ্জনা সিনেমা করেছেন সবচেয়ে বেশি। এই জুটির ৩০টি সিনেমার মধ্যে অন্যতম ‘অশিক্ষিত’। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘অশিক্ষিত’ পরিচালনা করেন আজিজুর রহমান। এই সিনেমার ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে’ গানটি তার ক্যারিয়ারে ব্যাপক অবদান রেখেছিল বলে জানিয়েছিলেন অঞ্জনা।
অঞ্জনার ‘আমি যেমন আছি তেমন রব, বউ হব না রে’ ঢাকাই সিনেমার দর্শকদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় একটি গান। এটিও ‘অশিক্ষিত’ সিনেমার গান। অঞ্জনা অভিনীত এই গানটি গেয়েছেন শাম্মী আখতার; গানের গীতিকার গাজী মাজগারুল আনোয়ার। ‘দস্যু বনহুর’ দিয়ে শুরু হলেও অঞ্জনার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ‘অশিক্ষিত’।
‘লালু সর্দার’ সিনেমায় অঞ্জনার নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। এই সিনেমার গানগুলোয় অভিনেত্রীকে পাওয়া গেছে নাচের ছন্দে। ‘হিরো’ সিনেমা অঞ্জনাকে পাওয়া যায় ভিন্ন এক লুকে। এই সিনেমার পরিচালক রায়হান মুজিব।
অঞ্জনার ‘অভিযান’ সিনেমা মুক্তি পায় ১৯৮৪ সালে। নায়ক ছিলেন রাজ্জাক, সিনেমাও পরিচালনাও করেন এই অভিনেতা। ‘রাজবাড়ি’ সিনেমায় অঞ্জনার সঙ্গে অভিনয় করেছেন সোহেল রানা। কাজী হায়াতের পরিচালনায় ১৯৮৪ সালে মুক্তি পায় এই সিনেমাটি।
আলমগীর কবিরের পরিচালনায় ‘পরিণীতা’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন অঞ্জনা। ১৯৮৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাতে অঞ্জনার নায়ক ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
১৯৮২ সালে নির্মাতা কামাল আহমেদ তার ‘রজনীগন্ধা’ সিনেমার জন্য বেছে নেন অঞ্জনাকে। তবে এই সিনেমায় ছিলেন শাবানাও। নায়ক ছিলেন আলমগীর।
নিজের সেরা সময়ে ঢাকাই সিনেমার প্রথম সারির প্রায় সব নায়কের বিপরীতেই অভিনয় করেছেন অঞ্জনা। এছাড়া ভারতের সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী; পাকিস্তানের অভিনেতা ফয়সাল, নাদীম, জাভেদ শেখ, ইসমাইল শাহ; নেপালের শিবশ্রেষ্ঠ ও ভুবন কেসির সঙ্গেও অভিনয় করেছেন এই নায়িকা। ১৯৯২ সালের পর থেকে সিনেমায় অনিয়মিত হয়ে যান অঞ্জনা। ২০০৮ সালে মুক্তি পায় তার সর্বশেষ সিনেমা ‘ভুল’।
তারকাদের শোক: অঞ্জনার মৃত্যুর ঘটনায় তারকাদের মাঝে চলছে শোকের মাতম । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনদের পাশাপাশি তারকারা শোকবার্তা জানিয়েছেন। মেগাস্টার শাকিব খান এক পোস্টে বলেন, ‘অঞ্জনা ম্যাডামের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’ চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘তোমার এই প্রাণবন্ত হাসি মুখটা আর দেখতে পাবো না। ওপারে ভালো থেকো অঞ্জনা আপা।’
এক আবেগঘন স্টাটাসে শাবনূর উল্লেখ করেছেন, ‘আমার অগ্রজ সহকর্মী, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ও নৃত্যশিল্পী শ্রদ্ধেয় অঞ্জনা রহমান আর আমাদের মাঝে নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিঊন)।’
‘আমাদের সকলের প্রিয় অঞ্জনা আপার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করা গুণী এই শিল্পীর অকাল মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।’
অভিনেত্রী জয়া আহসান অঞ্জনার পুরনো দিনের একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘লেজেন্ডারি অ্যাকট্রেস অঞ্জনা রহমান ম্যাডামের আত্মার শান্তি কামনা করি।’ চিত্রনায়িকা পূজা চেরীর কথায়, ‘ভেতরটা ধঁক করে উঠলো, ভালো থাকবেন আপনি যেখানেই থাকুন।’ সাইমন সাদিক লিখেছেন, ‘আমাদের সকলের প্রিয় মানুষ, প্রিয় অভিনেত্রী, অঞ্জনা আপু ইন্তেকাল করেছেন। আপনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন আপু। মিস করবো আপনাকে।’
জন্ম ও পারিবারিক জীবন: ১৯৬৫ সালের ২৭ জুন অঞ্জনার জন্ম চাঁদপুর জেলায়। ঢালিউড সিনেমার এক সময়ের প্রভাবশালী প্রযোজক-পরিচালক আজিজুর রহমান বুলিকে ভালোবেসে বিয়ে করেন অঞ্জনা। সেই সময় নাম পরিবর্তন করে হয়ে যান অঞ্জনা রহমান। ২০২৩ সালের অক্টোবরে একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনকে অঞ্জনা বলেছিলেন ‘আমার বিয়ের পর নামের সঙ্গে রহমান যুক্ত হয়েছে। সেটি এখনো আছে। আমি সাহা পরিবারের, হিন্দু ছিলাম।’ পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। প্রয়াত আজিজুর রহমানের আপন ছোট ভাই চিত্রনায়ক মাহমুদ কলি। সেই হিসেবে মাহমুদ কলির ভাবী হতে নায়িকা অঞ্জনা। যদিও অঞ্জনার সঙ্গে পরে আজিজুর রহমান বুলির বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার: ডাগর চোখের এ অভিনেত্রী নিজ যোগ্যতায় ঢালিউডে কাজ করেছেন। তার সময়ে বহাল তবিয়তে শাবানা, ববিতা, কবরী, অলিভিয়া-দের মতো প্রভাব বিস্তারকারী তারকারা ছিলেন। তাদের মধ্য থেকেও তিনি নিজের যোগ্যতায় দর্শক মন জয় করেন। ন্যাচারাল অভিনয় তো করতেনই পাশাপাশি নাচে ছিলেন অসাধারণ পারদর্শী। নৃত্যশিল্পী হয়ে মঞ্চে কাজ শুরু করেন। নাচে তিনবার পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারও ।
অঞ্জনা রহমান প্রায় ৩০০ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি মধ্যে রয়েছে- ‘দস্যু বনহুর’, সেতু, অশিক্ষিত, প্রিয় বান্ধবী, গাঙচিল, চোখের মণি, জিণ্ঞ্জির, ছোট মা, রূপালি সৈকতে, সখি তুমি কার, যাদুনগর, রজনীগন্ধা, আখেরি নিশান, অন্ধবধূ, অংশীদার, মাসুম, অভিযান, ফুলেশ্বরী, গুণাই বিবি, গাঙচিল, পরিণীতা, আপোষ, আনারকলি, রাজবাড়ি, ভাইজান, রাম রহিম জন, বিধাতা, দেশ বিদেশ, নেপালী মেয়ে, হুংকার, বিষকন্যার প্রেম, অগ্নিপুরুষ, সিন্দাবাদ, হুঁশিয়ার, বৌরাণী, নান্টু ঘটক, বিচারপতি, প্রতিরোধ, মোহনা, হিমালয়ের বুকে, আশার প্রদীপ ইত্যাদি।
অঞ্জনার মধ্যে সৌন্দর্য, অভিনয়গুণ দুটোই ছিল। তার সময়ের প্রথম সারির নায়ক রাজ্জাক, আলমগীর, ইলিয়াস কাঞ্চন, জসিমদের সাথেই কাজ করেছেন। লাক্সের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও দেখা গেছে তাকে। এশিয়া মহাদেশীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে হরর ঘরানার ছবি মাত্র কয়েকটি হয়েছে। এর মধ্যে সাদাকালো সময়ে কাজী হায়াৎ নির্মিত অসাধারণ হরর ছবি ‘রাজবাড়ি’-র নায়িকা ছিলেন অঞ্জনা। ডাবল রোলের এ ছবিতে তার অভিনয় অসাধারণ ছিল। এ ছবিতে তার হরিণী চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগে। চরিত্রটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ছবিতে তার অসাধারণ একটি গান আছে। ছবির ফিনিশিং-এ অঞ্জনার চরিত্রটি বিশেষত্ব পেয়েছে। নায়করাজ রাজ্জাকের সাথে প্রায় ২৭ টি ছবির মধ্যে ‘অভিযান’ ছবিটি ছিল সবচেয়ে ব্যতিক্রমী কাজ তার। নায়ক জসিম প্রযোজিত ‘ভাইজান’ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার চরিত্র। ছবি ব্যবসাসফল হলে পার্টি দেয়ার কথা ছিল জসিমের। ছবি হিট হয়ে যায়। প্রায় ২ কোটির মতো লাভ হয়। সেখান থেকে ৫ লাখ টাকার চেক পাঠিয়েছিলেন অঞ্জনাকে, পার্টিও দিয়েছিলেন। ভারতের সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে ‘অর্জুন’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি প্রশংসিত হন। যৌথ প্রযোজনার একাধিক ছবিতে দেখা গেছে তাকে এমনকি বিগ বাজেটের ছবি যেগুলো বিদেশে চিত্রায়িত এ ধরনের ছবিতে তাকে বেশ দেখা গেছে।
অঞ্জনা রহমান প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ‘গাঙচিল’ ছবিতে ১৯৮১ সালে। দ্বিতীয়বার ১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ ছবির ললিতা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি ‘বাচসাস’ পুরস্কার পান তিনবার।
অঞ্জনার সিনেমার জনপ্রিয় কিছু গান: ঢাকা শহর আইসা আমার আশা পুরাইছে-অশিক্ষিত। চলে আমার সাইকেল-নান্টু ঘটক। ও মিষ্টি ভাবী রে-রজনীগন্ধা। মাই লাভ আমেরিকা-দেশ বিদেশ। বাবারে বাবা কই দিলা বিয়া-অভিযান। জীবনের গল্প এত ছোট নয় -রাম রহিম জন।