নিজস্ব প্রতিবেদক : ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের চার সদস্যের বিরুদ্ধে তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কমিশনের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে গঠিত টিম গতকাল সোমবার থেকে এই অনুসন্ধান শুরু করেছে। টিমের অন্য সদস্যরা সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকী।
অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গঠিত দুদক টিম রেকর্ডপত্র যাচাইবাছাইয়ের পাশাপাশি আরো প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্রের জন্য গ্রামীণ টেলিকমের প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, রেকর্ডপত্র যাচাই বাছাই সাপেক্ষে গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রয়োজন সাপেক্ষে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পরস্পর যোগশাজশে দুই হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মাসাৎ করেন।
প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগের মধ্যে আছে— পর্ষদ সদস্যদের শেয়ার থাকা গ্রামীণফোনের ‘গ্রামীণফোন ওয়ার্কার্স প্রফিট ফান্ড অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার ফান্ড’-এর অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ করেন তারা। এর আগে ২০১৫ সালে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক ইউনিয়নের পাঁচ কর্মচারী প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে এক হাজার ৩০০ শ্রমিক ও কর্মচারীর ৭০০ কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন। পরে এই মামলা শুনানি শেষে মহানগর হাকিম ইউসুফ হোসেন এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
দুদকে আসা অভিযোগ থেকে একটি সংবাদসংস্থা জানতে পেরেছে, সরকারের নির্দেশনা মেনে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটির গ্রামীণফোন ওয়ার্কার্স প্রফিট ফান্ড অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার ফান্ডে লাভের ৫ শতাংশ শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন করার ঘোষণা করা হয়। ২০১৩ সালে গ্রামীণফোনের পরিচালক সভায় তা পাস হলেও শ্রমিকদের লভ্যাংশের ৬৯১ কোটি ৩৮ লাখ ৬৬ হাজার ১৮৩ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। কিন্তু শ্রমিক-কর্মচারীরা আজও এর ক্ষতিপূরণ বুঝে পাননি।
জানা যায়, সে সময় শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যদের করা মামলায় গ্রামীণফোন লিমেটেড, গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিইও, গ্রামীণফোন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান, ট্রাস্টি বোর্ডের চার সদস্যকে আসামি করা হয় বলে জানান গ্রামীণফোন লিমিটেডের পরিবহন শ্রমিক মেহেদী হাসান।
ড. ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ