ঢাকা ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

ড. ইউনূসকে ৬৬৬ কোটি টাকা কর দেওয়ার রায় প্রত্যাহার

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণের কাছ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দাবি করা ৬৬৬ কোটি টাকা দিতে হবে— হাইকোর্টের দেওয়া সেই রায় পূর্ণাঙ্গভাবে লিখতে গিয়ে ‘বিব্রতবোধ’ করেছেন বেঞ্চের এক বিচারপতি। তাই স্বঃপ্রণোদিতভাবে ‘একজন বিচারপতি-কেন্দ্রিক’ যুক্তিতে আগের দেওয়া রায় প্রত্যাহার (রিকল) করে নিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতির কাছে এ মামলার নথি পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়টি প্রত্যাহার করে নেন। জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৬৬৬ কোটি টাকা পরিশোধের যে রায় দিয়েছেন, সেটি লেখার সময় কনিষ্ঠ বিচারপতি দেখেন একসময় তিনি নিজেই রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে মামলাটি শুনানি করেছিলেন। কাজেই এ রায় তিনি দিতে পারেন না। নিয়মানুযায়ী এটি শুনানির জন্য এখন প্রধান বিচারপতি নতুন বেঞ্চ ঠিক করে দেবেন। আদেশের পর ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রায় প্রদানকারী বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি রায় রিকল করার (গ্রাউন্ডে) যুক্তিতে বলেছেন যে, বেঞ্চের অপর বিচারপতি এই কোর্টেই রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। সরকার পক্ষে এই মামলাটি তিনি একসময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সুতরাং তিনি (বিচারপতি) যেহেতু এই মামলা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তাই তিনিই আবার বিচারক হিসেবে রায়টি দিলে ডিফেক্টিভ হবে। তাই রায়টি প্রত্যাহার (রিকল) করে তিনি প্রধান বিচারপতির কাছে মামলাটি পাঠান, অন্য কোর্ট নির্ধারণের জন্য।’ তাহলে গত ছয় মাস ধরে এই মামলাটি শুনানি করার সময় বিষয়টি সামনে আনা হলো না কেন, জানতে চাইলে আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন আরও বলেন, ‘এটা আমাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। জনগণের কাছে একটা ভুল মেসেজ যাবে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কারণে হয়তো এটা করেছেন।’ এর আগে গত ৪ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণের এনবিআরের ৬৬৬ কোটি টাকা কর দাবির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এতে করে ড. ইউনূসকে ৬৬৬ কোটি টাকা সরকারকে পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা। এ বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে ৪ আগস্ট বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। প্রসঙ্গত, ড. মুহাম্মদ ইউনূস চেয়ারম্যান থাকা গ্রামীণ কল্যাণের কাছে ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ করবর্ষের প্রদেয় কর দাবি ঘিরে গ্রামীণ কল্যাণ ২০১৭ সালে পৃথক রিট করা হয়। সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। সে রুল শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে এনবিআর পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। গত ১১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টে মূল বিষয়বস্তুর ওপর শুনানির নির্দেশ দেন। এরপর শুনানি শেষে রুল খারিজ করে গত ৪ আগস্ট রায় দেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদালতে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, সরদার জিন্নাত আলী ও আবদুল্লাহ-আল-মামুন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ড. ইউনূসকে ৬৬৬ কোটি টাকা কর দেওয়ার রায় প্রত্যাহার

আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণের কাছ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দাবি করা ৬৬৬ কোটি টাকা দিতে হবে— হাইকোর্টের দেওয়া সেই রায় পূর্ণাঙ্গভাবে লিখতে গিয়ে ‘বিব্রতবোধ’ করেছেন বেঞ্চের এক বিচারপতি। তাই স্বঃপ্রণোদিতভাবে ‘একজন বিচারপতি-কেন্দ্রিক’ যুক্তিতে আগের দেওয়া রায় প্রত্যাহার (রিকল) করে নিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রধান বিচারপতির কাছে এ মামলার নথি পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়টি প্রত্যাহার করে নেন। জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৬৬৬ কোটি টাকা পরিশোধের যে রায় দিয়েছেন, সেটি লেখার সময় কনিষ্ঠ বিচারপতি দেখেন একসময় তিনি নিজেই রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে মামলাটি শুনানি করেছিলেন। কাজেই এ রায় তিনি দিতে পারেন না। নিয়মানুযায়ী এটি শুনানির জন্য এখন প্রধান বিচারপতি নতুন বেঞ্চ ঠিক করে দেবেন। আদেশের পর ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রায় প্রদানকারী বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি রায় রিকল করার (গ্রাউন্ডে) যুক্তিতে বলেছেন যে, বেঞ্চের অপর বিচারপতি এই কোর্টেই রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। সরকার পক্ষে এই মামলাটি তিনি একসময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। সুতরাং তিনি (বিচারপতি) যেহেতু এই মামলা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, তাই তিনিই আবার বিচারক হিসেবে রায়টি দিলে ডিফেক্টিভ হবে। তাই রায়টি প্রত্যাহার (রিকল) করে তিনি প্রধান বিচারপতির কাছে মামলাটি পাঠান, অন্য কোর্ট নির্ধারণের জন্য।’ তাহলে গত ছয় মাস ধরে এই মামলাটি শুনানি করার সময় বিষয়টি সামনে আনা হলো না কেন, জানতে চাইলে আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন আরও বলেন, ‘এটা আমাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। জনগণের কাছে একটা ভুল মেসেজ যাবে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কারণে হয়তো এটা করেছেন।’ এর আগে গত ৪ আগস্ট নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কল্যাণের এনবিআরের ৬৬৬ কোটি টাকা কর দাবির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এতে করে ড. ইউনূসকে ৬৬৬ কোটি টাকা সরকারকে পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা। এ বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে ৪ আগস্ট বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। প্রসঙ্গত, ড. মুহাম্মদ ইউনূস চেয়ারম্যান থাকা গ্রামীণ কল্যাণের কাছে ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ করবর্ষের প্রদেয় কর দাবি ঘিরে গ্রামীণ কল্যাণ ২০১৭ সালে পৃথক রিট করা হয়। সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। সে রুল শুনানি শেষে রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে এনবিআর পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। গত ১১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টে মূল বিষয়বস্তুর ওপর শুনানির নির্দেশ দেন। এরপর শুনানি শেষে রুল খারিজ করে গত ৪ আগস্ট রায় দেন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদালতে গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, সরদার জিন্নাত আলী ও আবদুল্লাহ-আল-মামুন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।