ঢাকা ০৫:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

ড্রামে ভরা ২৬ খণ্ড লাশ, বন্ধুকে প্রধান আসামি করে মামলা

  • আপডেট সময় : ০৪:৩১:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: রংপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক (৪৩)। তিন দিন আগে প্রবাসী বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকা আসেন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকার জাতীয় ঈদগাহের সামনে দুটি নীল রঙের ড্রামভর্তি আশরাফুল হকের ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত আশরাফুলের বন্ধু মো. জরেজকে (৪২) প্রধান আসামি করে মামলা করেছে নিহতের পরিবার।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিহতের ছোট বোন মোছা. আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, নিহত আশরাফুলের বন্ধু জরেজকে প্রধান আসামি করে এজাহার দায়ের করেছেন আনজিরা বেগম। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত চলছে এবং আসামি গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

এজাহারে আনজিরা বেগম লিখেছেন, তার বড় ভাই আশরাফুল হক দিনাজপুর হিলি বন্দর থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করে করতেন।

গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে আসামি জরেজকে নিয়ে ঢাকায় আসে। এরপর থেকে আমার ভাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পায়। আমাদের সন্দেহ আসামি জরেজ তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগীতায় গত ১১ নভেম্বর রাত থেকে ১৩ নভেম্বর রাতের মধ্যে যে কোনো সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর মৃতদেহ থেকে মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মোট ২৬টি খণ্ডে খণ্ডিত করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে দুটি নীল রংয়ের ড্রামের ভেতর ভরে ড্রামের মুখ কালো রংয়ের ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ফেলে রেখে অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে নিহতের বোনের জামাই জাকির হোসেন বলেন, ১১ নভেম্বর রাতে একসঙ্গে রংপুর থেকে ঢাকায় আসে আশরাফুল ও জরেজ। এরপর থেকে জরেজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আশরাফুল ও জরেজ বন্ধু এবং একসঙ্গে ব্যবসা করতো।

জরেজের কাছে নিহত আশরাফুল টাকা পাইতো কিনা জনাতে চাইলে জাকির বলেন, টাকা-পয়সার বিষয়টি এখনও জানি না। আমরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ এসে ড্রাম দুটি খুলে অজ্ঞাতপরিচয় এক পুরুষের খণ্ডিত মরদেহ দেখতে পায়। তখন মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে মরদেহ বের করা হয়। ড্রামের মধ্যে চাল ছিল এবং কালো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ছিল মরদেহের খণ্ডিত অংশ।

ঘটনাস্থলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে একটি ভ্যানে দুজন ব্যক্তি এসে ড্রাম দুটি রাস্তার পাশে রেখে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা এতটুকু বলতে পারছেন। সন্ধ্যায় যখন দুর্গন্ধ ছড়ায় তখন পুলিশকে খবর দিলে ড্রাম খুলে চালের মধ্য থেকে কালো পলিথিনে মোড়ানো খণ্ডিত মরদেহ বের করা হয়। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পরবর্তীতে জড়িতদের শনাক্তে চেষ্টা চলছে।

ওআ/আপ্র/১৪/১১/২০২৫

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

ড্রামে ভরা ২৬ খণ্ড লাশ, বন্ধুকে প্রধান আসামি করে মামলা

আপডেট সময় : ০৪:৩১:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রংপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক (৪৩)। তিন দিন আগে প্রবাসী বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকা আসেন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকার জাতীয় ঈদগাহের সামনে দুটি নীল রঙের ড্রামভর্তি আশরাফুল হকের ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত আশরাফুলের বন্ধু মো. জরেজকে (৪২) প্রধান আসামি করে মামলা করেছে নিহতের পরিবার।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিহতের ছোট বোন মোছা. আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, নিহত আশরাফুলের বন্ধু জরেজকে প্রধান আসামি করে এজাহার দায়ের করেছেন আনজিরা বেগম। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত চলছে এবং আসামি গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

এজাহারে আনজিরা বেগম লিখেছেন, তার বড় ভাই আশরাফুল হক দিনাজপুর হিলি বন্দর থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করে করতেন।

গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে আসামি জরেজকে নিয়ে ঢাকায় আসে। এরপর থেকে আমার ভাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পায়। আমাদের সন্দেহ আসামি জরেজ তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগীতায় গত ১১ নভেম্বর রাত থেকে ১৩ নভেম্বর রাতের মধ্যে যে কোনো সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর মৃতদেহ থেকে মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মোট ২৬টি খণ্ডে খণ্ডিত করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে দুটি নীল রংয়ের ড্রামের ভেতর ভরে ড্রামের মুখ কালো রংয়ের ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ফেলে রেখে অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে নিহতের বোনের জামাই জাকির হোসেন বলেন, ১১ নভেম্বর রাতে একসঙ্গে রংপুর থেকে ঢাকায় আসে আশরাফুল ও জরেজ। এরপর থেকে জরেজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আশরাফুল ও জরেজ বন্ধু এবং একসঙ্গে ব্যবসা করতো।

জরেজের কাছে নিহত আশরাফুল টাকা পাইতো কিনা জনাতে চাইলে জাকির বলেন, টাকা-পয়সার বিষয়টি এখনও জানি না। আমরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ এসে ড্রাম দুটি খুলে অজ্ঞাতপরিচয় এক পুরুষের খণ্ডিত মরদেহ দেখতে পায়। তখন মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে মরদেহ বের করা হয়। ড্রামের মধ্যে চাল ছিল এবং কালো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ছিল মরদেহের খণ্ডিত অংশ।

ঘটনাস্থলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে একটি ভ্যানে দুজন ব্যক্তি এসে ড্রাম দুটি রাস্তার পাশে রেখে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা এতটুকু বলতে পারছেন। সন্ধ্যায় যখন দুর্গন্ধ ছড়ায় তখন পুলিশকে খবর দিলে ড্রাম খুলে চালের মধ্য থেকে কালো পলিথিনে মোড়ানো খণ্ডিত মরদেহ বের করা হয়। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পরবর্তীতে জড়িতদের শনাক্তে চেষ্টা চলছে।

ওআ/আপ্র/১৪/১১/২০২৫