বরগুনা সংবাদদাতা: ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে ঘোষিত বরগুনায় এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি ডেঙ্গু পরিস্থিতি। প্রতিদিনই জেলায় নতুন করে ৫০-৬০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৬৩ জনে। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১২৪ জন ডেঙ্গু রোগী।
বরগুনা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু বরগুনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নতুন করে ৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ হাসপাতালেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৩ জন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে আরও ১৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে আমতলীতে ৪ জন, বামনা ও তালতলীতে ২ জন করে মোট ৪ জন এবং পাথরঘাটা উপজেলায় ভর্তি হয়েছেন ৫ জন। জেনারেল হাসপাতাল বাদে বাকি পাঁচটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫১ জন রোগী।
সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, এ বছর বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন মোট ৮ হাজার ৬৩ জন। তাদের মধ্যে ৭ হাজার ৯৩৯ জন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬ হাজার ৪১৪ জন, আর বাকি পাঁচটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৬৪৯ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যার দিক দিয়ে সদর উপজেলার পরেই রয়েছে পাথরঘাটা উপজেলা। এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৭৪৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এছাড়াও বরগুনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ১১ জন এবং আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জনসহ সরকারি হিসেবে জেলায় মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরগুনার আরও অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বরগুনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রেজওয়ানুর আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আক্রান্তদের বেশিরভাগই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে বরগুনায় ডেঙ্গুর ভয়াবহতা অত্যন্ত মারাত্মক। এখনো ডেঙ্গুর কোনো ভ্যাকসিন নেই, শারীরিক জটিলতার কারণে রোগী মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে যায়। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে আইসিইউ নেই, চিকিৎসকও পর্যাপ্ত নয়। এজন্য জটিল রোগীদের বরিশাল বা ঢাকায় পাঠাতে হয়। মাঝে মাঝে প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন ও পরীক্ষার উপকরণও শেষ হয়ে যায়। জেলায় একমাত্র এই ২৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতাল ছাড়া আর কোনো সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই।
এসি/আপ্র/১৩/১০/২০২৫