ঢাকা ০৭:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডেঙ্গুতে এত মৃত্যু আগে দেখেনি বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় : ০৩:০০:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে ডেঙ্গু সবচেয়ে ভয়াবহ হয়ে দেখা গিয়েছিল ২০১৯ সালে, সেবার রোগীর সংখ্যা লাখ ছাড়ানোর সঙ্গে মারা গিয়েছিল ১৬৪ জন। ২০২২ সালে এসে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এখনও অর্ধ লক্ষ না ছাড়ালেও মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ২০০। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল রোববারের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে এইডিস মশাবাহিত এই রোগে তিনজনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। তাদের নিয়ে এই বছরে এই পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২০২ জন। এই শতকের শুরুতে দেশে ডেঙ্গু রোগী ধরা পড়তে শুরু করলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হিসাব শুরু করে অনেক পরে। তাতে ২০১৮ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ২৬ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়। ২০০০ সালে মারা যায় ৯৩ জন।
মাঝে ২০১৯ সালে ২৬৩টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ১৬৪টি ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে সম্প্রতি অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এক সংবাদ সম্মেলনে ২০১৯ সালে মৃতের সংখ্যা ১৭৯ বলে উল্লেখ করা হয়। তবে এর যে কোনো সংখ্যা ধরলেও ২০২২ সালে মৃত্যু আগের সব হিসাব ছাড়িয়ে গেল। অধিদপ্তরের হিসাবে শুধু হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে ধরা হয় বলে হাসপাতালের বাইরে কারও মৃত্যু হলে তা এই হিসাবে আসছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোববারের বুলেটিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮৫৯ জনের হাসপাতালে যাওয়ার খবর দেওয়া হয়েছে। তাতে এ বছর ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৫২৯ জনে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর এই সংখ্যাও ২০১৯ সালের পর সর্বাধিক। ২০১৯ সালে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪। গত একদিনে শনাক্ত রোগীদের ৪২৬ জন ঢাকায় এবং ৪৩৩ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বর্তমানে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ১৮৯ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৮৮৫ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালে আছে ১ হাজার ৩০৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি ২০০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এছাড়া ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৫৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৭ জন, খুলনা বিভাগে ৪৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৫ জন, বরিশাল বিভাগে ৬২ জন, এবং সিলেট বিভাগে ৭ জন। সারাদেশে এ পর্যন্ত যে ২০২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে, তাদের মধ্যে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। ঢাকা বিভাগের নরসিংদী জেলায় একজন, মানিকগঞ্জ জেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৫১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন, খুলনা বিভাগে ১০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬ জন এবং বরিশাল বিভাগে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। বর্ষাকাল এলেই ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এইডিস মশার উৎপাত বাড়ে। এ সময় এই মশার দংশনে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ে। তবে এ বছর এ রোগের প্রকোপ বেড়েছে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে।
এ বছর অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি ২১ হাজার ৯৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে ১২৬ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ জন, মার্চে ২০ জন, এপ্রিল মাসে ২৩ জন, মে মাসে ১৬৩ জন, জুন মাসে ৭৩৭ জন, জুলাই মাসে ১ হাজার ৫৭১ জন, অগাস্ট মাসে ৩ হাজার ৫২১ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৯ হাজার ৯১১ জন রোগী গেছে হাসপাতালে। সর্বাধিক ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে অক্টোবর মাসেই। এ ছাড়া জুন মাসে ১ জন, জুলাই মাসে ৯ জন, অগাস্ট মাসে ১১ জন এবং সেপ্টেম্বরে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এইডিস মশাবাহিত এই রোগে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সমালোচনা হলেও চিকিৎসা নিয়ে হয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী : দেশে ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা হলেও চিকিৎসা নিয়ে কোনও সমালোচনা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু’তে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ডেঙ্গুর নতুন গাইডলাইন তৈরি বিষয়ে এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা থাকলেও চিকিৎসা নিয়ে কেউ সমালোচনা করেনি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেয়, আর নিয়ন্ত্রণের কাজটি করে অন্যান্য মন্ত্রণালয়। আমার সময়ে প্রথমে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু পেয়েছিলাম। সেবার সবাই মিলেমিশে সুন্দরভাবে ডেঙ্গু মোকাবিলা করেছি। তখনও অনেক সমালোচনা হয়েছে। তবে তখনও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও চিকিৎসা নিয়ে কোনও সমালোচনা ছিল না। মন্ত্রী বলেন, এরপর করোনাভাইরাস আসলো। তখন একটি ট্রিটমেন্ট প্রটোকল করে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। সারাদেশেই এটিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ট্রিটমেন্ট প্রটোকল ভালো ভূমিকা রেখেছে। আমাদের সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ছিল না, অক্সিজেন প্ল্যান্ট ছিল না, একটি মাত্র ল্যাব ছিল। বিনামূল্যে আমরা রেমডিসিভির দিয়েছিলাম। অর্থাৎ বিশ্বে যখন যে ব্যবস্থা প্রয়োগ হয়েছে, আমরা সেটিও করেছি এবং সর্বোপরি সফল হয়েছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন আবার ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে। যারা কাজকর্ম করেন, তারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। নারীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অনেকে তিন দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছেন। হাসপাতালে দেরিতে যাওয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা একটু বেশি। তবে সময়ের প্রয়োজনে আগের গাইডলাইনটি নতুন করে সাজানো হয়েছে। নতুন গাইডলাইনে আশা করি ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে। সে বিষয়ে সব ডাক্তার-নার্স ও টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন। মন্ত্রী আরও বলেন, চিকিৎসার মান বৃদ্ধি করতে সারাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমরা চাই ডাক্তারদের উপস্থিতি এবং যন্ত্রপাতিগুলো যেন সচল থাকে। অনেক সময় আলট্রা-ইকো মেশিনগুলো নষ্ট থাকে, যে কারণে রোগীরা চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে চলে যায়। যে সব সরকারি হাসপাতালে মেশিন নেই, আমাদের জানালে আমরা দিয়ে দেবো। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালগুলো সবসময় পরিষ্কার রাখবেন ও রিপোর্টিংটা সবসময় চালু রাখবেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডেঙ্গুতে এত মৃত্যু আগে দেখেনি বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৩:০০:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে ডেঙ্গু সবচেয়ে ভয়াবহ হয়ে দেখা গিয়েছিল ২০১৯ সালে, সেবার রোগীর সংখ্যা লাখ ছাড়ানোর সঙ্গে মারা গিয়েছিল ১৬৪ জন। ২০২২ সালে এসে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা এখনও অর্ধ লক্ষ না ছাড়ালেও মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ২০০। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল রোববারের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে এইডিস মশাবাহিত এই রোগে তিনজনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। তাদের নিয়ে এই বছরে এই পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২০২ জন। এই শতকের শুরুতে দেশে ডেঙ্গু রোগী ধরা পড়তে শুরু করলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হিসাব শুরু করে অনেক পরে। তাতে ২০১৮ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ২৬ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়। ২০০০ সালে মারা যায় ৯৩ জন।
মাঝে ২০১৯ সালে ২৬৩টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ১৬৪টি ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে সম্প্রতি অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এক সংবাদ সম্মেলনে ২০১৯ সালে মৃতের সংখ্যা ১৭৯ বলে উল্লেখ করা হয়। তবে এর যে কোনো সংখ্যা ধরলেও ২০২২ সালে মৃত্যু আগের সব হিসাব ছাড়িয়ে গেল। অধিদপ্তরের হিসাবে শুধু হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে ধরা হয় বলে হাসপাতালের বাইরে কারও মৃত্যু হলে তা এই হিসাবে আসছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোববারের বুলেটিনে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮৫৯ জনের হাসপাতালে যাওয়ার খবর দেওয়া হয়েছে। তাতে এ বছর ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৫২৯ জনে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর এই সংখ্যাও ২০১৯ সালের পর সর্বাধিক। ২০১৯ সালে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪। গত একদিনে শনাক্ত রোগীদের ৪২৬ জন ঢাকায় এবং ৪৩৩ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বর্তমানে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ১৮৯ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ৮৮৫ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালে আছে ১ হাজার ৩০৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি ২০০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এছাড়া ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৫৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৭ জন, খুলনা বিভাগে ৪৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৫ জন, বরিশাল বিভাগে ৬২ জন, এবং সিলেট বিভাগে ৭ জন। সারাদেশে এ পর্যন্ত যে ২০২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে, তাদের মধ্যে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। ঢাকা বিভাগের নরসিংদী জেলায় একজন, মানিকগঞ্জ জেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৫১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ জন, খুলনা বিভাগে ১০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬ জন এবং বরিশাল বিভাগে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। বর্ষাকাল এলেই ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এইডিস মশার উৎপাত বাড়ে। এ সময় এই মশার দংশনে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ে। তবে এ বছর এ রোগের প্রকোপ বেড়েছে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে।
এ বছর অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি ২১ হাজার ৯৩২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসে ১২৬ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ জন, মার্চে ২০ জন, এপ্রিল মাসে ২৩ জন, মে মাসে ১৬৩ জন, জুন মাসে ৭৩৭ জন, জুলাই মাসে ১ হাজার ৫৭১ জন, অগাস্ট মাসে ৩ হাজার ৫২১ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৯ হাজার ৯১১ জন রোগী গেছে হাসপাতালে। সর্বাধিক ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে অক্টোবর মাসেই। এ ছাড়া জুন মাসে ১ জন, জুলাই মাসে ৯ জন, অগাস্ট মাসে ১১ জন এবং সেপ্টেম্বরে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এইডিস মশাবাহিত এই রোগে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সমালোচনা হলেও চিকিৎসা নিয়ে হয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী : দেশে ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা হলেও চিকিৎসা নিয়ে কোনও সমালোচনা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লু’তে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ডেঙ্গুর নতুন গাইডলাইন তৈরি বিষয়ে এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা থাকলেও চিকিৎসা নিয়ে কেউ সমালোচনা করেনি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেয়, আর নিয়ন্ত্রণের কাজটি করে অন্যান্য মন্ত্রণালয়। আমার সময়ে প্রথমে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু পেয়েছিলাম। সেবার সবাই মিলেমিশে সুন্দরভাবে ডেঙ্গু মোকাবিলা করেছি। তখনও অনেক সমালোচনা হয়েছে। তবে তখনও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও চিকিৎসা নিয়ে কোনও সমালোচনা ছিল না। মন্ত্রী বলেন, এরপর করোনাভাইরাস আসলো। তখন একটি ট্রিটমেন্ট প্রটোকল করে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। সারাদেশেই এটিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ট্রিটমেন্ট প্রটোকল ভালো ভূমিকা রেখেছে। আমাদের সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ছিল না, অক্সিজেন প্ল্যান্ট ছিল না, একটি মাত্র ল্যাব ছিল। বিনামূল্যে আমরা রেমডিসিভির দিয়েছিলাম। অর্থাৎ বিশ্বে যখন যে ব্যবস্থা প্রয়োগ হয়েছে, আমরা সেটিও করেছি এবং সর্বোপরি সফল হয়েছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন আবার ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে। যারা কাজকর্ম করেন, তারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। নারীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অনেকে তিন দিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছেন। হাসপাতালে দেরিতে যাওয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা একটু বেশি। তবে সময়ের প্রয়োজনে আগের গাইডলাইনটি নতুন করে সাজানো হয়েছে। নতুন গাইডলাইনে আশা করি ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে। সে বিষয়ে সব ডাক্তার-নার্স ও টেকনিশিয়ানরা কাজ করছেন। মন্ত্রী আরও বলেন, চিকিৎসার মান বৃদ্ধি করতে সারাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমরা চাই ডাক্তারদের উপস্থিতি এবং যন্ত্রপাতিগুলো যেন সচল থাকে। অনেক সময় আলট্রা-ইকো মেশিনগুলো নষ্ট থাকে, যে কারণে রোগীরা চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে চলে যায়। যে সব সরকারি হাসপাতালে মেশিন নেই, আমাদের জানালে আমরা দিয়ে দেবো। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালগুলো সবসময় পরিষ্কার রাখবেন ও রিপোর্টিংটা সবসময় চালু রাখবেন।